ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজ জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস

কয়লা চোরদের ছাড়া হবে না ॥ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ৯ আগস্ট ২০১৮

কয়লা চোরদের ছাড়া হবে না ॥ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা চোরদের ছাড়া হবে না। তদন্তে দোষ পেলে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস পালন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বুধবার বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস পালন করা হবে। স্বাধীনতার পর দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র কিনে নেন। এই জাতীয়করণের ফলে মাত্র সাড়ে চার মিলিয়ন পাউন্ডে তিতাস, বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, রশিদপুর এবং কৈলাসটিলা ক্ষেত্রের মালিকানা পায় বাংলাদেশ। সপরিবারে নিহত হওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগে ৯ আগস্ট ১৯৭৫ বঙ্গবন্ধুর এই দূরদর্শী সিদ্ধান্ত গ্রহণকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০১০ সাল থেকে এই দিনকে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। এই ধারাবাহিকতায় এবারও দিবসটি পালনে বিস্তারিত কর্মসূচী হাতে নিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বড়পুকুরিয়া বিষয়ে একটি তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ওই প্রতিবেদনও আগামী সপ্তাহে হাতে আসবে। এতে করে কয়লা কেলেঙ্কারির হোতারা চিহ্নিত হবে বলে তিনি মনে করেন। এরপরই তাদের বিরুদ্ধে দাফতরিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন আমরা দুর্নীতিমুক্ত জ্বালানি খাত সৃষ্টি করতে চাই। তিনি বলেন, প্রতিটি খাতে নিরীক্ষা করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চায় তার সরকার। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা চুরির বিষয়টি প্রকাশ পেলে সরকার এ বিষয়ে তদন্ত করতে দুটি কমিটি গঠন করে। এই দুই কমিটির একটি এর মধ্যে প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদনে কয়লা খনির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের গাফিলতি থাকার কথা উঠে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ডিজি প্রশাসনকে প্রধান করে গঠিত আরও একটি কমিটি ওই ঘটনার তদন্ত করছে। আগামী সপ্তাহে ওই কমিটির রিপোর্ট দেয়ার কথা রয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বড়পুকুরিয়াতে উন্মুক্ত খনি করার কথা চিন্তা করছে সরকার। তবে বড়পুকুরিয়ায় উন্মুক্ত খনন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ব্যাপক জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, খনির পানি ব্যবস্থাপনা কঠিন বিষয়। তবে সরকার বেশি কয়লা উত্তোলন করতেও চায়। ফলে পুরো বিষয়টির জন্য আরও চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এলএনজি আমদানি শুরু হলে গ্যাসের দাম বাড়বে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রতিমন্ত্রী। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) কোন হঠকারী সিদ্ধান্ত নেবে না। গ্যাসের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা হবে। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ভাসমান টার্মিনালটি গত ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় আসে। এর মধ্যে কয়েক দফা সময় নির্ধারণ করেও পাইপ লাইনে এলএনজি সরবরাহ করা যায়নি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৯ আগস্টের পর যে কোন দিন এলএনজি আসবে। তিনি বলেন, বৈরী আবহাওয়া এবং পাইপ লাইনে সমস্যার কারণে এলএনজি আসতে দেরি হচ্ছে। ভারতীয় কোম্পানি রিল্যায়েন্স বাংলাদেশের মেঘনাঘাটে একটি ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে তারা তিন হাজার ৫০০ মেগাওয়াট এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করতে চায়। তবে তারা ঘন ঘন পরিকল্পনা বদল করায় কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
×