ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গান, কবিতায় ছায়ানটের রবীন্দ্র স্মরণানুষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৭ আগস্ট ২০১৮

গান, কবিতায় ছায়ানটের রবীন্দ্র স্মরণানুষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সোমবার দিনটি ছিল যেন রবীন্দ্রময়। কবিগুরুর প্রয়াণবার্ষিকীতে শহরজুড়ে ছিল নানা আয়োজন। বহুমাত্রিক আনুষ্ঠানিকতায় স্মরণ করা হয়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। এসব আয়োজনে আপন সৃষ্টির ঐশ্বর্যে আবির্ভূত বাঙালীর নিত্যসঙ্গী এই কবি। শ্রাবণ সন্ধ্যায় রবীন্দ্রনাথকে স্মরণ করে তেমনই এক অনুষ্ঠানের আয়োজন ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট। সংগঠনের সভাপতি সন্জীদা খাতুনের গ্রন্থনায় সাজানো হয় রবীন্দ্র স্মরণানুষ্ঠানটি। পরিবেশিত ‘হে বন্ধু হে প্রিয়’ শীর্ষক গীতিআলেখ্য। ভিন্নমাত্রার এ পরিবেশনা প্রতিটি গানের শুরুতে ছিল সন্্জীদা খাতুনের লেখনীতে গানের মর্মকথা। জহিরুল হক খানের পাঠ এবং লাইসা আহমেদ লিসার কণ্ঠে ‘শুধু তোমার বাণী নয় গো, হে প্রিয়’ এ গান দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। প্রতিটি গানের শুরুতে সেই গানের মর্মকথা পাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পীরা। যেমন ‘মোর হৃদয়ের গোপন বিজন ঘরে’ এ গানের আলোচনায় ছায়ানট সভাপতির মর্মকথাটি ছিল, ‘পরম-কাক্সিক্ষত এ মিলনে হৃদয় অমৃত-রসে ভরে উঠবে, পরিবেশের অন্ধকার কম্পিত হয়ে অদৃশ্য অথচ গভীরতর আলোর বার্তা জানাবে। তাই, তার জাগরণের জন্য কাতর আহ্বান ধ্বনিত হয়ে চলে এ গানটিতে : ‘প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো’। শিল্পীদের কণ্ঠে গানের পরিবেশনার পাশাপাশি গানের আগে পরে এই কাব্যকথন অনুষ্ঠানে সৃষ্টি করে ভিন্ন আবেদন। সম্মেলক কণ্ঠে শিল্পীরা গেয়ে শোনান ‘দুঃখের বরষায় কক্ষের জল এই নামল’, ‘আমরা তারেই জানি তারেই জানি সাথের সাথি’ ও ‘তোমার প্রেমে ধন্য কর যারে সত্য করে পায়’। একক কন্ঠে চঞ্চল বড়াল গেয়ে শোনান ‘মোর হৃদয়ের গোপন বিজন ঘরে’, ফারজানা আক্তার পপি গেয়ে শোনান ‘আমারে তুমি অশেষ করেছ’, নাঈমা ইসলাম নাজ পরিবেশন করেন ‘আমার না বলা বাণীর’, তনিয়া মান্নান গেয়ে শোনান ‘তুমি যে চেয়ে আছ আকাশ ভ’রে’, সুতপা সাহার কণ্ঠে গীত হয় ‘আমার খেলা যখন ছিল তোমার সনে’, পার্থ প্রতীম রায় পরিবেশন করেন ‘অসীম ধন তো আছে তোমার’, আব্দুল ওয়াদুদ গেয়ে শোনান ‘এরে ভিখারি সাজায়ে কী রঙ্গ তুমি করিলে’, সত্যম কুমার দেবনাথের কণ্ঠে গীত হয় ‘লুকিয়ে আস আঁধার রাতে, তুমি আমার বন্ধু’। এছাড়া কবিতাপাঠে অংশ নেন জহিরুল হক খান, আসিফ চৌধুরী, নাফিসা কেয়া ও ইশরাত জাহান। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান। জাপান বাংলা পিস ফাউন্ডেশনের হিরোশিমা দিবস উদ্যাপন ॥ ‘নো মোর হিরোশিমাÑনো মোর নাগাসাকি, এ ট্র্যাজেডি নেভার টু বি রিপিটেড’ স্লোগানে সোমবার উদ্্যাপিত হলো হিরোশিমা দিবস। এদিন বিকেল জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাপান বাংলা পিস ফাউন্ডেশন। হিরোশিমা-নাগাসাকি স্মরণে সচেতনতামূলক পোস্টার, আলোকচিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে সাজানো হয় অনুষ্ঠান। সঙ্গে ছিল আলোচনাসভা। মুন্সীগঞ্জে কবিগুরুর মহাপ্রয়াণ দিবস পালন ॥ স্টাফ রিপোর্টার মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৭তম মহাপ্রয়াণ দিবস পালিত হয়েছে মুন্সীগঞ্জে। সোমবার রাতে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে কবির স্মরণে আলোচনা, আবৃত্তি ও সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘অন্বেষণ বিক্রমপুর’। আয়োজনটির মধ্যমণি জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা চমৎকার আলোচনার পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের ‘অনন্ত প্রেম’ আবৃত্তি করে দর্শক জয় করে নেন। তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করেন বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম। আলোচনা করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মতিউল ইসলাম হিরু। অংশ নেন সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এম এ কাদের মোল্লা। ‘আমি কান পেতে রই...’ গানটি পরিবেশন করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট শাহিন মোঃ আমানুল্লাহ, শিশির রহমান পরিবেশন করেন ‘তোমার খোলা হাওয়া...’। হরিনামির কণ্ঠে ছিল ‘গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙামাটির পথ.., মোরভাবনারে কি হাওয়ায় মাতালঐ..., মায়াবন বিহারিনী হারিনি...’। আলমগীর হোসেন পরিবেশন করেন ‘কতবারও ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া’। চৈতি রায় পরিবেশন করেন ‘পুরনো সেই দিনের কথা সেই কি ভোলা যায়।’ নজরুল ইসলাম পরিবেশন করেন ‘সেই ভাল সেই ভাল আমারে..., এই করেছে সেই মিঠুর হে...’। অহৃদ মীরের কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘ আয় তবে সহচরী হাতে হাতে ধরি ধরি...’। এমন নানা গানের মাঝেই ভেসে আসে যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে...। এই আয়োজনে তবলায় ছিলেন কমল ব্যানার্জী, শরীফ মাহমুদ, লাবীব আঞ্জুম চৌধুরী ও অর্ধেন্দু দাস ছোটন। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অভিজিৎ দাস ববির চমৎকার সঞ্চালনায় শ্রাবণের বৃষ্টি ভেজা রাতে এই আয়োজনটিতে শোকের মাসে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। আলোচনায় আসে বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে মঞ্চে দাঁড়িয়ে কবি গুরুর ‘বঙ্গমাতা’ কবিতার পঙ্ক্তি“‘সাত কোটি সন্তানের, হে মুগ্ধ জননী/ রেখেছ বাঙালি করে, মানুষ করনি।’ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- কবি গুরু তুমি বেঁচে থাকলে দেখতে পারতে তোমার এই কথা ভুল, বাঙালী মানুষ হয়েছে। অন্বেষণ বিক্রমপুরের সভাপতি মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বলের সভাপতিত্বে এতে আরও অংশ নেন মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি মোঃ আলমগীর হোসেন, ওসি (তদন্ত) ওসি গাজী মোঃ সালাউদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা বৃক্ষপ্রেমী আমির হোসেন মুন্সী, হিরণ কিরণ থিয়েটারের সভাপতি নাট্যকার জাহাঙ্গীর আলম ঢালী, মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহসভাপতি বাছিরউদ্দিন জুয়েল, মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ও অনিয়মিত সাহিত্য সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সভাপতি এ্যাডভোকেট সুজন হায়দার জনি, সেতুবন্ধন শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি এ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম বাবু, সঙ্গীত শিল্পী আক্তারুজ্জামান আবুল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসাইন জাকির, সাংবাদিক সাইফুর রহমান টিটু, অভিনেতা সুমন শেখ, কবি শামসুল হুদা হিটু,আগমনি সাহিত্য পাঠ্যাভ্যাসের সংগঠক রাজ মল্লিক ও অভিনেত্রী শুভ্র সুমি প্রমুখ।
×