ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রতিবছর বাড়ছে উৎপাদন ;###;গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে আমন চাষ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বেশি;###;পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে অনেক জেলায় শঙ্কা বিরাজ করছে

আমনে বাম্পারের আশা ॥ সোনালি স্বপ্ন বুননে ব্যস্ত কৃষক

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২ আগস্ট ২০১৮

আমনে বাম্পারের আশা ॥ সোনালি স্বপ্ন বুননে ব্যস্ত কৃষক

ওয়াজেদ হীরা ॥ আষাঢ় গিয়ে শ্রাবণও অর্ধেক শেষ। বৃষ্টির দেখা মিলছিলই না। অবশেষে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তি পোহালেও যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে দেশের কৃষক। কেননা বৃষ্টির অভাবে দেশের অনেক জায়গায় রোপা আমন ধানের চারাই রোপণ করা যাচ্ছিল না। এবার বৃষ্টিপাতে মাঠে মাঠে আমনের চারা রোপণের ধুম পড়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে গলা ছেড়ে গান ধরে মাঠে আমন ধানের চারা নয় সোনালি স্বপ্নই যেন বুনছেন কৃষক। জমির বুকে লাঙ্গল চালিয়ে ধান নামের সোনা ফলান কৃষক। গত বছর উজানের ঢল কৃষকের স্বপ্ন কিছুটা ফিকে করে দিয়েছিল। একাধিকবার রোপণ করা হয়েছিল রোপা আমন। কৃষকের সংগ্রাম আর সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় ঘুরে দাঁড়ায় অর্থনীতির চাকা। গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে আমন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও গত বছরের চেয়ে এবার বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে। আমনে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রতি বছর আমনের উৎপাদন বাড়ছে এবং গত বছর আমনের উৎপাদন ১ কোটি ৪০ লাখ টনে পৌঁছায়। গতবার বন্যায় ফসল ভাসলেও ঘুরে দাঁড়ায় কৃষক। এবারও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা গতবারের চেয়ে কিছু বেশি রাখা হয়েছে। উৎপাদনের সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে নতুন নতুন উদ্ভাবিত জাত, আধুনিক ব্যবস্থাপনা ও সরকারের সঠিক নীতি। কৃষকের স্বার্থ খেয়াল রেখেই সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানা গেছে। এদিকে ‘শ্রাবণের ১২ ও ভাদ্র মাসের ১৩, এর মধ্যে যত পার আমন চারা গাড়ো’ গ্রাম বাংলায় মানুষের বহু পুরনো কথা এটি। অধিক বৃষ্টির কারণে আমন ধানের চারা রোপণের এটাই সব থেকে মোক্ষম সময়। কিন্তু এবার শ্রাবণের শুরুতে অঝোরে ঝরেনি বৃষ্টিধারা। কয়েক দিন বৃষ্টি না থাকায় মাঠ ঘাট যেমন শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছিল তেমনি মলিন ছিল কৃষকের মুখ। আমনের এই নিশ্চিত ফসল পেতে প্রকৃতিই যে ভরসা। যদিও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে এখনও কিছু জেলায় রোপা আমন রোপণ শুরু করা যায়নি ভালভাবে। তবে অধিকাংশ জেলায় এখন ফসলের জমিতে কাদাপানির মাখামাখি। আর সেই কাদাপানির মাঠে লাঙ্গল চষে সবুজের সোনা ফলাতে ব্যস্ত চাষী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, চলতি ২০১৮-২০১৯ মৌসুমে ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ৯৯৯ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এতে চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ ৮৪ হাজার টন। গত ২০১৬-১৭ বছর ৫৬ লাখ ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে ১ কোটি ৪০ লাখ ৭৬ হাজার টন আমন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সে তুলনায় আবাদি জমির লক্ষ্যমাত্রা এবার বাড়ানো হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সরেজমিন উইংয়ের উপপরিচালক (মনিটরিং) মিজানুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, ২০১৮-২০১৯ মৌসুমে ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ৯৯৯ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যে বোনা আমন লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৯৯ হেক্টর জমি আর রোপা আমনের লক্ষ্য ৫৩ লাখ ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। সরেজমিনে গাজীপুরের মাওনা, শ্রীপুর এলাকায় দেখা গেছে রোপা আমন নিয়ে ব্যস্ত কৃষক। ধানের জমি পানিতে টইটুম্বুর। ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করে ক্ষেতে চারা গাছ লাগাচ্ছে কৃষক। কোথাও কোথাও লাঙ্গল দিয়েও জমি চাষ করতে দেখা গেছে। মাওনার ছবুর উদ্দিন বলেন, রোপা আমন লাগানোর এখনই উপযুক্ত সময়। আরও কিছুদিন লাগানো যাবে। বৃষ্টি থাকলে আরও আগে শুরু হতো বলেন তিনি। জমিতে ধানের চারা লাগাতে লাগাতে কৃষক জুলহাস উদ্দিন বলেন, আমনের নিশ্চিত ফসল আর খরচ কম হয় তাই সবাই আগ্রহ করে বেশি। এবারও ভাল ফলন হবে আশা করেন তিনি। আশপাশের কয়েক গ্রামেও দেখা গেছে আমন লাগানোর ধুম চলছে। গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বৃষ্টির প্রভাবে এসব এলাকায়ও এখন ব্যস্ত কৃষক। উত্তরের একাধিক কৃষি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এবার তারা আমনে বাম্পার ফলন আশা করছেন। বন্যার পরের বছর ফলন ভাল হয় বলেও মত তাদের। