ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষায় বিড়ম্বনা বাড়ছেই

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ২ আগস্ট ২০১৮

বর্ষায় বিড়ম্বনা বাড়ছেই

এক সময় ঢাকা শহরের ভেতর দিয়ে সাপের মতো এঁকে বেঁকে প্রবাহিত ছিল অসংখ্য খাল। এই খাল ছিল বর্ষার পানি প্রবাহিত হওয়ার অন্যতম মাধ্যম। নগর পরিকল্পনার ভুল সিদ্ধান্তের কারণে শহরবাসীকে এখন চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। খালগুলোকে জলাঞ্জলি দিয়ে তার ওপর গড়ে তোলা হয়েছে অপরিকল্পিত বক্স কালভার্ট। সে কারণে ঢাকা শহরের খালগুলো মূলত অদৃশ্য হয়ে পড়েছে। বক্স কালভার্টের ওপর আবার এখন গাড়ি চলাচল করছে। তবে বক্স কালভার্টগুলোতে আধুনিকায়নের মাধ্যমে করা হলে তা হতো বর্ষার পানি নিষ্কাশনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। কিন্তু তা না করেই হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে মূলত ঢাকা শহরকে যেন এক অচলাবস্থায় পরিণত করা হয়েছে। তাই সামান্য বৃষ্টিপাতেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা তলিয়ে যায়। আর ভরা বর্ষায় তো কোন কথাই নেই। রূপ নেয় যেন সমুদ্রের মতো। এ অপরিকল্পিত বক্স কালভার্টের জনক আবার ওয়াসার প্রকৌশল বিভাগ। তারা প্রতিবছরই বক্স কালভার্ট পরিষ্কারের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। কিন্তু টাকা হাতিয়ে নিয়েও পরিষ্কার করে সামান্য। যাতে করে আবার পরিষ্কারের নামে হরিলুট চালাতে পারে। এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হওয়ায় ঢাকার সব বক্স কালভার্টগুলো ভেঙ্গে খালে পরিণত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু তাতে করে সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করবে বলে জানা গেছে। কারণ, অনেক বক্স কালভার্টের ওপর গড়ে উঠেছে ব্যস্ততম সড়ক। সড়ককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আবার আধুনিক অনেক বিপণিবিতান ও অনেক হাইরাইজ বিল্ডিং। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাটি বাস্তবায়নে প্রকৌশলীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে এক সময় বিশ-পঁচিশ দিন পর্যন্ত একটানা বৃষ্টিপাত হতো। কিন্তু তারপরও কোথায়ও এভাবে পানি জমার চিহ্ন থাকত না। সব পানি খালে প্রবাহিত হয়ে নদীতে মিশে যেত। বর্তমানে শুধু ঢাকা শহরের খালই দখল হয়ে যায়নি। আশপাশের চারটি স্রোতস্বিনী নদীও দখলের কবলে পতিত হয়ে গেছে। বাকি দুয়েকটি খাল যাও আছে তা ভরাট হয়ে বর্তমানে অচলাবস্থায় পরিণত হয়েছে। ওই খালগুলো যেন মানুষের ময়লা ফেলার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। মানুষ যখন প্রকৃতির বিপরীতে চলতে শুরু করে প্রকৃতি তার বদলা নেয়। সে কারণেই ঢাকাবাসী বর্ষায়। দেশের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত খালগুলোকে আগের অবস্থা ফিরিয়ে এনে পানি প্রবাহিত করার জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা প্রদান করেছে। মতিঝিলের খাল নৌকা দিয়ে পার হয়েছেন অনেকে। খালগুলো সরকার দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এ দেশের দখলদাররা এতটাই শক্তিশালী যে তাদের কবল থেকে সরকারী খালগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি দীর্ঘদিনেও। বর্ষা এলেই সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। ওয়াসা পানি সেচের জন্য মোটরপাম্প ফিট করে। সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহোদয় অনেক ঢাকঢোল পিটিয়েছেন আর কোন বর্ষায় ঢাকা শহর তলাবে না বলে। কিন্তু কথা ও কাজের মধ্যে দেখা যাচ্ছে বিস্তর ফারাক। সিটি কর্পোরেশন এবং ওয়াসা যদি মিলেমিশে বর্ষার আগে ড্রেনেজগুলো পরিষ্কার করত তাহলে ঢাকাবাসীকে জলাবদ্ধতার শিকার হতে হতো না। বর্ষায় সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হতে হয় চাকরিজীবীদের। অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা ঘর থেকে বাহিরে বের হন। তাদের ভোগান্তি চরমে। বর্ষার পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে থাকার কারণে নিচের খানাখন্দ দেখা যায় না। ফলে গাড়ি উল্টে যাওয়ার দৃশ্য নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। রিকাবীবাজার, মুুন্সীগঞ্জ থেকে
×