ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শামীম শিকদার

বিরাট বাজেট সত্ত্বেও...

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২ আগস্ট ২০১৮

বিরাট বাজেট সত্ত্বেও...

রাজধানীতে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা যেন তার অপরিহার্য অনুষঙ্গ হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ সড়কই এখন সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায়। দীর্ঘ সময়ের জন্য তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। নাগরিকদের ভোগান্তি প্রতিনিয়তই বাড়ছে। অন্যদিকে জলাবদ্ধতার কারণে যানজট নগরবাসীকে জিম্মি করে ফেলছে। চলতি বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা বেশি হওয়ায় বার বার এ ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে। গত বছর জলাবদ্ধতা নিরসনে দুই সিটি কর্পোরেশন প্রায় ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি অত্যাধুনিক ‘জেট এ্যান্ড সাকার মেশিন’ কিনেছে। বলা হয়েছে, এই যন্ত্রটি প্রতিদিন ২২ ঘণ্টা কাজ করতে পারে। প্রতি ১০ মিনিটের মধ্যে ১২০ মিটার দীর্ঘ ড্রেন সম্পূর্ণ পরিষ্কার করতে সক্ষম। কিন্তু বাস্তবে এর কোন ফল দেখা যাচ্ছে না। জানা যায়, ঢাকার জলাবদ্ধতাপ্রবণ এসব এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য গত দুই বছরে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো প্রায় হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। এ বছর সড়ক, ফুটপাথ ও ড্রেন নির্মাণে ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরেছে ডিএসসিসি। এরই মধ্যে প্রায় সব টাকা খরচ করেছে সংস্থাটি। এ ছাড়া ডিএনসিসি তাদের বার্ষিক বাজেটে এ খাতে প্রায় ২৭৮ কোটি বরাদ্দ রেখেছে। এরই মধ্যে প্রায় সব টাকা খরচ করেছে এই সংস্থা। গত অর্থবছরে ডিএনসিসি নর্দমা ও ড্রেন নির্মাণে আরও ১৭৫ কোটি টাকা খরচ করে বলে জানা যায়। এ ছাড়া ডিএসসিসি তাদের একটি মেগা প্রকল্পের এক হাজার ২০২ কোটি টাকা থেকে কয়েকটি পর্বে ভাগ করে কয়েক কোটি টাকা ড্রেন ও নর্দমা নির্মাণে ব্যয় করেছে। ঢাকা ওয়াসাও তাদের নিজস্ব ড্রেন পরিষ্কারের পেছনে ব্যাপক অর্থ ব্যয় করেছে বলে জানা যায়। এর পরও বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। রাজধানীর বহু এলাকায় ‘এক দেড় ফুট’ পর্যন্ত পানি জমে। রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে জলাবদ্ধতা বেশি উত্তর সিটিতে। এর মধ্যে কারওয়ান বাজার, মিরপুর, কালশী, শ্যামলী, মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নতুন বাজার, খিলখেতসহ বিভিন্ন এলাকা অন্যতম। ঢাকার বেগুনবাড়ী, পান্থপথের বিভিন্ন এলাকা, ধানমণ্ডি, কুড়িল, পুরান ঢাকার আলাউদ্দিন রোড, যাত্রাবাড়ী মোড়, জুরাইন, শহীদনগর, মধুবাগে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় অল্প বৃষ্টিতেই, অলি-গলি হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে যায়। জলবদ্ধতা নিরসনে ২০০৯ সাল থেকে গত নয় বছরে সরকারের চারটি সংস্থা মোট ১ হাজার ৯৯৬ কোটি খরচ করেছে। সমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ না কারায় বিপুল অঙ্কের এই টাকা নর্দমা নির্মাণ ও মেরামত, পাম্পস্টেশন খাল-বক্স কালভার্ট খনন ও পরিষ্কার করার মতো ছোটখাটো কাজে ব্যয় করা হয়েছে। ফলে সাময়িক অসুবিধা দূর হলেও রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে এই টাকা কোন কাজে লাগেনি। ঢাকা ওয়াসা ও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন মিলে ড্রেন, নর্দমা নির্মাণ ও খাল পরিষ্কার করার কাজে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে, সেই পরিমাণ সুফল মেলেনি। ১০ মিনিটে ১২০ মিটার ড্রেন পরিষ্কার করার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে জেড এ্যান্ড সাকার মেশিন কিনলেও তাতে তেমন একটা লাভ হয়নি। রাজধানীর সড়কগুলোতে বৃষ্টিতে পানি জমে জলাবদ্ধতা তৈরির পাশাপাশি ড্রেনের ময়লা পানির সঙ্গে বৃষ্টির পানি মিশে সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে তাতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় রাজধানীবাসীকে। কাপাসিয়া, গাজীপুর থেকে
×