ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মাহিয়ান দ্বীপ

দলবদলে বার্সিলোনার চমক

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ৮ আগস্ট ২০১৮

দলবদলে বার্সিলোনার চমক

গত বছরে ইতিহাসের সর্র্বোচ্চ পারিশ্রমিকের বিনিময়ে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের কাছে নেইমারকে বিক্রি করে দেয় বার্সিলোনা। এরপর থেকেই নেইমারের শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য হন্যে হয়ে পড়ে স্পেনের জায়ান্ট ক্লাবটি। নেইমারেরই স্বদেশী ফিলিপে কুতিনহো-পাওলিনহোকে কিনে আনলেও মন ভরেনি বার্সার। যে কারণে কুতিনহোকে দলে রাখলেও পাওনিলহোকে চীনে ফেরত পাঠিয়ে দেয় তারা। তারপরও ফুটবলার কেনার নেশা কমেনি কাতালান ক্লাবটির। ২০১৭-১৮ ট্রান্সফার উইন্ডোতে এখন পর্যন্ত চার চার জন প্রতিভাবান ফুটবলার কিনে রীতিমতো চমকে দিয়েছে গোটা ফুটবল দুনিয়াকেই। গত মাসেই রোমা থেকে এক প্রকার ছিনতাই করে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ম্যালকমকে নিয়ে এসেছে বার্সিলোনা। এর আগে আর্থার মেলো ও ক্লেমেন্তে ল্যাঙ্গলেটকেও দলে ভিড়িয়েছে তারা। বার্সিলোনার কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে জানিয়েছিলেন, আগস্টে নতুন মৌসুম শুরুর আগে আরও খেলোয়াড় কিনবেন তারা। যেখানে থাকবে নতুন চমক। শেষ পর্যন্ত বেয়ার্ন মিউনিখের চিলিয়ান তারকা আর্তুরো ভিদালকে ন্যু ক্যাম্পে নিয়ে এসেছে বার্সিলোনা। জার্মান জায়ান্ট বেয়ার্ন মিউনিখে যোগ দেয়ার পর গত তিন মৌসুমেই জিতেছেন বুন্দেস লীগার শিরোপা। এমন সাফল্যের পরেও আর্তুরো ভিদাল বিদায় বললেন বেয়ার্নকে। তিন বছরের চুক্তিতে জার্মান ক্লাব ছেড়ে বার্সিলোনায় পাড়ি জমালেন এই চিলিয়ান মিডফিল্ডার। বেয়ার্নের হয়ে ১২৪ ম্যাচে ভিদাল করেছেন ২২ গোল। গত ৩ মৌসুমের জন্য ৩১ বছর বয়সী ভিদালকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সদ্যই সাবেক হওয়া ক্লাব বেয়ার্ন, ‘গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তার মতো ফুটবলারদের ওপরই ভরসা করত ক্লাব। তিন মৌসুমে ক্লাবকে যা দিয়েছেন, তার জন্য ভিদালকে অনেক ধন্যবাদ। স্পেনে তার আগামী দিনের ক্যারিয়ারের জন্য শুভকামনা।’ এদিকে, আর্তুরো ভিদাল এই মৌসুমে বার্সিলোনার মাঝ মাঠে ভিন্ন মাত্রা নিয়ে আসবেন বলে মনে করেন কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে। আন্দ্রে ইনিয়েস্তার বিদায়ের পর থেকেই মাঝ মাঠে শক্তি বাড়াতে অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার খুঁজছিলেন কাতালানদের এই অভিজ্ঞ কোচ। অবশেষে ভিদালের মতো একজনকে পেয়ে খুশি তিনি। সাংবাদিকদের ভালভার্দে বলেন, ‘সে এমন একজন খেলোয়াড়, আমরা আশা করি যে, সে আমাদের মাঝ মাঠে শক্তি বয়ে আনবে। তার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। বড় ম্যাচ খেলতে সে অভ্যস্ত। মাঠের সব জায়গায় তার উপস্থিতি থাকে, আমি মনে করি, এটা আমাদের জন্য খুব ভাল হবে।’ এ সময় ভালভার্দে আরও বলেন, ‘পাওলিনহোর মতো সেও আমাদের দলে থাকা অন্য কোন খেলোয়াড়ের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। আমরা মনে করি, এখানে সে ভালভাবে মানিয়ে নিতে পারবে। সে একজন যোদ্ধা। আমাদের দলে ভিন্ন ধরনের খেলোয়াড়দের জন্য জায়গা আছে। গত বছর পাওলিনহো যখন এখানে আসে, এক মিনিট খেলার আগেই তাকে নিয়ে কিছুটা বিতর্ক হয়। তারপর মানুষ দেখেছিল যে, সে খুবই ভাল করেছে।’ গ্রীষ্মকালীন দলবদলে-এ লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মেলবোর্ন ভিক্টোরিতে যোগ দিলেন কেইসুকে হোন্ডা। ২০১৮/১৯ মৌসুমের জন্য সোমবার অস্ট্রেলিয়ান ক্লাবটির সঙ্গে চুক্তি-স্বাক্ষর করলেন জাপানের সাবেক এই তারকা ফুটবলার। হোন্ডাকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত অস্ট্রেলিয়ান ক্লাবটি। এ প্রসঙ্গে মেলবোর্ন ভিক্টোরির প্রধান কোচ কেভিন মুসকাট বলেন, ‘উচ্চ পর্যায়ে কেইসুকে হোন্ডার ধারাবাহিক পারফর্মেন্সের ব্যাপারে আর নতুন করে বলার কিছুই নেই। এখন মেলবোর্নে সে কী করে তা দেখার জন্যই মুখিয়ে রয়েছি আমরা।’ বয়সে বত্রিশকেও ছাড়িয়ে গেছেন হোন্ডা। কিন্তু তারপরও ফুটবল মাঠে দুর্বার এই জাপানী স্ট্রাইকার। রাশিয়া বিশ্বকাপেও তার ঝলক দেখেছে গোটা ফুটবল দুনিয়া। গত মাসে শেষ হওয়া ২০১৮ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে জায়গা করে নিয়েছিল তার দেশ। কিন্তু শেষ ষোলোতে ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত বেলজিয়ামের কাছে ৩-২ ব্যবধানে হেরে যায় এশিয়ার প্রতিনিধিরা। রাশিয়া বিশ্বকাপের পরই আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় নেন হোন্ডা। এরপর থেকেই মেলবোর্ন ভিক্টোরিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। নতুন ক্লাবে কেইসুকে হোন্ডার লক্ষ্য এখন নিজের সেরাটা ঢেলে দেয়া। এ প্রসঙ্গে জাপানী স্ট্রাইকার নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মেলবোর্ন ভিক্টোরিতে যোগ দিতে পেরে আমি খুব খুশি। বিশ্বকাপ শেষের এক সপ্তাহ পরই জানতে পারি তারা আমার প্রতি আগ্রহী। নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে আমি সত্যিই খুব পছন্দ করি। এই সময়ের মধ্যেই আমি বেশ কিছু বিষয় পর্যবেক্ষণ করেছি। এ লীগে মেলবোর্ন ভিক্টোরি-ই সবচেয়ে সফল ক্লাব। এটা বিস্ময়কর। এই টুর্নামেন্টে অনেকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা।’ এদিকে, রাশিয়া বিশ্বকাপে আলো ছড়িয়েছেন ইভান পেরিসিচও। বিশ্বকাপের পর থেকেই তার ওপরে নজর রাখছে ইউরোপের শীর্ষ সারির ক্লাবগুলো। তবে ইভান পেরিসিচকে পেতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নামই আসছিল বেশি। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারানো ম্যাচে তাঁর একটি গোল, একটি এ্যাসিস্ট। জোশে মরিনহো তখনই প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ান উইঙ্গারকে। তবে বিশ্বকাপ শেষে ইংলিশ ক্লাবটির আর সেই তৎপরতা চোখে পড়েনি। ওদিকে পেরিসিচ জানিয়ে দিয়েছেন ম্যানইউ নয়, তার প্রথম পছন্দ জার্মান জায়ান্ট বেয়ার্ন মিউনিখ। ইন্টার মিলান তারকার বেয়ার্ন প্রীতির জোরালো কারণ আছে। এই মৌসুমেই যে ব্যাভারিয়ানরা কোচ করেছে ক্রোয়েশিয়ার সাবেক কোচ নিকো কোবাচকে। যার সঙ্গে দুই বছর কাজ করার সুযোগ হয়েছে পেরিসিচেরও। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এখনও তিনি কোবাচ ভক্ত। দলবদলের প্রসঙ্গে যা তিনি একেবারেই গোপন রাখেননি, ‘আমার ওপর নিকো কোবাচের প্রভাব অনেক। তিনি যখন ক্রোয়েশিয়ার কোচ ছিলেন আমি অনেক ভাল খেলেছি সেই সময়। পরে জার্মানিতে যখন এলেন তখনও যোগাযোগ। এখন উনি আমাকে চাইলে জানেনই তো আমি কোথায় আছি।’
×