ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ওপর ভর করছে বিএনপি ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৩ আগস্ট ২০১৮

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ওপর ভর করছে বিএনপি ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন করার মতো শক্তি, সাহস ও সক্ষমতা নেই। এ জন্যই তারা কোটা আন্দোলনকারী ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ওপর ভর করছে। বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ের নিজ কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের (বিএনপি) এখন আর কোন উপায় নেই। তাই তারা এখন কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করবে, ছাত্রদের আন্দোলনের ওপর ভর করবে, এটাই স্বাভাবিক। ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তীব্রতা কমে এসেছে। বিআরটিসির গাড়ি রাস্তায় চলছে। এরপরও রাস্তায় গাড়ি কম। পরিবহন মালিক ও নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। গাড়ির ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় তারা গাড়ি বের করছেন না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। মানুষের যাতে ভোগান্তি না হয়, সে ব্যাপারে মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, তাদের সব দাবি প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে রয়েছে। এ আইন হলে সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজটের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। এ আইনে পথচারীদের জন্যও বিধান থাকবে। তিনি বলেন, আমি আশা করি, আইনটি জনস্বার্থে ক্যাবিনেটে অনুমোদিত হবে এবং তারপর তা সংসদেও পাস হবে। আইনটির বাস্তবায়ন সম্পর্কে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রয়োগের জন্যই আইনটি প্রণয়ন করা হচ্ছে। প্রয়োগ না হলে আইন করে লাভ নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইন হলে বাস্তবায়ন করার লিগ্যাল বাইন্ডিং থাকে। আইনের দরকার রয়েছে। আইন সমস্যা সমাধানে শক্তি জোগায়। ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা সম্পর্কে সেতুমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে আমাদের কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা মাঝেমধ্যে আলোচনায় বসি। কারণ ইন্ডিয়ান লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় অনেক রোড প্রজেক্ট রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এলওসির আওতায় কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও আখাউড়া এবং ভারতের আগরতলা পর্যন্ত ফোর লেন প্রকল্পের গ্রাউন্ড ব্রেকিং শুরু করতে যাচ্ছি। ২৯ আগস্ট থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এ নিয়ে আমরা কথা বলেছি। ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতীয় হাইকমিশনার সে দেশে আগামী ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় গ্লোবাল সামিটের একটি চিঠি আমাকে দিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই সামিটের উদ্বোধন করবেন। সেতুমন্ত্রী বলেন, ভারতের অসম রাজ্যে নাগরিকত্ব নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি সম্পর্কে হাইকমিশনার বলেছেন যে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কাউকে এই মুহূর্তে ডিপোর্ট করা হবে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা যানবাহন থামিয়ে যেভাবে লাইসেন্স দেখতে চাইছে বা সড়কে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে কাজ করছে- তা নতুন কিছু নয় এবং বাংলাদেশে তিনিই প্রথম এটা শুরু করেছিলেন। তিনি বলেন, আমি মন্ত্রী কি চেকিং করিনি আপনাদের (সাংবাদিক) নিয়ে, এটা কি কোন্ দেশে করে? মন্ত্রী বলেন, আমি তো অলওয়েজ রাস্তায় ছিলাম। আমি অলওয়েজ এ কাজগুলো করেছি। এটা তো নতুন তারা দেখাচ্ছে এমন তো নয়। এটা দেখিয়েছি বাংলাদেশে আমি। আমি রাস্তায় গিয়ে এসব চেকিং শুরু করেছি। রাস্তায় বেপরোয়া চালনা ও প্রতিযোগিতার মতো ঘটনার পাশাপাশি পথচারীদের পথ চলার নিয়মও প্রস্তাবিত আইনে আছে বলে তথ্য দেন মন্ত্রী। অসমে ৪০ লাখ মানুষের জাতীয় নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়ার বিষয় হাইকমিশনারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল জানিয়ে কাদের বলেন, হাইকমিশনার বলেছেন এটা আদালতের আদেশে করা হয়েছে। বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আপীল করার সুযোগ আছে। কোন লোককে দেশত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে না। অসমের তালিকা নিয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার কারণ নেই ॥ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অসমে রাজ্য সরকারের প্রকাশিত ‘জাতীয় নাগরিক পঞ্জীকরণ’ বা ‘নাগরিক’ তালিকার চূড়ান্ত খসড়া থেকে ৪০ লাখ বাসিন্দার নাম বাদ পড়া নিয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। এ বিষয়ে ঢাকাকে আশ্বস্ত করেছেন ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিনি এ আশ্বাস দেন। সাক্ষাতের পর বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, অসমের প্রকাশিত নাগরিক তালিকা নিয়ে বাংলাদেশের কোন দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ পড়েছে তাদেরও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এই নাগরিক তালিকা ভারতের সুপ্রীমকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী করা হয়েছে। এটা রাজনৈতিক কোন সিদ্ধান্তের বিষয় নয়। এই তালিকা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কোন ধরনের প্রভাব পড়বে না জানিয়ে হাইকমিশনার বলেন, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে আতঙ্কেরও কোন কারণ নেই। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা আগামী দিনগুলোতে সেভাবেই এগিয়ে যেতে চাই।
×