ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

এসআই সাময়িক বরখাস্ত

চট্টগ্রামে ইয়াবা বিক্রিতে পুলিশকে উৎসাহিত করা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৭:০০, ২ আগস্ট ২০১৮

চট্টগ্রামে ইয়াবা বিক্রিতে পুলিশকে উৎসাহিত করা হচ্ছে

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে ইয়াবা বিক্রির অন্যতম কারণ পুলিশ। এমন ধারণা খোদ পুলিশ থেকে শুরু করে ইয়াবা বিক্রি পর্যন্ত। বাসা ভাড়া নিয়ে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকের মজুদাগার খুলে বসলেও পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের টনক নড়ছে না। শুধু তাই নয় পুলিশের এই এস আই এই ভাড়া বাসায় অপরাধীদের নির্যাতনের মাধ্যমে একদিকে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়ের ঘটনা জানার পর মাত্র সাময়িক বরখাস্তের ঘটনা ঘটেছে। অথচ মাদক পাচারকারীদের কাছ থেকে আটককৃত মাদকের বাজারজাত করলেও মামলার এজাহারে এই এসআইয়ের নাম নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) চাক্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খন্দকার সাইফুদ্দিন এ ধরনের ঘটনার মূল হোতা বলে র‌্যাব সেভেনের অভিযানে প্রমাণ মিলেছে। গত সোমবার গভীর রাতে এসআই সাইফুদ্দিনের ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ১৫ হাজার ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য উদ্ধার করেছে র‌্যাব। ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় বাড়ির মালিক গোফরানের ছেলে নাজিমকে গ্রেফতার করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আনীত মামলায় আসামি করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হলেও অপরাধী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন আইনী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোন অপরাধীকে আটকের পর তথ্যের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের আটক করে আইনের আওতায় আনার রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু এই ঘটনায় র‌্যাব পুলিশের এই এসআইকে কেন আইনের আওতায় নিয়ে আসেনি বা তাৎক্ষণিক ছাড় দিয়েছে তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। আরও অভিযোগ রয়েছে, বাকলিয়ার হাফেজ নগর আবাসিক এলাকায় গোফরান উদ্দিন মুন্সীর তিনতলা বাড়ির নিচতলা ভাড়া নিয়েছে এসআই সাইফুদ্দিন। পরিবারের সদস্যরা কেউ থাকলেও সারাদিনই বিক্রি চলে মাদকের। বাড়িওয়ালা গোফরানের ছেলেই বাড়ির সামনে একটি মোবাইলের দোকান দিয়ে অন্তরালে মাদকের ক্রেতা কালেকশন করত এসআই সাইফুদ্দিনের প্ররোচনায়। কারণ চাক্তাই পুলিশ ফাঁড়ির সামনে প্রতিনিয়ত চেকপোস্ট বসিয়ে ইয়াবাসহ যেসব মাদক উদ্ধার হয় তা থানায় জমা না দিয়ে এই পুলিশ তা বাসায় মজুদ করেছিল। বাকলিয়া থানার ওসি থেকে শুরু করে আনসার সদস্যদেরও যাতায়াত ছিল এই বাসায়। ফলে এলাকায় এই বাড়িটি পুলিশের মাদক গুদাম নামে পরিচিতি পেয়েছে। এ ছাড়াও মাদকসহ আটককৃতদের নিয়ে দরকষাকষির মাধ্যমে অর্থ আদায় করে অপরাধীদের ছেড়ে দেয়া হতো এই বাসা থেকে। এ বিষয়ে র‌্যাব সেভেনের এএসপি মিমতানুর রহমান মঙ্গলবার রাতে জনকণ্ঠকে জানান, প্রথমে ছয়শ’ ইয়াবাসহ নাজিমকে আটক করা হয়। নাজিমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশের ভাড়া বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ১৪ হাজার ১০০ ইয়াবাসহ বেশকিছু মাদক উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও এসআই সাইফুদ্দিনের পুলিশে প্রবেশকালীন সময়ে ট্রেনিংয়ের পোশাকসহ পুলিশ বিভাগের ৬টি শার্ট ও একটি প্যান্ট উদ্ধার করা হয়েছে। ইয়াবা বিক্রির ২ লাখ ৩১ হাজার ৬৩০ টাকা, ৪টি মোবাইল ফোন ও তিনটি ট্যাব পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
×