ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কারণ জানানো হয়নি

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১ আগস্ট ২০১৮

কারণ জানানো হয়নি

ভারতের অসম রাজ্যে সোমবার প্রকাশিত জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ ৪০ লাখ লোক। এর কারণ সরকারীভাবে জানানো হয়নি। রাজ্যের ৩ কোটি ৪৯ লাখ মানুষের মধ্যে ২ কোটি ৯০ লাখের নাম তালিকায় জায়গা পেয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এদিন বিপুলসংখ্যক নিরাপত্তা কর্মী প্রস্তুত রাখা হয়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। রেজিস্টার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (আরজিআই) ৪০ লাখ লোকের বাদ পড়ার কারণ সম্পর্র্কে প্রকাশ্যে কিছু বলবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে দেশটির ইলেকশন কমিশন যাদের সন্দেহজনক ভোটার হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং যারা কোন এক সময় বিদেশী, উপজাতি বা তাদের বংশধর হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ব্যতিক্রম। সন্দেহজনক ভোটার ও তাদের বংশধরদের ভোটের অধিকার ইতোমধ্যেই স্থগিত করা হয়েছে। যারা এই দুই শ্রেণীতে পড়েছে তাদের সংখ্যা আড়াই লাখ, তারা ইতোমধ্যেই জেনে গেছে যে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ গেছে। এছাড়া গতবছর ডিসেম্বরে প্রকাশিত খসড়া তালিকায় নাম ছিল কিন্তু সোমবার প্রকাশিত চূড়ান্ত খসড়া তালিকা থেকে বাদ গেছে তাদেরও এলওআইদিয়ে বিষয়টি অবহিত করা হবে। হতে পারে তারা পঞ্চায়েতের যে সনদ জমা দিয়েছে তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এলওআইতে আবেদন প্রত্যাখাত হওয়ার কারণ এবং কখন কোথায় নাম নতুন করে ওঠানোর জন্য আবেদন করতে হবে তার বিস্তারিত বিবরণ থাকবে। এ বিষয়ে অনুমতি চেয়ে এনআরসির রাজ্য সমম্বয়ক প্রতীক হাজেলা গত মাসে সুপ্রীম কোর্টেও কাছে আবেদন করেছিলেন এবং তার সেই আবেদন গৃহীত হয়। এর বাইরে এনআরসির তালিকা থেকে বাদপড়া লোকজনদের নতুন করে আবেদন করতে হবে। তারা আবেদনেনর জন্য ৭ আগস্ট থেকে ২৮ সেপ্টেম্বও পর্যন্ত সময় পাবে বলে রেজিস্টার জেনারেল শৈলাস জানিয়েছেন। শৈলাস গতবছর এনআরসির ফরমে ‘অরিজিন্যাল ইনহ্যাবিটেন্ট’ বা ‘প্রকৃত বসিন্দা’ নাম দিয়ে নতুন একটি ঘর সংযোজন করেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে পরে অনেক বিতর্ক হয়। কারণ প্রকৃত বাসিন্দা কারা তার কোন নির্দিষ্ট সঙ্গা নেই। ২০১০ সালে প্রথম এনআরসি তৈরির উদ্যোগ নেয়া হলেও সহিংসতার জন্য তখন কাজ শুরু করা যায়নি। সুপ্রীম কোর্টও এ বিষয়ে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। ২০১৫ সাল থেকে বর্তমান প্রক্রিয়াটি শুরু হয়। সোমবার ওই তালিকা প্রকাশ করে আরজিআই বলেন, ‘আমার মনে হয় জাতীয় নাগরিক তথ্য সূচী তৈরি করার জন্য তিন বছর যথেষ্ট সময়। আমার মনে হয় না পৃথিবীতে আর কোন দেশে এত সময় নিয়ে এ কাজ করা হয়েছে। তালিকা থেকে বাদ পড়াদের মধ্যে যারা আপত্তি জানাবে বা নাম অন্তুর্ভুক্তির দাবি করবে তাদের সহযোগিতা করা হবে বলে শৈলাস জানান। এদিকে মোদি সরকার আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছে অবৈধ অভিবাসীদের উচ্ছেদ করার জন্য তালিকা পুনর্র্মূল্যায়ন প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির জেনারেল সেক্রেটারি কৈলাস বিজয়বর্গিয়া বলেছেন,‘আসামের পর পশ্চিমবঙ্গেও এখন এ রকম নাগরিক তালিকা করা প্রয়োজন যেন বাংলাদেশ থেকে আসা লোকজনকে সহজে চিহ্নিত করা যায়।’ তিনি আরও বলেন আসামে যদি অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা ৪০ লাখ হয় তবে পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটি কোটির ওপর হবে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস নাগরিক তালিকার সমালোচনা করে বিষয়টি পার্লামেন্টে তুলেছে।
×