ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বরখাস্ত লে. কর্নেল হাসিনুরকে তুলে নেয়ার অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১০ আগস্ট ২০১৮

বরখাস্ত লে. কর্নেল হাসিনুরকে তুলে নেয়ার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরখাস্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমানকে রাজধানীর পল্লবীর নিজ বাসা থেকে তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তার পরিবার অভিযোগ করেন, বুধবার রাতে বাসার সামনে থেকে তাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নেয়া হয়। পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, হাসিনুর রহমানকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। সেটি যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। আমি যতটুকু শুনেছি তার সঙ্গে পূর্বে জঙ্গীদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ছিল। এসব বিষয়ও তদন্ত করা হচ্ছে। তবে তাকে তুলে নেয়ার বিষয়টি ডিবি পুলিশও অস্বীকার করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, হাসিনুর রহমান ময়মনসিংহে অবস্থিত আর্মি রিসার্চ ট্রেনিং এ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডে (আর্ট ডক) কর্মরত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) দশম দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের (লং কোর্স) মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। হাসিনুর রহমান ২০১০ সালে চট্টগ্রাম র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক ছিলেন। এ সময় তার সঙ্গে কর্মরত ছিলেন আবদুল্লাহ আলী যায়ীদ। নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হিজবুত তাহ্রীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার জের ধরে তাকে ও যায়ীদকে ওই সময় আটক করা হয়। পরে সেনাবাহিনীতে ফেরত দেয়ার পর তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। হাসিনুর রহমানের স্ত্রী শামীমা রহমানের অভিযোগ, বুধবার রাত ১০ টা ২০ মিনিটের দিকে বাসার সামনে থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ৪-৫ জন একটি মাইক্রোবাস থেকে নেমে তাকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় হাসিনুর রহমান চিৎকার করলে তাদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে তারা হাসিনুরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চলে যায়। তিনি জানান, পরে পল্লবী থানায় গেলে পুলিশ জিডি নেয়নি। তবে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ সময় তারা হাসিনুর রহমানের ব্যবহৃত লাইসেন্সকৃত পিস্তলটি উদ্ধার করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, হাসিনুর রহমানের শ্যালিকা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। ওই সময় তার শ্যালিকা হিজবুত তাহ্রীরের নারী ইউনিটের একজন শীর্ষস্থানীয় নেত্রী ছিলেন। ২০০৯ সালের অক্টোবরে হিজবুত তাহ্রীর নিষিদ্ধ ঘোষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র শিক্ষক ও হিজবুহ তাহ্রীরের উপদেষ্টা গোলাম মহিউদ্দিন গ্রেফতার হন। তার জবানবন্দী থেকেই হাসিনুর রহমানের জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া যায়। তখন হাসিনুর রহমান চট্টগ্রামে র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক ছিলেন। র‌্যাবের হাতে হিজবুত তাহ্রীরের বেশ কয়েকজন সদস্য আটক হওয়ার পর র‌্যাবও নিশ্চিত হয় হাসিনুর রহমানের সঙ্গে হিজবুত তাহ্রীরের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ২০১১ সালের প্রথম দিকে তাকে র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখায় ডেকে পাঠানো হয়। সে সময় গোয়েন্দা শাখার প্রধান ছিলেন লে. ক. জিয়াউল আহসান। তিনি সাংবাদিকদের কাছে হাসিনুর রহমানের হিজবুত তাহ্রীর সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত করেন। এরপরেই তাকে র‌্যাব-৭ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সেনাবাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়। হাসিনুর রহমান সেনাবাহিনীতে চাকরির সময় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় দণ্ডিত হয়ে পাঁচ বছরের জেল খেটে ২০১৪ সালে মুক্তি পেয়েছিলেন।
×