ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহী নগরে নিয়ম ভেঙ্গে চলছে পুকুর ভরাট

প্রকাশিত: ০৭:০০, ৯ আগস্ট ২০১৮

রাজশাহী নগরে নিয়ম ভেঙ্গে চলছে পুকুর ভরাট

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ মহানগরীর টিকাপাড়া (খুলিপাড়া) এলাকায় অবস্থিত একমাত্র পুকুরটি এবার কৌশলে ভরাট করা হচ্ছে। এনিয়ে এলাকাবাসী নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন, অত্র এলাকায় ব্যবহার্য একমাত্র পুকুর অবশিষ্ট আছে। সেটিও ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রির পাঁয়তারা করছে একটি প্রভাবশালী মহল। সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মহানগরীর টিকাপাড়া ও খুলিপাড়ার মাঝামাঝি গণি মিঞার মাঠ সংলগ্ন কয়েক বিঘা জমির ওপর একটি বড় পুকুর। যা স্থানীয়ভাবে পচা ডাক্তারের পুকুর হিসেবেই পরিচিত। এটি এলাকায় একমাত্র পুকুর, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষ গোসলসহ নিত্য ব্যবহারিক অনেক কাজকর্ম করে আসছেন। পুকুরটি অনেকের কাছে বিশুদ্ধ পানির একমাত্র উৎস। সেইসঙ্গে পুকুরের সঙ্গে ড্রেনের সংযোগ থাকায় এলাকার পানি নিষ্কাশনেরও বড় ব্যবস্থা এই পুকুরটি। তবে সম্প্রতি নিয়ম অমান্য করে কৌশলে পুকুরটি ভরাট হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুকুর ভরাট রোধে গত ৯ জুলাই রাজশাহী নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নগর পরিকল্পক বরারর অভিযোগ দেয়া হয়েছে। যেখানে এলাকার অন্তত একশ বাসিন্দা স্বাক্ষর দিয়েছেন। তবে অভিযোগ দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে জানান এলাকার লোকজন। তারা অভিযোগ করে বলেন, পুকুরটির পাশেই একটি বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে পাইলিং এর সমস্ত কাদা-মাটি ও বালু পুকুরে ফেলা হচ্ছে। এলাকাবাসী বারবার মৌখিকভাবে নিষেধ করলেও পাইলিংয়ের কাদামাটি ও বালু অপসারণের খরচ বাঁচাতে এসব আবর্জনা পুকুরে ফেলা হচ্ছে বলে জানান তারা। এতে একদিকে যেমন পুকুরের পরিষ্কার পানি অপরিষ্কার হচ্ছে অন্যদিকে ধীরে ধীরে পুকুরটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, ভবন নির্মাণের মালামাল আনা নেয় করার সুবিধার্তে পুকুরের সঙ্গে সংযোগ ড্রেনটিও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তায় হাঁটুজল সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া কাদামাখা পথে এলাকাবাসীর যাতাযাতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন এলাকাবাসী বলেন, ছোট থেকেই আমরা এই পুকুরে গোসলসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ করে আসছি। তবে গত তিন মাস ধরে পুকুরটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। পাইলিং এর কাদা-মাটি ও বালু সরাসরি পুকুরে ফেলায় স্বচ্ছ পানি এখন ঘোলাটে হয়ে গেছে। এ বিষয়ে পুকুরের মালিকের সঙ্গে কথা বলেও কোন লাভ হয়নি। কারন তিনিও চাইছেন এভাবে আস্তে আস্তে পুকুরটি ভরাট করে ফেলতে। কোন রকম পুকুরটি ভরাট করে প্লট করে ফেলতে পারলেই মোটা টাকায় তা বিক্রি করা সম্ভব, তাই মালিক পক্ষও নিশ্চুপ বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ বিষয়ে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) নগর পরিকল্পক আজমেরী আশরাফী জানান, এলাকাবাসীর স্বাক্ষর করা পুকুর ভরাট সংক্রান্ত একটি অভিযোগ তার দফতরে জমা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
×