ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভেড়া পালন করে রেহানা এখন স্বাবলম্বী

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ৪ আগস্ট ২০১৮

 ভেড়া পালন করে রেহানা এখন স্বাবলম্বী

সদর উপজেলার সুগারমিল কলোনি এলাকার উত্তর হরি-হরপুর গ্রামে গেলেই প্রতিনিয়ত চোখে পড়বে একটি দৃশ্য ‘ফাঁকা একটি মাঠে কিছু ভেড়াকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে পরম আনন্দে খেলা করছেন মৃত হবিবর রহমানের স্ত্রী রেহানা বেগম (৫৫)।’ রেহানা বেগম বলেন, ‘আমি আমার সন্তানের মতো এই ভেড়াগুলোকে ভালোবাসী। বিক্রি করার প্রশ্নই ওঠে না।’ দীর্ঘদিন আগেই মারা গেছেন রেহানা বেগমের স্বামী হবিবর রহমান। জীবিত থাকা অবস্থায় তার স্বামী কলা বিক্রি করে সংসার চালাতেন। মাঝে মাঝে চালাতেন রিকশা। এভাবেই কোন রকমে কেটে যেত তাদের দিন। এরপর হঠাৎ স্বামীর মৃত্যুতে তাদের সংসারে নেমে আসে কালো মেঘ। তিন সন্তানকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন রেহানা। ওই সময় থাকার জায়গা তো দূরের কথা খাওয়াই তাদের জুটত না। তখন এলাকাবাসীর সহযোগিতায় উত্তর হরি-হরপুর গ্রামে একটি জায়গায় তাদের থাকতে দেওয়া হয়। এরপর স্থানীয়দের সাহায্যে কষ্টের মধ্যে কোন রকমে কেটে যায় তার সংসার। এক পর্যায়ে বড় ছেলে বাহাদুরের বিয়ে দেন। তিন সন্তানদের মধ্যে বর্তমানে কেউ কাজ করেন হোটেলে, কেউবা রিকশা চালায়, কেউবা তবে অভাবের সংসারে এক সময় রেহানাকে ছেড়ে তিন সন্তানই চলে যায়। নিঃস্ব জীবনে তার সঙ্গী হয় বড় ছেলের কিনে দেয়া দুটি ভেড়া। এরপর আন্তে আন্তে এই ভেড়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৩০টি ভেড়া আছে রেহানার। অভাবের সংসারে কিভাবে ভেড়াগুলোর দেখাশোনা করেন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেখানে মানুষের দেয়া খাবারের ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছি সেখানে সঠিকভাবে ভেড়াগুলোর যতœ নিব কিভাবে? বাসার সামনে মাঠ আছে। সকালবেলা ঘর থেকে বেরিয়ে যায় ভেড়াগুলো। সারাদিন ওই মাঠ আর আশপাশের সড়কে ঘুরে ফিরেই ভেড়াগুলোর বেলা কেটে যায়। সন্ধ্যা হলেই বাড়ি ফিরে আসে ওরা। এরপর আর কি খেতে দেবো ? আমি নিজেইতো পেট ভরে একবেলা খেতে পারি না।’ স্থানীয় বাসিন্দা জাহানা জুই বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই দেখে আসছি এই রেহানা বেগমকে। -এস, এম জসিম উদ্দিন, ঠাকুরগাঁও থেকে
×