ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রোনাল্ডো-মেসি ছাড়া অসহায় রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৭:১৮, ২ আগস্ট ২০১৮

রোনাল্ডো-মেসি ছাড়া অসহায় রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সিলোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও লিওনেল মেসিকে ছাড়া রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সিলোনা কতটা অসহায় সে প্রমাণ আরেকবার মিলল। যুক্তরাষ্ট্রে চলমান প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতির ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন্স কাপে হেরেছে দুই স্প্যানিশ পরাশক্তিই। বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে রিয়াল। বিশ্বকাপের পরপরই মাদ্রিদ ছেড়ে জুভেন্টাসে পাড়ি জমিয়েছেন রোনাল্ডো। যে কারণে তাকে ছাড়াই খেলতে হবে গ্যালাক্টিকোদের। কাজটা যে সহজ হবে না সেই আলামতই মিলতে শুরু করেছে। অন্যদিকে মেসিসহ তারকা ফুটবলারদের বিশ্রাম দিয়ে মার্কিন মুল্লুকে গেছে বার্সা। সেখানে দুইবার এগিয়ে যেয়েও ইতালিয়ান ক্লাব এ এস রোমার কাছে ৪-২ গোলে হেরেছে কাতালানরা। হারলেও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে অভিষেকে আলো ছড়িয়েছেন তরুণ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়াস জুনিয়র। কিন্তু এক গোল করে আর আরেক গোলে অবদান রেখে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন আলেক্সি সানচেজ। চিলির এই ফরোয়ার্ডের নৈপুণ্যে স্পেনের সফলতম দলটিকে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ক্লাব ছাড়ার পর রোনাল্ডোকে প্রথম পরীক্ষায় মাঠে নেমেছিল রিয়াল। সেই পরীক্ষায় ফেল করেছে নতুন কোচ জুলেন লোপেটেগুইয়ের দল। মার্কিন সফরে নিজের ফর্মটা ভালোই ধরে রেখেছেন সানচেজ। ট্যুরে নিজের দ্বিতীয় গোল পেয়েছেন চিলিয়ান তারকা। বার্সিলোনার সাবেক তারকার সঙ্গে রেড ডেভিলদের হয়ে গোল করেছেন আন্দ্রে হিয়েরা। আর রিয়ালের হয়ে একটি গোল শোধ করেন করিম বেঞ্জামা। ম্যাচে প্রায় পূর্ণশক্তির দল নিয়েই মাঠে নেমেছিল রিয়াল। বেল-বেঞ্জামার সঙ্গে দলে ছিলেন নিউ রিক্রুট ভিনিসিয়াস জুনিয়রও। আগের দুই ম্যাচে বাজেভাবে হারার পর রিয়ালের বিপক্ষে জয় দিয়ে মার্কিন সফর শেষ করেছে জোশে মরিনহোর ম্যানইউ। এই সফরের প্রথম ম্যাচে লীগ প্রতিদ্বন্দ্বী লিভারপুলের কাছে ৪-১ উড়ে গিয়েছিল সানচেজ-গিয়ারা। ব্রাজিলের ফ্লামেঙ্গো থেকে ৪৫ মিলিয়ন ইউরোতে রিয়ালে পাকাপাকিভাবে আসার পর অনুশীলনেই আলো ছড়িয়েছিলেন। গ্যালাক্টিকোদের হয়ে সম্ভাবনার আলো ছড়িয়ে ভিনিসিয়াস ভালোই খেলেছেন ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে। ভিনিসিয়াসের সঙ্গে একইদিনে অভিষেক হয়েছে স্প্যানিশ তরুণ আলভারো অদ্রিওজোলারও। তারা দুজনেই শুরুর একাদশে ছিলেন। তাদের সঙ্গে রিয়ালের হয়ে এই ম্যাচে অভিষেক হয়েছে ইউক্রেনিয়ান টিনেজার গোলকিপার এ্যান্ড্রিয় লুনিনের। তবে টনি ক্রুস, ইস্কো ও মার্কো এ্যাসেনসিওর মতো খেলোয়াড় বেঞ্চেই ছিলেন। ম্যাচের শুরু থেকেই রিয়ালের সঙ্গে পাল্লা দিতে বেগ পেতে হয় ম্যানইউর। পাঁচ মিনিটের সময় লিড নেয়ার দারুণ এক সুযোগ তৈরি করেছিল মরিনহোর শিষ্যরা। কিন্তু সানচেজের বাড়ানো বলটা ঠিকমতো জালে জড়াতে পারেননি স্প্যানিশ তারকা জুয়ান মাতা। ভিনিসিয়াসকে আটকাতে বেইলি, টিমোথি ফোসু-মেনশাহ এবং স্কট ম্যাকটোমিনেরা তিনজন ছিলেন সদা সজাগ। তারপরও প্রথমার্ধে শক্তি দেখায় রিয়ালই। তাদের আধিপত্যের মধ্যই অবশ্য গোলমুখের তালা খোলেন ম্যানইউর সানচেজ। ১৮ মিনিটে দলকে লিড এনে দেন তিনি। হিয়েরা বল বাড়িয়েছিলেন মাত্তেও ডারমিনাকে। ইতালিয়ান মিডফিল্ডারের ক্রসটি দারুণ দক্ষতায় ধরে তা জালে জড়ান চিলিয়ান ফরোয়ার্ড। গোল হজম করে তার শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে রিয়াল। কিন্তু নয় মিনিট পর উল্টো ব্যবধান দ্বিগুণ করে ম্যানইউ। অর্থাৎ ২৭ মিনিটে ইংলিশ জায়ান্টরা গোল আদায় করে। দুই গোরে পিছিয়ে পড়া রিয়াল প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে বেঞ্জামার গোলে ব্যবধান কমায়। বিরতির পর কোন দলই আর গোলের দেখা পায়নি। আরেক ম্যাচে রোমার বিপক্ষে দুইবার এগিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি বার্সিলোনার। শেষ পর্যন্ত বড় হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে আর্নেস্টো ভালভার্ডের দলকে। ডালাসের এটিএ্যান্ডটি স্টেডিয়ামে শেষ দিকে আট মিনিটের মধ্যে তিনবার বার্সিলোনার জালে বল পাঠায় রোমা। ম্যাচে সবার নজর ছিল বার্সিলোনার নতুন মুখ মালকমের দিকে। চার কোটি ১০ লাখ ইউরো ট্রান্সফার ফিতে তরুণ এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে ফরাসী ক্লাব বোর্দো থেকে দলে টানে বার্সিলোনা। ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে রাফিনহার গোলে এগিয়ে যায় বার্সা। ৩৫ মিনিটে রোমাকে সমতায় ফেরান ইতালিয়ান উইঙ্গার স্টেফান এল শারাউই। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর চতুর্থ মিনিটে বার্সিলোনাকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে নেন মালকম। ৭৮তম মিনিটে আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জির গোলে সমতা ফেরায় রোমা। ৮৩ মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন ব্রায়ান ক্রিসতান্তে। তিন মিনিট পর সফল স্পট কিক থেকে ব্যবধান ৪-২ করেন দিয়াগো পেরোত্তি।
×