ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো একে হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করেছে

সিরিয়ায় শীর্ষ ক্ষেপণাস্ত্র বিজ্ঞানী নিহত

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ৯ আগস্ট ২০১৮

সিরিয়ায় শীর্ষ ক্ষেপণাস্ত্র বিজ্ঞানী নিহত

সিরিয়ায় শনিবার গাড়ি বোমা হামলায় রাসায়নিক অস্ত্র কেন্দ্রের গবেষক ও রকেট বিজ্ঞানী আজিজ আসবার নিহত হয়েছেন। হামা শহরে তার গাড়ি টার্গেট করে একটি বিস্ফোরণ ঘটলে তিনি নিহত হন। সিরিয়ার বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে দেশটির রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচীর সম্পৃক্ততা আছে বলে পশ্চিমা গোয়েন্দারা মনে করেন। তিনি নিখুঁত ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে পারতেন যা শত শত মাইল দূর থেকে ইসরাইলের শহরগুলোতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে পারত। সিরিয়ার সরকার সমর্থক সংবাদমাধ্যমগুলো একে হত্যাকা- আখ্যা দিয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস। বিদ্রোহী গ্রুপ আবু আমারা স্পেশাল মিশন গাড়ি বোমা হামলা চালানোর দাবি করেছে। তবে অন্যরাও হামলায় জড়িত থাকতে পারে। সবচেয়ে বেশি সন্দেহ করা হচ্ছে ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে। লন্ডন ভিত্তিক মানবাধিকার গ্রুপ সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে চালকসহ তিনি নিহত হয়েছেন। দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র গবেষণায় আসবারের ভূমিকা রয়েছে। সিরিয়া সরকার হামলার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে। দুই সপ্তাহ আগেও সেখানে একটি বিমান হামলা হয়। সিরিয়ার ওই বিজ্ঞানী ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীতে জড়িত বলে ইসরাইল অভিযোগ করেছে। আসবার হামা প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় মাসিয়াফ শহরের সিরিয়ান সায়েন্টিফিক স্টাডিজ এ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে দায়িত্বে ছিলেন, গবেষণাগারটি লক্ষ্য করে আগেও কয়েকবার হামলা চালানো হয়েছে। তিনি আসাদ সরকারের রাসায়নিক কর্মসূচীর সঙ্গেও জড়িত ছিলেন বলে গবেষণা কেন্দ্রের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এসব হামলার পেছনে ইসরাইলের হাত আছে বলে বাশার আল আসাদের সরকার মনে করে। ওই বিজ্ঞানীর সঙ্গে সিরিয়া ও ইরানের শীর্ষ নেতৃত্বের সুসম্পর্ক ছিল। সেক্টর ফোর কোড নামে তিনি একটি গোপন অস্ত্র কর্মসূচী চালাতেন। দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের কারণে আসবারের নাম যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ছিল। বাশার আল আসাদের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তার মৃত্যুর বিষয়ে সরকারীভাবে কোন মন্তব্য করা হয়নি। সরকারপন্থীরা বিধ্বস্ত গাড়ির একটি ছবি অনলাইনে পোস্ট করে সেটি আসবারের বলে দাবি করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, মোসাদই আসবারের গাড়ির মধ্যে বোমা রেখেছিল। এ নিয়ে গত তিন বছরে ইসরাইল বিদেশের মাটিতে চারবার অস্ত্র বিশেষজ্ঞ হত্যা করল। মধ্যপ্রাচ্যের একটি গোয়েন্দা সংস্থার একজন সিনিয়র কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে সোমবার একথা বলেছেন। তিনি বলেন, ইসরাইল অনেকদিন ধরেই আসবারকে গোপনে নজরদারি করছিল। তিনি সিরিয়া ও ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচীর জন্য কাজ করেন বলে ইসরাইল মনে করে। বিশেষ করে তার গোপন সেক্টর ফোর কর্মসূচী ইসরাইলের উদ্বেগের কারণ ছিল। কারণ ওই প্রকল্পে আসবার যে ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কাজ করতেন সেগুলো দূর থেকে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম ছিল বলে মনে করা হয। আসবার ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য একটি কঠিন জ্বালানি প্ল্যান্ট নিয়ে কাজ করতেন। ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য সাধারণত তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হয় এবং এই জ্বালানি তুলনামূলকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। সিরিয়া সরকারের সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে দেশটিতে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ ও গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে থেকেই গবেষণা কাজে জড়িত ছিলেন তিনি। ইসরাইলের আইনানুসারে কেবলমাত্র দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোসাদের হত্যাকাণ্ড অনুমেদন করতে পারেন। এ বিষয়ে সোমবার ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিদগর লিয়েবারম্যানের মতো জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে চাননি।
×