ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আগামীকাল সাতক্ষীরা

আওয়ামী লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি, বসে নেই অন্য দলগুলোও

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২ আগস্ট ২০১৮

আওয়ামী লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি, বসে নেই অন্য দলগুলোও

আবু জাফর সাবু গাইবান্ধা থেকে ॥ বেজে উঠেছে নির্বাচনের ঘণ্টা। পুরো গাইবান্ধা জেলাতেই বইছে নির্বাচনের হাওয়া। এতটুকু ফুসরত নেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, তৃণমূলের ভোটারদের কদর ততই বাড়ছে। জেলার পাঁচ আসনেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী তৎপরতা চোখে দেখার মতো হলেও বসে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত দলীয় প্রার্থীদের তৎপরতা। যেন কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান। তবে গাইবান্ধার পাঁচ আসনেই আওয়ামী লীগে রয়েছে প্রার্থিতার ছড়াছড়ি। দলটিতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের যেন হিড়িক পড়েছে। পুরনো ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাদের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও মাঠে নেমে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। সামাজিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ছাড়া মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দোয়া ও শুভেচ্ছা সংবলিত ডিজিটাল ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে নির্বাচনী এলাকাগুলো। মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা প্রতি আসনেই নির্বাচনী তৎপরতার মাধ্যমে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় পার্টি, বিএনপি, জাসদ, জাতীয় পার্টি (জাফর), জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবির মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও নির্বাচনী এলাকায় তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হলেও পাঁচ আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রতি আসনেই গোপন প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে নির্বাচন সামনে রেখে জোট-মহাজোটের ভোটের অঙ্কে আসন বণ্টন নিয়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে কিছুটা হলেও শঙ্কা-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। বিগত পাঁচ বছর আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে এ জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের কিছু সংসদ সদস্য ও তাদের সমর্থিত নেতাকর্মীদের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ, কর্মকা- ও ব্যর্থতাকে পুঁজি করে বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দল ফায়দা হাসিল করতে চাইছে। তবে জেলার পাঁচ আসনেই ভোটের বিচারে এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। এ দল চাইছে তাদের দখলে থাকা পাঁচ আসনে আগামী নির্বাচনেও বিপুল ভোটে বিজয়ী হতে। অন্যদিকে বিএনপি ও জামায়াত চাইছে আসনগুলো তাদের দখলে আনতে। গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) ॥ সারাদেশেই আলোচিত এই আসনটি। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিদের সন্ত্রাসে জর্জরিত ও নির্বাচিত সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলামের নৃশংসভাবে হত্যার পর দেশব্যাপী আলোচনায় স্থান পায় এই আসনটি। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের আইন ও বিচার বিষয়ক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শামীম হায়দার। আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটনের হত্যাকা-ের পর শূন্য আসনের উপ-নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রয়াত লিটনের বড় বোন আফরোজা বারীকে পরাজিত করে বিজয়ী হন। একাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে হারানো আসনটি পুনরুদ্ধারে আঁটঘাঁট বেঁধেই মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। উপ-নির্বাচনের কৌশলগত ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে আসনটি জাতীয় পার্টির কাছে হারাতে হলেও এবার পরিকল্পিতভাবে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে নেমেছেন পরাজিত প্রার্থী আওয়ামী লীগের আফরোজা বারী। এই উপজেলার দলের নেতাকর্মীরাও চান আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেয়া হোক। আফরোজা বারী ছাড়াও এ আসনে দলের মনোনয়ন লাভের জন্য নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন- পৌরমেয়র ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু, রেজাউল আলম রেজা, আশরাফুল আলম লেবু, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাজেদুল ইসলাম ও সুন্দরগঞ্জ ডি ডাব্লিউ ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ দলের সাবেক উপজেলা সহ-সভাপতি আব্দুল হান্নান সরকার। বসে নেই অন্যান্য দলের প্রার্থীরাও। জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার ছাড়াও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ খন্দকার জিয়াউল ইসলাম জিয়া, বিএনপি নেতা এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম জিন্নাহ মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেবেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বেলকা ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক মাজেদুর রহমান মাজেদ। সিপিবির উপজেলা সভাপতি নুরে আলম মানিক এবং জাসদের এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। গাইবান্ধা-২ (সদর) ॥ এক সময়ের জাতীয় পার্টির ঘাঁটি বলে খ্যাত এ আসনটিতে সাংগঠনিকভাবে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এই আসনে পর পর দুবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য হচ্ছেন বর্তমানে জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি। তিনি গত নির্বাচনের পর থেকেই প্রতি ইউনিয়নে এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে সভা, সমাবেশ, ইফতার, দোয়া মাহফিলসহ নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে আসছেন। করেছেন এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন। এই জনপ্রিয় নেত্রী নানাভাবে জনসংযোগও অব্যাহত রেখেছেন। মাহাবুব আরা বেগম গিনি এবং আওয়ামী লীগের অন্যান্য দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীসহ সব নেতাকর্মী গাইবান্ধার এই আসনটিকে ধরে রাখতে মরিয়া। তারা সেই লক্ষ্য নিয়েই মাঠে ময়দানে কাজ করছেন। মাহাবুব আরা গিনি ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে নির্বাচনী তৎপরতায় জড়িত রয়েছেন তারা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক এ্যাডভোকেট সৈয়দ শামছুল আলম হিরু, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি ফরহাদ আব্দুল্যাহ হারুন বাবলু, সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পিয়ারুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আমিনুর জামান রিংকু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামছুর রহমান টুলু, জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আহসানুল করিম লাছু, বাংলাদেশের প্রথম স্পীকার শাহ আবদুল হামিদের নাতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নেতা শাহ সারোয়ার কবির। দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের মধ্যে যথেষ্ট গ্রহণযোগ্যতাকে পুঁজি করে এ্যাডভোকেট সৈয়দ শামছুল আলম হিরু নির্বাচনী এলাকায় বেশ তৎপর রয়েছেন। আরেক জনপ্রিয় ও একনিষ্ঠ নেতা আবু বকর সিদ্দিক নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। বিভিন্ন সমাজকর্মে অংশ নেয়া ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে ফরহাদ আবদুল্লাহ হারুন বাবলুও আশাবাদী মনোনয়নের ক্ষেত্রে। অন্য প্রার্থীরাও নানা জনকল্যাণমূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে এলাকায় নিজেদের যোগ্য প্রার্থী হিসেবে ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান গড়ে তুলেছেন। বসে নেই জাতীয় পার্টি ও বিএনপিও। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির গ্রাম সরকার বিষয়ক সম্পাদক আনিসুজ্জামান খান বাবু দলটির পক্ষে মনোনয়ন পেতে এগিয়ে রয়েছেন। মনোনয়ন পেতে বিএনপির আরও বেশ ক’জন মনোনয়নপ্রত্যাশী নির্বাচনী এলাকায় তৎপরতা চালাচ্ছেন। তারা হলেন, জেলার পৌর বিএনপির উপদেষ্টা খন্দকার আহাদ আহমেদ ও জেলা বারের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট সেকেন্দার আজম আনাম। অন্যদিকে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও পর পর দু’বারের সাবেক এমপি আবদুর রশিদ সরকার আসনটি ফিরে পেতে নির্বাচনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল করিম এ আসনে মনোনয়নের জন্য জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম দস্য ও জেলার সভাপতি মিহির ঘোষ এবারও দলীয় প্রার্থী। বিগত নির্বাচনেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন। জেলা জাসদের পক্ষে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মারুফ মনাও মনোনয়ন প্রত্যাশী। গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ি) ॥ এ আসনটি রয়েছে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী ভোট ব্যাংক। একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও দলের নেতাকর্মীরা এ আসনটি ধরে রাখতে চান। সেই লক্ষ্য নিয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাদুল্লাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ডাঃ ইউনুস আলী সরকার এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি দুই উপজেলাতেই ব্যাপক নির্বাচনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এ আসনেও রয়েছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর ছড়াছড়ি। এ নিয়ে কিছুটা হলেও বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন দলটির মাঠের ত্যাগী নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। সংসদ সদস্য ডাঃ ইউনুস আলী সরকার ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন, পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ, সাদুল্লাপুর উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিগত উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে সামান্য ভোটে পরাজিত শাহরিয়ার খান বিপ্লব, পলাশবাড়ী উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আবু বকর প্রধান, সাদুল্লাপুর উপজেলা আ’লীগের সদস্য শিক্ষক আজিজার রহমান বিএসসি, মনোহরপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মাজেদার রহমান দুলু, এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম, সাবেক কৃষি কর্মকর্তা বজলার রহমান রাজা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মাহমুদুল হক এবং কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি। শিক্ষক আজিজার রহমান বিএসসি একটি বাইসাইকেলে চড়ে হ্যান্ড মাইক দিয়ে দুই উপজেলার ২০ ইউনিয়নের হাট-বাজারে ব্যতিক্রমধর্মী নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে ইতোমধ্যে জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। এ আসন থেকে পর পর চারবারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ড. টিআইএম ফজলে রাব্বি চৌধুরী এবারও জাতীয় পার্টি (জাফর) থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় পার্টির (এ) প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার শিল্পী হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ কর্তৃক ঘোষিত একক দলীয় প্রার্থী হিসেবে ইতোমধ্যে দুটি উপজেলাতেই ব্যাপক নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি ডাঃ মইনুল হাসান সাদিকও এই আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারে তৎপর। জেলা জামায়াতের রাজনৈতিক সেক্রেটারি ও বর্তমান পলাশবাড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং গত সংসদ নির্বাচনে এই আসনের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম লেবু প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় তৎপর রয়েছেন। এছাড়া জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ও সাদুল্যাপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান, সাদুল্যাপুরের ফরিদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রনেতা এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদি এই আসনে এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। অপরদিকে পলাশবাড়ি উপজেলা জাসদ সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা বাংলাদেশ মিডিয়া ইনস্টিটিউট সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের কেন্দ্রীয় মহাসচিব নুরুজ্জামান প্রধান এবার দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) ॥ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য জনপ্রিয় নেতা অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে আসনটি ধরে রাখতে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডে নির্বাচনী সভা, পথসভা এবং উঠান বৈঠকের মাধ্যমে জনসংযোগ চালিয়ে ভোটারদের নৌকা মার্কায় ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করছেন। তবে আসনটিতেও রয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থিতার হিড়িক। সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ছাড়াও এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আতাউর রহমান সরকার ও মহিমাগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল লতিফ প্রধান দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায় ব্যাপক নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। আ’লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির পাট ও বস্ত্র বিষয়ক সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনও মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানা গেছে। এদিকে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শামীম কায়সার লিংকন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, সদস্য ফারুক কবীর আহমেদ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে এই আসনটি পুনরুদ্ধারে তৎপর রয়েছেন। অপরদিকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সভাপতি এবং রংপুর সিটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ কাজী মোঃ মশিউর রহমান জাতীয় পার্টির পক্ষে একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন। এছাড়া জেলা জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে একাধিকবার জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী জেলা আমির ডাঃ আব্দুর রহিম সরকার দলের পক্ষে নির্বাচনের জন্য জনসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) ॥ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার ও জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত জনপ্রিয় নেতা এ্যাডভোকেট মোঃ ফজলে রাব্বী মিয়া এই আসনে একাধিকবার জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, এখনও করছেন। তাই তিনি এবারও মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের আসনটি ধরে রাখতে চান। সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এবং আ’লীগ দলীয় নেতাকর্মীদের একান্ত প্রত্যাশা এই আসনটিকে যে কোন মূল্যে ধরে রাখা। তবে প্রার্থিতা নিয়ে এ আসনটিতে দলের মধ্যে কিছুটা দ্বন্দ্ব-কোন্দল রয়েছে। এ আসনে ফজলে রাব্বি মিয়া ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জনপ্রিয় ছাত্রনেতা মাহমুদ হাসান রিপনও মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ওই দুটি উপজেলায় নেতাকর্মীদের নিয়ে তৃণমূল পর্যায় নিরলস নির্বাচনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। যাতে এই আসনটি আ’লীগের হাত ছাড়া না হয়। অপরদিকে জাতীয় পার্টির উপজেলা সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট এএইচএম গোলাম শহীদ রঞ্জু এবং গাইবান্ধা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাঘাটার ঘুড়িদহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার আতা এই আসনটি দখল করতে নির্বাচনী তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুন নবী টিটুল এই আসনে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা করছেন। গাইবান্ধা জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়ারেছেরও লক্ষ্য এই আসনটিতে দলকে বিজয়ী করা। এজন্য তাদেরও নির্বাচনী তৎপরতা থেমে নেই। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় জাসদের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ডাঃ একরাম হোসেন ও সিপিবির সাঘাটা উপজেলা সাধারণ সম্পাদক জোগেশ্বর বর্মণও নির্বাচনী প্রচারে তৎপর রয়েছেন।
×