ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

২৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার হচ্ছে শিশু পরিবার ও ছোটমণি নিবাস

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ৭ আগস্ট ২০১৮

২৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার হচ্ছে শিশু পরিবার ও ছোটমণি নিবাস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের এতিম ও গরিব শিশুদের অন্যতম আশ্রয়স্থল সরকারী শিশু পরিবার এবং ছোটমণি নিবাস। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিচালিত এসব অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হয়নি। ফলে বসবাসের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৮টি সরকারী শিশু পরিবার ও একটি ছোটমণি নিবাস সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ‘সরকারী শিশু পরিবার এবং ছোটমণি নিবাস নির্মাণ/ পুনঃনির্মাণ’ নামের একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ২৯৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা। পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা জানান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর এরই মধ্যেই প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণ শেষ করা হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় উপস্থাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের জুলাইয়ের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কাজ শেষ করবে সমাজ সেবা অধিদফতর ও গণপূর্ত অধিদফতর। ১৯৬১ সালে শিক্ষা দফতর থেকে স্টেট অরফানেজগুলোর পরিচালনার দায়িত্ব সমাজকল্যাণ পরিদফতরের ওপর ন্যাস্ত করা হয়। এই স্টেট অরফানেজ বা সরকারী এতিমখানাগুলোকে পরবর্তী সময়ে সরকারী শিশু সদন হিসেবে নামকরণ করা হয়। বর্তমানে পারিবারিক পরিবেশে এতিম শিশুদের ছোট ছোট দলে বিভক্ত করে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান ও সহচর্য দেয়ার মাধ্যমে প্রতিপালনের জন্য শিশু সদনগুলোকে সরকারী শিশু পরিবারের রূপান্তরিত করা হয়েছে। ১৯৪৪ সালের এতিমখানা এবং বিধবা সনদ আইন, ১৯৭৪ সালের শিশু আইনের বিধান মোতাবেক পিতৃ-মাতৃহীন বা পিতৃহীন এতিম ও দুস্থ শিশুদের পূর্ণমর্যাদা দেয়া, তাদের অধিকার এবং স্বার্থ সংরক্ষণ বিষয়ে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে দেশে ৮৫টি সরকারী শিশু পরিবারে এতিম ও দুস্থ শিশুকে লালন-পালন করা হচ্ছে। জাতিসংঘ ঘোষিত শিশু অধিকার সনদ, দেশের সংবিধান ও জাতীয় শিশু নীতিমালায় বর্ণিত বিধান এবং মানবিক ও ধর্মীয় চিন্তা-চেতনার অন্যান্য শিশুর মতো পরিত্যক্ত শিশুর সুষ্ঠুভাবে লালন-পালন ও উন্নয়নের সুযোগ সুবিধা দেয়ার জন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এতিম ও পিতা-মাতার স্নেহ থেকে বঞ্চিত শিশুদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও অধিকার সুরক্ষায় সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এতিম ও পিতামাতার স্নেহবঞ্চিত শিশুর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেয়াসহ পুনর্বাসন করা হচ্ছে। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট ও সময়ের দাবি অনুযায়ী সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সমাজসেবা অধিদফতর পরিচালিত ছোটমণি নিবাসের পরিধি বিস্তৃত করে পরিত্যক্ত শিশুদের পাশাপাশি ঠিকানাবিহীন, বিপন্ন ও দুর্দশাগ্রস্ত নির্দিষ্ট বয়সের শিশুকে রক্ষণাবেক্ষণ, প্রতিপালন ও পুনর্বাসনের কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। এ ধরনের শিশুরা হচ্ছে শিশু পাচারকারীদের কবল হতে উদ্ধার করা শিশু, অভিভাবকহীন দুর্দশাগ্রস্ত ও বিপন্ন শিশু, হারানো শিশু এবং কারাগারে অবস্থানরত সমস্যাগ্রস্ত মহিলাদের শিশু। পরিত্যক্ত শিশুর মতো এসব শিশুও ভীষণভাবে দুর্দশাগ্রস্ত ও সরকারী অভিভাবকত্বের দাবিদার।
×