ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের নিচে প্রতিনিয়ত যানজট

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ৪ আগস্ট ২০১৮

মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের নিচে প্রতিনিয়ত যানজট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর মৌচাক-মগবাজার-বাংলামোটর সড়কের যানজট নিরসনের ওপর তৈরি করা ফ্লাইওভার। উদ্দেশ্য এ ব্যস্ত সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক করা। ওপর ও নিচ দিয়ে যান চলাচল করলে যানজট নিরসন হবে। ব্যস্ত রাস্তাটির যানজট অনেকটা কমিয়ে এনেছে ফ্লাইওভার। ফ্লাইওভারের সুফলও মানুষ ভোগ করছে। কিন্তু এ ফ্লাইওভার নির্মাণের পরও উদ্দেশ্য পুরোপুরি সফল হয়নি। সরেজমিনে গিয়ে এর কারণ অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তার চেহারা একেবারেই ভিন্ন। ফ্লাইওভারের নিচের বিকল্প রাস্তায় অবৈধ পার্কিং, চলছে গাড়ির ওয়ার্কশপের কাজ, বসছে ভ্রাম্যমাণ কাঁচাবাজার। ফলে ফ্লাইওভারের ওপরে সুফল পাওয়া গেলেও নিচের বিকল্প সড়কের অবস্থা পূর্বের চেয়েও ভয়ঙ্কর। নিচের রাস্তা দখল হওয়ায়, প্রতিনিয়তই যানজট লেগে রয়েছে সেখানে। আর ফ্লাইওভারের নিচের এই দখলদারিত্ব দেখার যেন নেই কোনও কর্তৃপক্ষ। বাংলামোটরের ফ্লাইওভারের নিচে চলছে গাড়ির ওয়ার্কশপের কাজ। রাস্তার ওপর দাঁড় করিয়ে চলছে গাড়ি মেরামতের কর্মযজ্ঞ। ফলে সরু হয়ে আছে ফ্লাইওভারের নিচের এই বিকল্প সড়কটি। তাই অন্য কারণ ছাড়াই মগবাজার থেকে বাংলামোটরগামী গণপরিবহণ ও অন্যান্য যানবাহনকে পড়তে হচ্ছে দীর্ঘ যানজটে। হামিম ওয়ার্কশপের মালিক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এত বড় রাস্তা মানুষ তো ব্যবহার করে না। আর ফ্লাইওভারের নিচের যে জায়গায় রেলিং দেয়া নাই, আমরা সে জায়গাটা ব্যবহার করি। এখানে যানবাহন চলাচল করে না। তাই আমরা ওয়ার্কশপের কাজে ব্যবহার করি। কথা হয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সম্পদ বিভাগের প্রধান আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা প্রায়ই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করি। এমনকি জরিমানাও করা হয়। আমাদের উচ্ছেদ অভিযান চালানোর কিছুদিন পর জায়গাগুলো পরিষ্কার থাকে। আবার সেগুলো দখল হয়ে যায়। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। এদিকে বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানও তাদের অফিসের গাড়িও ফ্লাইওভারের নিচে পার্কিং করে রাখতে দেখা গেছে। রয়েছে পুলিশের ভ্যানও। দিলু রোডের বাসিন্দা মোজাফর হোসেন বলেন, সকালবেলা ফ্লাইওভারের নিচে বাজার বসে। হেন কোনও জিনিস নাই যেটা এখানে পাওয়া যায় না। এত ভ্যান থাকে যে রিক্সা গাড়ি মিলে যানজট তৈরি হয়। সকাল বেলা বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া খুব অসুবিধা হয়। আফজাল হোসেন একজন ডায়াবেটিস রোগী। তিনি প্রতিদিন সকালবেলা ফাঁকা রাস্তায় হাটার জন্য বেছে নিয়েছেন মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারের রাস্তাটি। ফ্লাইওভার হওয়ার পর কিছুদিন রাস্তাটা ফাঁকা ছিল। কিন্তু ফ্লাইওভার হবার ছয়মাসের মধ্যে রাস্তায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের দখলে চলে যায়। সকালবেলা এখানে বাজার বসে। রাতের বেলা রাস্তায় রিক্সাওয়ালা তাদের রিক্সা রেখে যায়। এখন রাস্তায় হাটার কোনও পরিবেশ নেই। সাধারণ মানুষের রাস্তায় চলতে খুব অসুবিধা হয়। শহরে উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু এগুলো যে অপব্যবহার হচ্ছে তা দেখার কেউ নেই। মগবাজারের এক বাসিন্দা তিনি প্রতিদিন সকালে তার বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে যান। তিনি বলেন, রাস্তায় এত জ্যাম থাকে, হাটার কোনও পরিবেশ থাকে না। রাস্তা অন্যের দখলে চলে যাওয়ায়, রাস্তার প্রস্থতা কমে গেছে।
×