ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পাল্টে গেছে বিআরটিএর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের চিত্র

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৭ আগস্ট ২০১৮

পাল্টে গেছে বিআরটিএর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের চিত্র

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ঢাকা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের চিত্র একেবারেই পাল্টে গেছে। যা বিগত কয়েক বছরেও লক্ষ্য করা যায়নি। সেখানে এখন গাড়িচালকদের লাইসেন্স সংগ্রহের ভিড়। ভোর থেকেই লাইসেন্সের জন্য দীর্ঘ লাইন। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ কিংবা বিআরটিএ মোবাইল কোর্ট লাইসেন্সবিহীন চালকের তেমন একটা খোঁজ না পেলেও মিরপুরের বিআরটিএ লাইসেন্স শাখার চিত্র বলে দেয় রাজধানী শহরে কি পরিমাণ লাইসেন্সবিহীন চালক রয়েছে। লাইসেন্স নেয়ার ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিদের। আবার দালালদের মাধ্যমে লাইসেন্স নেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন প্রতিদিনের চেয়ে লাইসেন্স নেয়ার ভিড় অন্তত ৫/৭গুণ। এখানেই শেষ নয় গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষার জন্যও দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। অনেকেইে নিজ তাগিদে গাড়ি নিয়ে এসে ফিটনেস সার্টিফিকেট নিয়ে যাচ্ছেন। প্রাইভেটকার চালকদের অনেকেই জানালেন, স্বেচ্ছায় লাইসেন্স করাতে আসছেন। রাস্তায় সন্তানসম আন্দোলনকারীদের লাইসেন্স দেখাতে না পারলে এর থেকে লজ্জার কিছুই নেই। আমার মতো অনেকেই নিজে থেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স করাতে আসছেন বলে জানান তিনি। সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গাড়ির ফিটনেস ঠিক করতে উদ্যোগী হওয়া বাস মালিকরা সরকারের কাছে এক মাস সময় চেয়েছেন। সোমবার বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের গাবতলীর কার্যালয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে শ্যামলী পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার আলমগীর কবির এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেসব বাসের ফিটনেস সমস্যা আছে সেগুলোর ফিটনেসসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করতে সমিতির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে এক মাস সময় চাওয়া হবে। গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর টানা আট দিন রাজধানী অচল করে বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনের মধ্যে রাজপথে পুলিশের ভূমিকায় নেমে তারা চালকদের লাইসেন্স ও যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষা করে। কোন চালক বৈধ কাগজ দেখাতে না পারলে শিক্ষার্থীরা তাকে পুলিশে সোপর্দ করে মামলা নিতে বাধ্য করে। ছাত্রছাত্রীদের নয় দফা দাবির মধ্যে একটি দাবি ছিল রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালনা বন্ধ করা। শিক্ষার্থীদের এই দাবির মুখে সরকারের তরফ, থেকে বলা হয়, লাইসেন্স বা ফিটনেস সনদ ছাড়া গাড়ি চালানো এমনিতেই দণ্ডনীয় অপরাধ। তারপরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরুর পর ঢাকার সড়কে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের ধরতে বিআরটিএকে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। পাশাপাশি শুরু করা হয় ট্রাফিক সপ্তাহ। শ্যামলী পরিবহনের আলমগীর কবির জানান, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে আবারও ঈদ-উল আজহার অগ্রিম বাস টিকেট বিক্রি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। এছাড়া দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে সাবধানে বাস চালানোর জন্য চালকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এ সব রাস্তায় বাসের গতিবেগ কোন অবস্থায় ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের বেশি হতে পারবে না। বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সোহাগ পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক তালুকদার সোহেল, সাধারণ সম্পাদক হানিফ পরিবহনের মালিক কফিল উদ্দিনসহ সমিতির নেতারা সোমবারের এই সভায় উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বিআরটিএ সচিব শওকত আলী জানান, বিআরটিএ কার্যালয়ে এখন লাইসেন্স প্রত্যাশী মানুষের ভিড় অনেক বেশি। সবাই নিজেদের লাইসেন্স বৈধ করে নেয়ার চেষ্টা করছেন। এটা খুবই ইতিবাচক দিন। আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে প্রয়োজনীয় সেবা দেয়ার। তাছাড়া গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করার জন্যও চাপ বেড়েছে। স্বেচ্ছায় অনেকেই এসে ফিটনেস সার্টিফিকেট নিয়ে যাচ্ছেন।
×