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা জয়পুরহাটের সর্বত্র রোপা আমন ধানের চারা রোপণের ধুম পড়েছে। আষাঢ়-শ্রাবণ দীর্ঘ দুমাস ধরে তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খরার কবলে পড়ে জয়পুরহাট। গত কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে দাবদাহ কমার পাশাপাশি কৃষক এখন আমনের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর তথ্যে জানা গেছে, জেলায় চলতি ২০১৮-১৯ মৌসুমে ৭২ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এতে চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার টন। কিন্তু কৃষকরা জমি চাষখোড় দিয়ে প্রস্তুত করলেও আষাঢ়-শ্রাবণ দীর্ঘ দু’মাস ধরে জেলায় তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় একদিকে যেমন তাপদাহ বৃদ্ধি পায়, অন্য দিকে আমনের চারা রোপণও বিলম্ব হতে থাকে। কৃষি বিভাগের হিসাব মতে গত বছর এ সময় (১৯ জুলাই’২০১৭) ২৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হলেও চলতি বছর ১৯ জুলাই রেকর্ড করা হয়েছে মাত্র ৫৩ মিলিমিটার। ফলে বৃষ্টিপাত তুলনামূলক কম হওয়ায় রোপা আমন চাষ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় সেচযন্ত্র (গভীর ও অগভীর নলকূপ) ব্যবহার করে জমিতে পানি সেচের মাধ্যমে আমনের চারা রোপণের পরামর্শ প্রদান করে কৃষি বিভাগ। এক্ষেত্রে আমন ধানের চারার বয়স বেশি হলে ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত রোপা আমনের চারা লাগানো সম্ভব হলে ফলনে তেমন সমস্যা হবে না বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সুধেন্দ্র নাথ রায়। কৃষি বিভাগ জানায়, জয়পুরহাটে চলতি ২০১৮-১৯ মৌসুমে রোপা আমন চাষ সফল করতে ৩ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৪০ হেক্টর বেশি। এছাড়াও নওগাঁতেও আষাঢ়ে তেমন বৃষ্টি হয়নি, ছিলো তীব্র খরা। শ্রাবণের ভরা বর্ষায় তীব্র খরার দাপটে আমন আবাদ পড়েছিল হুমকির মুখে। বৃষ্টির অপেক্ষায় অলস সময় কাটানো কৃষকরাই এখন আমন রোপণের ব্যস্ত। শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহে বৃষ্টির দেখা পেয়েই লাঙ্গল নিয়ে সবাই ছুটেছে মাঠে। বর্ষার আগমনে বরেন্দ্র অঞ্চলের জেলা নওগাঁর পথঘাট ও ফসলের মাঠগুলো যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। স্বস্তি নেমে এসেছে প্রকৃতি আর মানুষের মাঝেও। জানা গেছে, তাই কৃষকরা বৃষ্টি নির্ভর আমন ধানের চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ধানের চারা রোপণের জন্য লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষাবাদের উপযোগী করে তুলছেন। কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী এবার নওগাঁর ১১টি উপজেলায় প্রায় আড়াই লাখ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আষাঢ়ের প্রথম থেকেই চাষাবাদ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির অভাবে কৃষকরা সময় মতো সেই কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। অল্প কিছু সংখ্যক কৃষক নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভের পানি তুলে চাষ শুরু করেছিল। কিন্তু অধিকাংশ কৃষকই বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিলেন। দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সেসব এলাকায় পুরোদমে চলছে রোপা আমন ধান লাগানোর কাজ। যেন উৎসব চলছে। বৃষ্টি হওয়াতে কোন কোন এলাকায় শ্রমিক সঙ্কটের তথ্যও পাওয়া গেছে। কয়েক দিনের মধ্যেই রোপা আমন লাগানো শেষ করে দিতেই এই ব্যস্ততা কৃষকদের। যেসব এলকায় বৃষ্টি বেশি সেই সব জেলায় উৎসব থাকলেও তুলনামূলক কমবৃষ্টিপাত জেলাগুলোতে এখনো ভালভাবে রোপা আমন লাগানো শুরু হয়নি। বিশেষ করে উত্তরের কিছু জেলায় এখনও তেমন ভাবে শুরু হয়নি রোপা আমন লাগানো। জানা গেছে, বৃষ্টির অভাবে আমন আবাদ নিয়ে এমন শঙ্কা দেখা দিয়েছিল দিনাজপুর সদর উপজেলা, বিরল, কাহারোল ও বীরগঞ্জের চাষীদের মধ্যে। আকাশে মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ালেও গত কয়েক দিন বৃষ্টি ছিলই না। এখন চিত্র পাল্টাতে শুরু করেছে। বৃষ্টি হচ্ছে এখন এসব জেলায়ও। দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রাবণের মাঝামাঝি সময়ে এসেও জমিতে কোনো পানি নেই। প্রচ- রোদে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল। আর যারা আগাম চাষ দিয়ে রেখেছেন, সেসব জমিতে কাদার পরিবর্তে ধুলা উড়ছে। ভরা বর্ষায়ও প্রচ- রোদে পুড়ছে আবাদি জমি। