ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জের

দেশে ফিরতে শুরু করেছে আফগান শরণার্থীরা

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১০ আগস্ট ২০১৮

দেশে ফিরতে শুরু করেছে আফগান শরণার্থীরা

ইরান থেকে আফগান অভিবাসী শ্রমিকরা কোনমতে ভাঙ্গাচোরা ট্যাক্সিতে করে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে প্রবেশ করে ফোর সিজনস অব ফ্রিডম হোটেলে অবস্থান নিতে শুরু করেছে। ইরানে চরম মুদ্রাস্ফীতিতে উপার্জন বন্ধ হয়ে গেলে তারা ইরান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এএফপি। ৪ লাখ ৪২ হাজার ৩৪৪ জন আফগান শ্রমিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে এ বছর ইরান থেকে স্বেচ্ছায় দেশে চলে এসেছে অথবা ইরান তাদের বিতাড়িত করেছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানী মুদ্রা রিয়ালের চাহিদা বৃদ্ধিকে উসকে দেয়। নিষেধাজ্ঞা আরোপ এ সপ্তাহে আবারও শুরু হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেতে ২০১৫ সালের যুগসৃষ্টিকারী পরমাণু চুক্তি প্রত্যাখ্যানের পর ডলারের বিপরীতে ইরানী মুদ্রার মান প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। নিষেধাজ্ঞা আরোপে কেবল ইরানের সাংসারিক সঞ্চয়ই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েনি, বিপর্যস্ত হয়েছে অবৈধ আফগান অভিবাসীদের রেমিটেন্সও। ভ্রƒক্ষেপহীন ও বেকার হয়ে পড়া আফগানরা দেশে তাদের পরিবারগুলোকে চাঙ্গা করবার জন্য কর্মসংস্থানের সন্ধানে ইরান সংলগ্ন সচ্ছিদ্র সীমান্ত অতিক্রম করেছে বেশ কয়েক বছর ধরে। এ পরিবারগুলোর অনেকেই কৃষক। এরা এখন আফগানিস্তানের স্মরণকালের সবচেয়ে মারাত্মক খরার দুর্ভোগে ভুগছে। এ দুর্ভোগে যোগ হয়েছে ১৭ বছর ধরে চলে আসা সংঘাত এবং ইরানী রেমিটেন্সের ওপর। তাদের নির্ভরশীলতার গুরুত্ব বেড়েছে। আবদুল মুসাবির ৩ বছর আগে ইরান গিয়ে প্রতিমাসে প্রায় ২শ’ ২৬ ডলার বা ১৮ হাজার আফগানির সমান আয় করেছে। মুসাবির ২২ পারওয়ান প্রদেশে তার মা-বাবা ও ৯ ভাইবোনের জন্য অর্থ পাঠিয়েছে। এভাবে সে তার ট্যাক্সিচালক বাবার সংসারে আর্থিক সহযোগিতা করেছে। কিন্তু রিয়ালের মূল্য পড়ে যাওয়ায় তার উপার্জন এসে দাঁড়ায় ৬ হাজার আফগানী মুদ্রায়। সীমান্ত থেকে একটি ট্যাক্সি ভাড়া করে প্রায় ১শ’ ৪০ কিলোমিটার দূরে হেরাত শহর ফোর সিজনস অব ফ্রিডম হোটেলে পৌঁছে সে মুসাবিরের প্রত্যাশা। সংঘাত জর্জরিত দেশে আরও কিছুটা ভাল আয়ের কর্মসংস্থান হবে তার। অভিবাসী বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা (আইওএম) বলেছে, ২০১৮ সালের প্রথম ৭ মাসে ইরান থেকে দেশে ফিরে এসেছে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৩শ’ ৪৪ জন আফগান। ২০১৭ সালে একই সময়ে যে সংখ্যক আফগান দেশে ফিরেছে তার চেয়ে এ বছরের সংখ্যা দ্বিগুণ এবং নজিরবিহীন।
×