স্টাফ রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কমনওয়েলথকে দ্রুত কার্যকর ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের সঙ্গে মিয়ানমার চুক্তি করলেও কাক্সিক্ষত দৃশ্যমান অগ্রগতি এখনও পর্যন্ত হয়নি। আর এক্ষেত্রে কমনওয়েলথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এমপি’র সঙ্গে তার সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে কমনওয়েলথের মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ডের সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি একথা বলেন।
কমনওয়েলথ মহাসচিব এ প্রসঙ্গে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু কমনওয়েলথের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিপন্ন রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ সমগ্র পৃথিবীর কাছে প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কমনওয়েলথ মানবিক সনদে যেটা বলা হয়েছে, তা মানলে এ সঙ্কট সমাধানের পথ সহজ হবে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষা, কমনওয়েলথ অভিবাসন, নারীর ক্ষমতায়ন, জনবায়ু পরিবর্তন, সুশাসনসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে কাজ করছে। এসব অবশ্যই ইতিবাচক। এর বাইরে নতুন নতুন উদ্ভাবনী উদ্যোগ নিয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলো উপকৃত হতে পারে।
দশম জাতীয় সংসদ কার্যকর করে তুলতে বিরোধীদলের ভূমিকার প্রশংসা করে কমনওয়েলথের মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। আগামী সংসদ নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণে শক্তিশালী ও কার্যকর সংসদ গঠিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, জাতীয় পার্টি অতীতে সকল প্রতিকূলতার মাঝেও জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্যও জাতীয় পার্টি প্রস্তুত। দেশ ও জাতির স্বার্থে সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখা জরুরী এবং এক্ষেত্রে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ম্যাচের প্রথমার্ধে ছয় গোল করে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। শুধু এই অর্ধ নয়, পুরো ম্যাচেই বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহমুদা আক্তারকে কোন পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি পাকিস্তানের মেয়েরা। বেশিরভাগ সময়ই মাহমুদাকে গোলপোস্ট ছেড়ে বাইরে সতীর্থদের সাহায্য করতে দেখা যায়।
ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই পাকিস্তানের রক্ষণভাগে চড়াও হয়ে খেলতে থাকে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। শুরুতেই তহুরা খাতুন পাকিদের জালে বল জড়িয়ে দেন। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল করা হয়। তবে কাক্সিক্ষত গোল পেতে খুব বেশি সময় নেয়নি ছোটনের দল। পঞ্চম মিনিটে আবারও সেই তহুরা। সংঘবদ্ধ আক্রমণে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ১৭ মিনিটে ফের পাকিস্তানের জাল কাঁপান বাংলার কিশোরীরা। এবার স্কোরশিটে নাম ওঠে মনিকা চাকমার। ডি বক্সের বাইরে থেকে অসাধারণ ফ্রিকিকে গোল করেন তিনি। দুই মিনিট পরই তিন নম্বর গোল পায় বাংলাদেশ। এবার নিজের দ্বিতীয় গোল করেন তহুরা। বাংলাদেশের একের পর এক আক্রমণে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকিস্তানের মেয়েরা।
দেশটির গোলরক্ষককে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় তহুরা-শামসুন্নাহারদের আটকাতে। মুহুর্মুহ আক্রমণের কারণে প্রায়ই ভুল করছিলেন পাকি কিপার। ম্যাচের ৩১ মিনিটে তেমনই একটি ভুলে চার নম্বর গোল পায় বাংলাদেশ। ঠিকমতো বল ক্লিয়ার করতে পারেনি পাকিস্তান গোলরক্ষক। তার হাত ফসকে বল চলে আসে শামসুন্নাহারের পায়ে। গোল করতে ভুল করেননি তিনি। ৩৯ মিনিটে স্কোরশিটে নাম লেখান অধিনায়ক মারিয়া মান্দা। পরের মিনিটেই আঁখি খাতুনের গোলটি এককথায় অসাধারণ। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে ডান পায়ের শটে পাকিস্তানের জাল কাঁপান এই দীর্ঘদেহী ডিফেন্ডার। প্রথমার্ধে ছয় গোল করা বাংলাদেশ বিরতির পর আরও আগ্রাসী হয়ে খেলতে থাকে।
বাংলার মেয়েদের একের পর এক আক্রমণে পাকিস্তানের রক্ষণদুর্গ তছনছ হয়ে যায়। বিরতির পর শুরুটা করেন সাজেদা খাতুন। ৪৮ মিনিটে গোল করেন তিনি। এরপর শুধুই শামসুন্নাহার ঝলক। ৫০ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন তিনি। চার মিনিট পর আঁখির হেডে মাথা ছুঁয়ে বল জালে পাঠিয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন শামসুন্নাহার। ৫৭ মিনিটে আবারও শামসুন্নাহারের কেরামতি। একক প্রচেষ্টায় নিজের চার নম্বর গোল করেন এই ফরোয়ার্ড। এক মিনিট পর সাজেদা নিজের ™ি^তীয় গোল করলে বাংলাদেশ ১১-০ গোলে এগিয়ে যায়। ৬০ মিনিটে আনাই মুগিনি বাংলাদেশের হয়ে ১২ নম্বর গোল করেন। এরপর প্রায় আধাঘণ্টা বাংলার মেয়েদের আটকে রাখেন পাকি ফুটবলাররা। তবে শেষদিকে আর আটকাতে পারেননি। ৮৮ মিনিটে বিজয়ী দলের হয়ে ১৩তম গোল করেন মুাগনি। পুরো ম্যাচের মতো শেষটাও রাঙান শামসুন্নাহার। ম্যাচের ৯০ মিনিটে বাংলাদেশের হয়ে ১৪ নম্বর গোল করেন তারকা এই স্ট্রাইকার।