ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা প্রধান

রোহিঙ্গাদের জন্য আরও সহযোগিতা চাই বালি সম্মেলনে

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ৯ আগস্ট ২০১৮

রোহিঙ্গাদের জন্য আরও সহযোগিতা চাই বালি সম্মেলনে

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রধান রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আরও সাহায্য-সহযোগিতা এবং সুরক্ষা প্রদানের জন্য এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারের প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতবছর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ও বৈষম্যের শিকার হওয়ার পর সাত লাখের বেশি শরণার্থী পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের। ইউনাইটেড নেশন্স হাইকমিশন ফর রিফুজি (ইউএনএইচসিআর) প্রধান ফিলিপো গ্র্যান্ডি ইন্দোনেশিয়ার অবকাশ যাপন দ্বীপ বালিতে ২৬ দেশের মন্ত্রীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সেভেন্থ মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্স অব দ্য বালি প্রসেস সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে মঙ্গলবার বলেন, আমি আপনাদের সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের পাশে থাকুন। রাখাইন রাজ্যের জনগণের সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। তাদেরকে জোর করে তাদের আগের অবস্থানে পাঠানো যাবে না। বালি প্রসেস ৪৮টি সরকার ও তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত একটি ফোরাম। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো হচ্ছে, ইউএনএইচসিআর, ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) ও ইউএন অফিস অন ড্রাগস এ্যান্ড ক্রাইম (ইউএনওডিসি)। মানব চোরাচালান, মানব পাচার ও সংশ্লিষ্ট সীমান্ত সম্পর্কিত অপরাধ নিয়ে সংলাপ ও সিদ্ধান্ত নিতে এই ফোরাম ২০০২ সালে গঠিত হয়। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে বালি ঘোষণা গৃহীত হয়। এতে রাষ্ট্রহীন অবস্থার সমাধানের জন্য একটি সমন্বিত পদ্ধতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা, অংশীদারদের উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং নিরাপদ পথ প্রসারিত করার ওপর আলোকপাত করা হয়। ফিলিপো সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, তারা ঘোষণাপত্রে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা নিয়ে যেন আলোচনা করে। এতে বোঝা যাবে সরকারগুলো কি ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য তারা কি করেছে তাও বোঝা সম্ভব হবে। তিনি প্রশ্ন করেন, আপনাদের সরকারের সমর্থনে কি বাংলাদেশে হাসপাতাল তৈরির কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, যেখানে শরণার্থীরা চিকিৎসা নিতে পারবে। শুধু তাইই নয় এর পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্যসেবাও উন্নত হতে পারে। আমরা কি সেখানকার উন্নয়ন, বাণিজ্য ও অভিবাসন সম্পর্কিত অবস্থা বিবেচনা করে স্থানীয় লোকজন এবং বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করতে পারি না। যাতে নয় লাখ শরণার্থীর দায়িত্ব নিতে পারি। আমরা কি বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য কোটা বাড়াতে পারি না অথবা বাংলাদেশের গার্মেন্ট পণ্যের ওপর শুল্ক কমাতে পারি না? ফিলিপো জোর দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার প্রকৃত সমাধান মিয়ানমারের হাতে রয়েছে। এজন্য আঞ্চলিক উদ্যোগ জরুরী। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। রাষ্ট্রহীন অবস্থার সমাধান ও আন্তঃসাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বেরও অবসান হবে। সম্মেলনে উপস্থিত বড় বড় কর্পোরেশনের ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে ইউএনএইচসিআরের প্রধান পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের বিস্তৃতি করে বৈধ শ্রমিকদের অভিবাসন এবং মানব পাচার রোধ করার কথাও বলেন।
×