ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্র আন্দোলন ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে একটি বিশেষ গোষ্ঠী

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৫ আগস্ট ২০১৮

ছাত্র আন্দোলন ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে একটি বিশেষ গোষ্ঠী

গাফফার খান চৌধুরী ॥ বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার মধ্য দিয়েও ঢাকার মতো দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। তারা আন্দোলনকারীদের সাধুবাদ জানিয়ে যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজপথে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে একটি গোষ্ঠী। এ জন্য স্কুল ও কলেজ ড্রেস বানাচ্ছে গোষ্ঠীটি। তাদের লোকজনকে এ সব ড্রেস পরিয়ে আন্দোলনকারীদের ভেতরে ঢুকিয়ে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এদিকে গত ছয় দিন রাজধানীতে বিক্ষোভকারীদের গলায় পরিচয়পত্র ও পরনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোশাক দেখা গেলেও শনিবার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশের গলায় পরিচয়পত্র দেখা যায়নি। তাদের বয়স ও পোশাক পরিচ্ছদের সঙ্গে বিক্ষোভকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের মিল ছিল না। তাদের পরনে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোশাকও দেখা যায়নি। বিক্ষোভকারীদের অনেকেরই দাবি, তারা ‘বহিরাগত’। বহিরাগতরাও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাস্তায় নেমে যানবাহনের ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করেছে। শনিবার আন্দোলনকারীদের মধ্যে বাড়তি উত্তেজনা লক্ষ্য করা গেছে। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই সমাজের নানা শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করেছে। কাউকে কাউকে লেন মেনে না চলায়, ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় গাড়ির চাবি নিয়ে অহেতুক দাঁড় করিয়ে রেখেছে। অনেককে অপমান অপদস্ত করেছে। বার বার লাইসেন্স দেখতে চাওয়ায় ও থামানোর কারণে অনেকেই নির্ধারিত সময়ে অফিসে যেতে পারেননি। জরুরী কাজে মারাত্মক বিঘœ ঘটেছে। ভুক্তভোগীদের অনেকেই বিরক্তি ও চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। টানা আন্দোলনে কার্যত ঢাকা ছিল অচল। মানুষের দুর্ভোগ ছিল চরমে। বিক্ষোভের কারণে সারাদেশের সঙ্গে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ঢাকায় যৎসামান্য কিছু মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিক্সা ও রিক্সা চলেছে। রাস্তায় জটলা থাকায় জরুরী সেবায় নিয়োজিত যানবাহনের চলাচলও বিঘিœত হয়েছে। বিক্ষোভে কার্যত অচল ছিল ঢাকার জীবনযাত্রা ॥ গত ২৯ জুলাই রবিবার দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীবাহী জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পর থেকেই বিক্ষোভে অনেকটাই অচল হয়ে পড়েছে গোটা দেশ। শনিবারও এর ব্যতিক্রম ছিল না। শনিবার সকাল দশটায় শ্যামলী ইবনে সিনা মেডিক্যাল কলেজের সামনে দেখা যায় দীর্ঘ যানজট। সেখানে রাস্তায় অবস্থান নিয়েছিল ২০/২৫ খুদে শিক্ষার্থী। তাদের একজনের বয়স ১২/১৩ হবে। তাকে দেখা যায়, রাস্তার মাঝখানে একটি পোস্টার হাতে দাঁড়িয়ে আছে। আশপাশে আর কোন ছাত্রছাত্রী নেই। শত শত গাড়ি হর্ন দিচ্ছে। কিন্তু কোন কিছুতেই সে সরছে না। এতে রাস্তায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই কিশোরের সাহসিকতাকে সাধুবাদ জানিয়েছে। আবার অনেকেই কিশোরটির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, যেভাবে কিশোরটি রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে, যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটা বিচিত্র নয়। কিশোরটিকে অনেকেই নিরাপদ জায়গায় সরে গিয়ে প্রতিবাদ জানানোর কথা বললেও তা আমলে নেয় না। পাশেই ইবনে সিনা হাসপাতালের পাশে কালভার্টের ওপর দুই ব্যক্তিকে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের বয়স আর ছাত্রের পর্যায়ে নেই। কিশোরটিকে যখন বার বার জনতা সরে যেতে বলছিল, তখন কিশোর ওই দুই ব্যক্তির দিকে তাকাচ্ছিল। ওই দুই ব্যক্তি কিশোরটিকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে ইশারা করছিল। বিষয়টি বুঝতে পেরে কয়েক জন সাধারণ মানুষ ওই দুই ব্যক্তির দিকে জোরে হাঁটা শুরু করলে তারা তৎক্ষণাৎ সেখান থেকে কেটে পড়ে। কালভার্ট থেকে ৫০ গজ সামনে শিক্ষার্থীরা গাড়ির লাইসেন্স পরীক্ষা করছিল। তাদের মতো অনেকেই গাড়ির কাগজপত্র চেক করছিল। তাদের দেখে ছাত্র বলে মনে হচ্ছে না বলে অনেকেই সন্দেহ পোষণ করেন। তাদের গলায় কোন