ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কেরানীগঞ্জে ভাগনার খাল দখল করে স্থাপনা

প্রকাশিত: ০৭:০১, ৪ আগস্ট ২০১৮

 কেরানীগঞ্জে ভাগনার খাল  দখল করে স্থাপনা

সালাউদ্দিন মিয়া, কেরানীগঞ্জ ॥ দূষণ ও দখলের শিকার বুড়িগঙ্গার খাল ও শাখা খালগুলো। বুড়িগঙ্গা নদী দখলের পাশাপাশি এর শাখা খালগুলো ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা। ফলে অনেক খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এসব এলাকার কিছু খাল সম্পূর্ণ ভরাট করে ফেলেছে ভূমিদস্যুরা। আবার কিছু খাল অর্ধেক ভরাট করে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। বাকি খালগুলো ধীরে ধীরে দখলের পায়তারা চলছে। বুড়িগঙ্গার এসব খাল বেশিরভাগই বয়ে গেছে কেরানীগঞ্জের ভেতর দিয়ে। সর্বত্র ভরাটের ফলে কেরানীগঞ্জ মারাত্মক পরিবেশ দূষণের কবলে পড়ছে। খালগুলো এমনভাবে ভরাট করা হয়েছে, বর্ষায় এসব খালের পানি উপচে পড়ে। আবার সামান্য বৃষ্টি হলেই দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা থেকে পরিবেশ দূষণের শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। নদ-নদীর নাব্য রক্ষা ও গতিপ্রবাহ স্বাভাবিক রেখে দখল-দূষণ রোধ ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এ উপলক্ষে শুভাঢ্যার খাল খনন ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছে। আলোচিত বিষয়ের মধ্যে আছে, খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ, দূষণরোধ, সৌন্দর্য বর্ধন ও সীমানা চিহ্নিতকরণ। যেহেতু খালের সীমানা চিহ্নিতকরণের কাজ শেষ হয়নি। তাই প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। এছাড়া প্রাথমিক তালিকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানোর পর যেসব এলাকায় পুনরায় দখল করা হয়েছে সেগুলো উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরপর থেকে সীমানা চিহ্নিত করার পর থেকে চালানো হবে চূড়ান্ত উচ্ছেদ অভিযান। বুড়িগঙ্গার কেরানীগঞ্জের মধ্যে মুনবেপারির ঢাল, নজরগঞ্জ, নেকরোজবাগ, রুহিতপুর, হযরতপুর, পানগাঁও, বেয়ারা, পারগেন্ডারিয়া, মৌলভীর পুকুর, গোলামবাজার, চ-িতলা, ভাগনা ও কুমলিসহ উপজেলার সব শাখা খালই দখল ও দূষণের শিকার। সরজমিন ঘুরে দেখলে মনে হয় ভাগনার খালটি নিশ্চিহ্ন প্রায়, খালটি দেখে বোঝার উপায় নেই এখানে এক সময় খাল ছিল। এক সময় এই খালে অবাধে বিচরণ করত পালতোলা নৌকা, ছিল মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এবং কৃষি জমিতে পানি সেচের প্রধান উপায়। ভাগনার খালটির উৎপত্তিস্থল বুড়িগঙ্গা নদীর জিনজিরা ফেরিঘাট হয়ে নজরগঞ্জ, চড়াইল হয়ে কুশিয়ারবাগ খালের সঙ্গে মিলিত হয়ে বিল কাঠুরিয়া হয়ে শুভাঢ্যার খালের সঙ্গে মিলিত হয়ে ধলেশ্বরী নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। অথচ বর্তমানে ভূমিদস্যুদের দখলের কারণে ভাগনার খালে তার কিছুই চোখে পড়ে না। ভূমির অবকাঠামোর পরিবর্তন করা বেআইনী হলেও ভূমিদস্যুরা সেদিকে তোয়াক্কা না করে দিন-রাত মাটি ভরাটের কাজ করে যাচ্ছে ভাগনা খালসহ উপজেলার সব খালে। অবৈধ দখল আর দূষণের ফলে ভাগনা খালটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। তিন দশকে ভাগনা খাল দখল করে শতাধিক ভবন ও মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে অথচ প্রশাসনের কোন নজরদারিই নেই। জানা গেছে নদী ভরাট ও খাল দখলে জড়িত আছে উপজেলা ভূমি ও রাজস¦ বিভাগের এক শ্রেণীর কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী । ভুয়া ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে আবার কেউ রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে দখল করে নিচ্ছে খালের জায়গা।
×