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা খরার কথা স্বীকারও করেছেন। দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ তৌহিদ ইকবাল জনকণ্ঠকে জানান, বৃষ্টি না হওয়াতে যে শঙ্কা ছিল এখন আর নেই। এখন বৃষ্টি বেশ ভালই হচ্ছে। রবিবার (২৯ জুলাই) জেলার সবগুলো উপজেলায় বৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যেই আমাদের লক্ষ্যমাত্রার ৩৫ শতাংশ জমিতে বুনন হয়ে গেছে। দিনাজপুরে চলতি আমন মৌসুমে ২ লাখ ৫৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য ইতোমধ্যেই ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এর আগে আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসেও জানা গেছে, জুলাই মাসের শেষের দিকে এবং আগস্টের প্রথম সপ্তাহে প্রচুর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরের অন্যতম জেলা লালমনিরহাটে এখনও বৃষ্টির কোন দেখা নেই। মেঘ জমেও তা আর বৃষ্টি হয়ে ঝরে না। চাষীরা বেশ শঙ্কার মধ্যেই দিন পার করছেন। একাধিক চাষী সে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। এছাড়াও লালমনিরহাট জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিধু ভূষণ রায় জনকণ্ঠকে বলেন, বৃষ্টিপাত নেই বললেই চলে। যে বৃষ্টি হয়েছে এটিকে আমরা চাষের উপযোগী বলি না। যেহেতু এটি বৃষ্টি নির্ভর একটি ফসল তাই কিছুটা শঙ্কিত চাষীরা হতে পারে। তবে মৌসুমের সময় আছে এখনও আশা করছি সঙ্কট থাকবে না। তবে ইতোমধ্যেই অনেকেই সেচের মাধ্যমে ফলন এগিয়ে নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি। এ বছর এই জেলায় ৮৪ হাজার ৮৪৫ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে। তবে আগাম বৃষ্টির পানিতে কিছু জমিতে চারা লাগানো হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। উত্তরের অন্যান্য জেলার চেয়ে ভিন্ন চিত্র পঞ্চগড়ে। সেখানে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টিপাতে থৈ থৈ করছে পানি। কৃষকেরও রোপা আমন লাগানো প্রায় শেষের পথে। এই জেলায় এবার ৯৭ হাজার ৯১৮ হেক্টর জমিতে আমন লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে যেখানে ৮৮ শংতাশই লাগানো শেষ হয়ে গেছে বলে জেলার উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শামসুল হক রবিবার (২৯ জুলাই) রাতে জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, উত্তরের অন্যান্য জেলার চেয়ে এখানে বেশিই বৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিনই বৃষ্টি, আমন ধান লাগানোও শেষ পর্যায়ে। দেশের দক্ষিণাঞ্চল, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক জেলায় পর্যাপ্ত বৃষ্টিতে কৃষকরা ব্যস্ত হলেও খুলনায় সে তুলনায় বেশ কম। জানা গেছে খুলনায় ৯০ হাজার ১৫২ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ১ শতাংশের মতো অর্জন হয়েছে। তবে জেলার উপপরিচালক মোঃ আব্দুল লতিফ আশাবাদী সামনের দিকে। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, সামনে সময় আছে সব হয়ে যাবে আশা করছি। এদিকে প্রতি বছরই উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে দিন দিন যে হারে কৃষি জমি কমে আসছে তার মধ্যেই সাফল্য পেতে সরকার সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা দেখলে সেটি স্পষ্ট হবে। জানা গেছে, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উন্নত জাত তৈরিসহ নানা ধরনের দিন নির্দেশনায় এই সাফল্য আসছে। জানা গেছে, শুধু বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট আমন মৌসুম ও এর পরিবেশ উপযোগী ৪১টি ধানের জাত ও ধান উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নানা রকম কৃষিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা উদ্ভাবন করেছে। অনুকূল ও প্রতিকূল পরিবেশে চাষ করা যায় এসব জাতের ধান। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন জনকণ্ঠকে বলেন, বোনা আমন তো বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসেই লাগানো শেষ। রোপা আমনে গত বারের তুলনায় এবার কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও দ্রুতই তা কাভার হয়ে যাবে। কিছু জেলায় বৃষ্টিপাতের জন্য শুরু হয়নি। তবে সমস্যা হবে না বলেও জানান তিনি। উৎপাদনে দিন দিন সাফল্য নিয়ে মহাপরিচালক বলেন, দেখুন আমাদের যে হারে জনসংখ্যা বেড়েছে তাতে খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে হবে। কিন্তু জমির পরিমাণ বাড়ানো যাবে না বরং কমছে।
×