ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী

অবরোধের নামে রাস্তায় নামা থেকে ছেলেদের ঠেকান

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ২ আগস্ট ২০১৮

অবরোধের নামে রাস্তায় নামা থেকে ছেলেদের ঠেকান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবরোধের নামে শিক্ষার্থীরা যাতে রাস্তায় নামতে না পারে সেই বিষয়ে ভূমিকা রাখার জন্য অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, বাস দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় ঘৃণা ও ধিক্কার জানাই। এমন ঘটনা কেউ সমর্থন করে না। এটি নিঃসন্দেহে বড় অপরাধ। কিন্তু এটাও বুঝতে হবে যে, দুর্ঘটনা ঘটার পর থেকেই সময়ক্ষেপণ না করে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে চলেছে সরকার। স্বল্প সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। অবৈধ ড্র্রাইভিং লাইসেন্সসহ অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালকদের লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশও দিয়েছে সরকার। বুধবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিশ^ মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। স্বাস্থ্য সচিব (স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ) সিরাজুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সচিব (স্বাস্থ্য শিক্ষা) জি এম সালেহ উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব (স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ) মোঃ হাবিবুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডাঃ এনায়েত হোসেন, ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডাঃ এস কে রায় প্রমুখ। স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নয়নের নানাদিক তুলে ধরে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাস্থ্যখাতে যুগান্তকারী সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রশংসিত হয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে। স্বাস্থ্যবিষয়ক সহস্র্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। দেশের সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক। এমন মজবুত অবকাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাত্রার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি, কমিউনিটি ক্লিনিক চালু, স্বাস্থ্যখাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম ইত্যাদি উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। দেশের ৯৯ ভাগ উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা। বর্তমানে প্রতিমাসে ৮০ থেকে ৯০ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা নেন। দেশে অনুর্ধ ১২ মাসের শিশুদের সকল টিকা প্রাপ্তির হার ৮১ ভাগ। হ্রাস পেয়েছে মাতৃ ও শিশুর মৃত্যুহার। বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি উপখাত সমূহের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব কর্মসূচীর মূল লক্ষ্য হলো জনগণের বিশেষ করে মহিলা, শিশু এবং সুবিধাবঞ্চিতদের স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেবা প্রাপ্তির চাহিদা বৃদ্ধি, কার্যকর সেবা প্রাপ্তি সহজলভ্য এবং স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেবা সমূহের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস, রোগের প্রাদুর্ভাব ও মৃত্যুর হার হ্রাস এবং পুষ্টিমান বৃদ্ধি করা। পোলিও ও ধনুষ্টঙ্কারমুক্ত হয়েছে দেশ। শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর হারও শতভাগে উন্নীত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানোর আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর হারের দিক দিয়েও পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। দু’বছর পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ পান করা শিশুর সংখ্যা বেড়ে ৮৭.৩ শতাংশ। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা শ্রীলঙ্কা ও কিউবার হার যথাক্রমে ৮৮ ও ৮৭.৫ শতাংশ। মায়ের দুধের পরিবর্তে কৌটা বা বাজারের দুধ খেলে শিশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ে, শিশু অপুষ্টির শিকার হয়। সরকারী বেসরকারী উদ্যোগে এ শিক্ষাটি ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। এতে মানুষের মধ্যে পুষ্টি ধারণা বাড়বে এবং অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশু ও মায়ের সংখ্যা কমে আসবে। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কোন গুঁড়া দুধ, শিশুখাদ্য, বাণিজ্যকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর পরিপূরক খাদ্য ও তা ব্যবহারের সরঞ্জামাদি নিবন্ধন ছাড়া আমদানি, স্থানীয়ভাবে উৎপাদন, বিক্রয় বা বিতরণ করা যাবে না। বিজ্ঞাপন মুদ্রণ, প্রদর্শন, প্রচার অথবা প্রকাশ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর শ্যামলীর টিবি হাসপাতাল পরিদর্শন ॥ বুধবার সকালে রাজধানীর শ্যামলীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালে পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। পরিদর্শনকালে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন, চিকিৎসাসেবার খোঁজ খবর নেন। তিনি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ্যাম্বুলেন্সসহ হাসপাতালের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণ প্রদানের আশ্বাস দেন মন্ত্রী। এ সময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচারক ডাঃ এনায়েত হোসেন, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের উপ-পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক ডাঃ আবু রায়হান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×