ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি একটি লাশ চেয়েছিল

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১০ আগস্ট ২০১৮

বিএনপি একটি লাশ চেয়েছিল

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে বিএনপি একটি লাশ চেয়েছিল। তারা মনে করেছিল, লাশের ওপর ভর করে অশুভ শক্তির ক্ষমতায় আসার পথ সুগম হবে। তবে তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময়োপযোগী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে তাদের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়েছেন। এভাবে বিএনপির সরকার উৎখাতের সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তোপখানা রোডে ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠক শেষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কালো থাবা বিস্তার করে সরকার উৎখাত করতে চেয়েছিল বিএনপি-জামায়াত। বিএনপির এক নেতার ফাঁস হওয়ার ফোনালাপের মাধ্যমে তা প্রমাণিত হয়েছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে তারা উঠে পড়ে লেগেছে জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দেশী-বিদেশী চক্রান্ত করে কোন লাভ হবে না। সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন হবে। বিএনপি-জামায়াত জোট হেফাজতি কায়দায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে চেয়েছিল জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে বিএনপির ভূমিকার প্রেক্ষাপটে হেফাজতের আন্দোলনের কথা মনে পড়ে যায়। যেদিন ঢাকা শহরে হেফাজতিরা লঙ্কাকা- ঘটিয়েছিল। সে সময় খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ঢাকাবাসীদের বের হয়ে আসতে। কিন্তু তারা সফল হয়নি, ব্যর্থ হয়েছে। একইভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করে, জনগণকে উত্তেজিত করে শিক্ষার্থীদের ওপর ভর করে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে তারা তাদের নেতাকর্মীদের মাঠে নামার নির্দেশ দেন। তারা আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছিল। এছাড়া গুজব ছড়িয়ে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে হামলা করা হয়। একজন মডেল ফেসবুকের মাধ্যমে কিভাবে নোংরা ভাষায় মিথ্যাচার করেছে তা দেশবাসী দেখেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সড়ক পরিবহন আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ১৪ দল। একই সঙ্গে ১৪ দল এ আইন দ্রুত বাস্তবায়ন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ঘাতক বাস চালক স্বীকার করেছেন যে, সে ইচ্ছা করে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপা দিয়েছে। এখন এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন কাজ করার সাহস না পায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, লাইসেন্স ও ফিটনেস ছাড়া কেউ যাতে গাড়ি চালাতে না পারে সেজন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, কেউই যাতে লাইসেন্স ও ফিটনেস ছাড়া গাড়ি চালাতে না পারে। এ বিষয়ে কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে আমার গাড়িও চালাতে দিবেন না। বাইক চালক ও আরোহী উভয়েরই হেলমেট ছাড়া চলতে দিবেন না। ট্রাফিক আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সড়কে আর নৈরাজ্য সহ্য করা হবে না ঘোষণা দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। বিআরটিএ’র অবহেলা আর দেখতে চায় না জাতি। মন্ত্রী এমপি যে-ই হোক, গাড়ির কাগজ না থাকলে কাউকে ছাড় দেয়া যাবে না। তিনি বলেন, ‘বাস মালিক শ্রমিকদের প্রয়োজনে জেলে ঢোকাতে হবে।’ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ১৪ দলের বৈঠকে অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহমেদ মুক্তা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম সালাহউদ্দিন আহমেদ, সহ সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট এনামুল ইসলাম রুবেল, গণতন্ত্রী পার্টির ডাঃ শাহাদাত হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডাঃ ওয়াজেদুল ইসলাম খান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন ছেড়ে ক্লাসরুমে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
×