পরিচয়পত্র বা কোন স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্রও দেখা যায়নি। গত কয়েক দিনের তুলনায় শনিবার বিক্ষোভকারীদের অনেকের মধ্যেই মারমুখী ভাব লক্ষ্য করা গেছে। তাদের অনেকেই বয়স্কদের পর্যন্ত নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, তারা বহিরাগত। তারা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করছেন। কাউকে হয়রানি করছে না। যারা করছে, তারা হয়তো পরিকল্পিতভাবে তাদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এমন ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা বহিরাগত। কোন শিক্ষার্থী এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে না বলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দাবি করেছে। বেলা এগারোটার দিকে বিজয় সরণি মোড়েও অনেককেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করতে দেখা গেছে। তাদের অনেকের গলায়ই পরিচয়পত্র দেখা যায়নি। আবার অনেককেই ফুটপাথে দাঁড়িয়ে আন্দোলনকারীদের সমর্থন দিতে দেখা গেছে। তাদেরও ছাত্রের মতো মনে হয়নি। তাদের বয়স বা পোশাক পরিচ্ছদ কোনটিরই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিল ছিল না। অনেক জায়গায় পুলিশ তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। পুলিশ যাওয়ার আগেই তারা সেখান থেকে চলে গেছে। তবে ফার্মগেটে প্রচুর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী দেখা গেছে। তাদের পরনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোশাক ও গলায় পরিচয়পত্র ঝোলানো ছিল। তারা যথারীতি লাইসেন্স পরীক্ষা করলেও কেউ তাতে আপত্তি করেনি। তবে অনেকেই বার বার ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখানোর কারণে রীতিমত বিরক্তি ও অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন। দুপুর আড়াইটার দিকে বেইলী রোডে অফিসার্স ক্লাবের সামনে অবস্থান করছিল ২৫ থেকে ৩০ শিক্ষার্থী। সেখানেও পরিচয়পত্রহীন লোকজনের আনাগোনা ছিল। তবে তাদের অধিকাংশই রাস্তার কাছে দাঁড়িয়ে ছিল। দু’চার জনকে রাস্তায় নেমে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করতে দেখা গেছে। তাদের গলায় কোন পরিচয়পত্র বা পরনে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পোশাক দেখা যায়নি। তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করে ভিন্ন উত্তর পাওয়া গেছে। তারা বলছিল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেহেতু বন্ধ এজন্য তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ড্রেস পরে আসেনি। আবার অনেকেই নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দিলেও পরিচয়পত্র দেখায়নি। উল্টো ‘মারমুখী’ অবস্থান নিয়েছে। দেখা যায়, আন্দোলনকারীদের অনেকেই মোটরসাইকেল থামার নির্দেশ দিচ্ছিল, থামতে দেরি হলেই তারা মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছিল। সেক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখার প্রয়োজন মনে করেনি। পঞ্চাশ বছর বয়সী এক মোটরসাইকেল আরোহীকে কয়েক শিক্ষার্থী থামার জন্য নির্দেশ দেয়। থামার পর তার ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখতে চায় শিক্ষার্থীরা। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই ব্যক্তি বলেন, কাওরানবাজার থেকে এ পর্যন্ত ২৫ বার ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখিয়েছি। আর কতজনকে দেখাব। সারারাস্তা যদি শুধু ড্রাইভিং লাইসেন্সই দেখাতে হয়, তাহলে গন্তব্যে যাব কিভাবে। প্রতি দশ গজ পর পর যদি লাইসেন্স দেখাতে হয়, তাহলে আর কাজ করতে হবে না। একজন দেখার পর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকজন দেখে। হয় একজন আরেকজনকে বিশ্বাস করতে পারছে না, নতুবা অহেতুক মানুষকে হয়রানি করার জন্য এমন করা হচ্ছে। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলছিলেন, বার বার দেখানোর চেয়ে তোমরা একটি বিশেষ টোকেন দিয়ে দাও, যাতে সেই টোকেন গাড়ির সামনে লাগিয়ে রাখলে বোঝা যায়, গাড়ির কাগজপত্র ঠিক আছে। তাছাড়া তো আর কোন উপায় দেখছি না। পুরো ঢাকা জুড়েই এমন পরিস্থিতি। বিকেল পাঁচটায় শাহবাগ থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে শনিবারের মতো আন্দোলন স্থগিত করে চলে গেছে। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলে, ছাত্র আন্দোলনে পুলিশী হামলা বারবার চলতে থাকলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করবে তারা। আন্দোলনে গাড়িসহ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন দুই বিদেশী নাগরিক ॥ শনিবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে শাহবাগ পার হওয়ার সময় দুই জন সুইডেনের নাগরিককে বহনকারী একটি গাড়ি আটকে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে গাড়িসহ দুই বিদেশীকে উদ্ধার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। তাদের কাছে ডাইভিং লাইসেন্স বা গাড়ির কাগজপত্র ছিল না। পরে তাদের নিরাপদে সুইডেন দূতাবাসে পৌঁছে দেয়া হয়। শাহবাগ থানার গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে মামলা করাল ছাত্ররা ॥ রাজধানীর বাংলামোটরে শাহবাগ থানার একটি গাড়ি থামতে বলে শিক্ষার্থীরা। তারা চালকের কাছে লাইসেন্স দেখতে চায়। চালক জানায়, তার কাছে এই মুহূর্তে লাইসেন্স নেই। পরে তার বিরুদ্ধে ছাত্ররা সার্জেন্টকে দিয়ে মামলা করায়। আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরাতে রাজপথে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে ছাত্রলীগ ॥ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে ছাত্রলীগ। তারা শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরাতে মাঠে নেমেছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বাসায় পাঠানোর চেষ্টা করছেন তারা। অনেকেই তাদের অনুরোধে আন্দোলন ছেড়ে চলে গেছে। এতে ধীরে ধীরে রাজধানীর ফার্মগেট ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের ভেতরে ঢুকে কেউ যাতে অরাজক বা অস্থিতিশীল কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে, এ জন্য সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। শনিবার সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে শাহবাগে যান সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন। তারা শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির সঙ্গে সহমত জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও সরকার এই দাবিগুলো পূরণে কাজ করছেন। সঞ্জিত বলেন, প্রধানমন্ত্রী তোমাদের সব দাবি মেনে নিয়েছেন। তোমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নে সরকার কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের এখন ক্লাসরুমে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন সরকার সমর্থক সংগঠনটির এই দুই নেতা। চকোলেটের বিনিময়ে শিক্ষার্থীরা চিপস তুলে দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের হাতে। এ সময় মিরপুর ও জিগাতলা এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের নাম উঠে আসায় ক্ষোভ জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তখন সঞ্জিত বলেন, আমরা বললাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্রলীগকর্মী যদি আপনাদের ওপর কোন আঘাত হানে, তবে আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে দেখিয়ে দেব। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের কেউ যেন হামলা না চালায়, সেই নির্দেশনা দিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রতি আহ্বান জানান সঞ্জিত। দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই নেতা। ফার্মগেট এলাকায় ঢাকা কলেজ ও বিজ্ঞান কলেজ শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে অবস্থান কর্মসূচী শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মাঠে নামে। বুঝিয়ে-সুজিয়ে আন্দোলনকারীদের রাজপথ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন তারা। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ভাষ্য, সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছে। তারা জাতিকে শিক্ষা দিয়েছে। তাদের আন্দোলন সফল, আমরা সকলে এ আন্দোলনকে সমর্থন করি। অনেক হয়েছে, এবার বাড়ি ফিরে যাও। তেজগাঁও পলিটেকনিক্যাল কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি কাজী খলিকুর রহমান বলেন, দলের নির্দেশে আমরা সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের অবস্থান নেয়া প্রধান সড়কগুলো মনিটরিং করছি। আমরা তাদের বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি। সরকার তাদের আন্দোলন মেনে নিয়েছে- আমরা সেটি বুঝিয়ে বলছি। আমাদের কথা শুনে শিক্ষার্থীদের অনেকেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ফার্মগেট এলাকায় আমাদের প্রায় ৫০ নেতাকর্মী রয়েছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি। আমরা সকলে মিলে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচী বাতিল করে তাদের সড়ক থেকে সরে যাওয়ার জন্য বলছি। কেউ বুঝতে না চাইলে তাকে ভাল করে বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যাতে আর সড়ক অবরোধ করতে না পারে সেটিও তারা নজরদারি করবেন বলেও জানান ছাত্রলীগের এই নেতা।
×