ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইল অপারেটরের প্যাকেজ ৩৫টিতে নামিয়ে আনার নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ২ আগস্ট ২০১৮

মোবাইল অপারেটরের প্যাকেজ ৩৫টিতে নামিয়ে আনার নির্দেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের পাঁচটি মোবাইল ফোন অপারেটরের ভয়েস ও ইন্টারনেট প্যাকেজের সংখ্যা বর্তমানে ছয় শতাধিক। একেক অপারেটরের রয়েছে শতেক প্যাকেজ। এত প্যাকেজের ভিড়ে মোবাইল ব্যবহারকারীরা সঠিক প্যাকেজটি বেছে নিতে জটিলতায় পড়েন। কখনও কখনও তাদের বিরক্তির উদ্রেক হয়। আর অপারেটরদের অতি বাণিজ্যিক প্যাকেজের অফারে দ্বন্দ্বে পড়ে যান মোবাইল ব্যবহারকারীরা। এ জটিলতা থেকে গ্রাহকদের মুক্তি দিতে ?উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রতিটি অপারেটরের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫টি প্যাকেজের সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে প্যাকেজের সংখ্যা আরও কমানো হতে পারে বলে জানা গেছে। মোবাইল অপারেটর সূত্রে জানা গেছে, পাঁচটি মোবাইল অপারেটরের মোট প্যাকেজের সংখ্যা বর্তমানে ৬১৭টি। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের ১০২, রবি ও এয়ারটেলের ২৫৮টি (মতান্তরে ১৩৯টি), বাংলালিংকের ৭৬ এবং টেলিটকের রয়েছে ৪২টি। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি অপারেটরকে তাদের প্যাকেজের সংখ্যা (ভয়েস ও ইন্টারনেট মিলিয়ে) ৩৫টিতে নামিয়ে আনতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ১ জুলাই থেকে এই নির্দেশ কার্যকর কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, অপারেটরগুলোকে প্যাকেজের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৩৫ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ১ জুলাই থেকে এই নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে। যদি কেউ নির্দেশ না মানে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি মনে করেন, মোবাইল অপারেটরদের শত শত প্যাকেজ জনগণের ওপর কী প্রভাব পড়ে, তা কখনও তারা মূল্যায়ন করেনি। বরং ইচ্ছে মতো তারা প্যাকেজ তৈরি করেছে। মন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্যাকেজের সংখ্যা ৩৫ করলেই হবে না, আমি এই সংখ্যাটাও রিভিউ করতে বলেছি। যেসব প্যাকেজে জনগণের কল্যাণ হয়, জনগণ সরাসরি জড়িত এবং উপকারভোগী সেসব প্যাকেজ রাখা হবে। সেক্ষেত্রে প্যাকেজের সংখ্যা আরও কমতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন যেহেতু প্যাকেজের অনুমোদন বিটিআরসি দেয়, ফলে বিটিআরসি বিষয়টি কঠোরভাবে রিভিউ করবে। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের শেষ দিকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ মোবাইল ফোন সেবায় বিদ্যমান প্যাকেজের সংখ্যা কত, তা জানতে চেয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিকে চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছিল অপারেটরগুলোর মোট প্যাকেজ, অনুমোদনহীন প্যাকেজের সংখ্যা, যেসব প্যাকেজ অটো-রিনিউ হয়, সেসব প্যাকেজের তালিকা এবং গ্রাহকের সমস্যা হয়, এমন কী কী সেবা বিদ্যমান আছে, যেগুলো গ্রাহকরা বুঝতে পারেন না। চিঠির জবাবের পর ভয়েস ও ইন্টারনেট প্যাকেজগুলো কমানোসহ তখন গ্রাহকবান্ধব কিছু নির্দেশনা জারির উদ্যোগ নেয়ার কথা ছিল। আর প্যাকেজের সংখ্যা ১০ থেকে ২০টার মধ্যে নামিয়ে আনার কথা শোনা গিয়েছিল। এ প্রসঙ্গে বাংলালিংকের হেড অব কর্পোরেট এ্যাফেয়ার্স তাইমুর রহমান বলেন, টেলিটক ছাড়া অন্য অপারেটরের প্যাকেজের চেয়ে বাংলালিংকের প্যাকেজের সংখ্যা কম (৭৬টি)। আমরা এগুলো আরও ‘সিম্পলিফাই’ ও ‘এফিশিয়েন্ট’ করার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, আসলে প্যাকেজ তৈরি হয় গ্রাহকের প্রয়োজন অনুসারে। কোনও গ্রাহক পাঁচ টাকা, কোন গ্রাহক ৫০০ টাকা, কোন গ্রাহক আবার দেড় হাজার টাকার প্যাকেজ চান। ফলে সবার কথা মাথায় রেখেই প্যাকেজ তৈরি করতে গিয়ে সংখ্যা বেড়ে যায়। আমরা চেষ্টা করছি গ্রাহকবান্ধব প্যাকেজ তৈরি করতে। তাইমুর রহমান বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র সঙ্গে মোবাইল অপারেটরগুলোর নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে। বৈঠকে আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় আমাদের (অপারেটর) প্যাকেজের সংখ্যা কত, কতটা কমিয়েছি ইত্যাদি। আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরছি। আশা করি, একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে।
×