ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুই কোম্পানির আইপিও নিয়ে সমালোচনার ব্যাখ্যা দিয়েছে কমিশন

প্রকাশিত: ০৭:১৪, ৩১ জুলাই ২০১৮

দুই কোম্পানির আইপিও নিয়ে সমালোচনার ব্যাখ্যা দিয়েছে কমিশন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সম্প্রতি আইপিও অনুমোদন পাওয়া দুই কোম্পানির সমালোচনার বিষয়ে ব্যাখা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর মধ্যে সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপী ও অপর কোম্পানি কাট্টালি টেক্সটাইলের বিরুদ্ধে প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের আপত্তির বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি পৃথক দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাখ্যা প্রদান করেছে। ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালসের আইপিও চাঁদা গ্রহণ বাতিলের দাবি করে এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়ে আইডিএলসি ফাইন্যান্স একটি চিঠি বিএসইসিতে জমা দেয়। বিএসইসি বলছে, এই চিঠি গত সোমবার বিএসইসিতে জমা দেয় আইডিএলসি ফাইন্যান্স। এর পর দিন মঙ্গলবার চিঠিটি ক্যাপিটাল ইস্যু বিভাগে পাঠানো হয়। চিঠি পাওয়ার পর ক্যাপিটাল ইস্যু বিভাগ সঙ্গে সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে যোগাযোগ করে। এতে ওই দিনই আইডিএলসি ফাইন্যান্সের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম জামাল উদ্দিন কমিশনে উপস্থিত হন। এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। তাদের এই চিঠির বিষয়ে তিনি বলেন, সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালের কোন পরিচালক তাদের কোম্পানির কাছে ঋণখেলাপী নয়। তাদের কয়েকজন শেয়ারহোল্ডার অন্য প্রতিষ্ঠান আল আমিন বিস্কুটের নামে আইডিএলসি ফাইন্যান্স থেকে ঋণ গ্রহণ করেছেন। তাই কোম্পানিটির আইপিও বিধিসম্মতভাবে হয়েছে। তিনি আল আমিন বিস্কুটের নামে আইডিএলসি ফাইন্যান্স থেকে গ্রহণ করা ঋণ আদায়ের বিষয়ে বিএসইসির সহযোগিতা চান। পাশাপাশি কোম্পানিটির জমা দেয়া চিঠি প্রত্যাহার করে একটি অনুরোধপত্র কমিশনে জমা দেবেন বলে জানান তিনি। বিএসইসি আরও বলছে, সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালসের আইপিও সংশ্লিষ্ট বিধিমালা এবং অন্যান্য সিকিউরিটিজ আইন পরিপালনপূর্বক যথাযথভাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তাই ঋণখেলাপী নিয়ে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সত্য নয় বলে মনে করছে বিএসইসি। এর আগে অভিযোগ ওঠে সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালসের আইপিও অনুমোদন যথাযথ হয়নি। কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন রবিবার থেকে শুরু হয়েছে। এই চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। গত ১১ জুন বিএসইসির ৬৪৭তম কমিশন সভায় সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালসের আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৩ কোটি সাধারণ শেয়ার প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ইস্যু করবে কোম্পানিটি। আইপিও-এর মাধ্যমে কোম্পানিটি ৩০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। উত্তোলিত টাকা দিয়ে কোম্পানিটি যন্ত্রপাতি ও কলকব্জা ক্রয়, কারখানার ভবন নির্মাণ, ঋণ পরিশোধ এবং গণপ্রস্তাবের খরচ খাতে ব্যয় করবে। ৩০ জুন ২০১৭ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ১৬ টাকা ৪৮ পয়সা। আর শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা শূন্য ৩ পয়সা। উল্লেখ্য, কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে প্রাইম ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, ইম্পেরিয়াল ক্যাপিটাল লিমিটেড ও এসবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। অন্যদিকে সম্প্রতি কাট্টালি টেক্সটাইলের আইপিও অনুমোদনের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পর এ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসি বলছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জে কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলস ২০১৫ অনুযায়ী যে কোন কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) আবেদনের ৯০ দিনের মধ্যে এক্সচেঞ্জের চূড়ান্ত সুপারিশ কমিশনের নিকট দাখিল করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জসমূহ ওই সময়ের মধ্যে তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ দাখিল করে থাকে। পরবর্তীতে বিএসইসি, স্টক এক্সচেঞ্জসমূহের সুপারিশ উল্লেখিত আপত্তিসহ অন্যান্য তথ্যের ঘাটতি থাকলে অধিকতর বিস্তারিত পর্যবেক্ষণসহ সামগ্রিক ঘাটতি পূরণকল্পে প্রমাণাদি দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী কোম্পানিকে ঘাটতিপত্র ইস্যু করে থাকে। অতঃপর আবেদনকারী কোম্পানির তথ্য ও কাগজপত্রের যথাযথ ঘাটতি পূরণ ও যাচাই সম্পন্ন হলেই কমিশন কোন আবেদনকারী কোম্পানিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের অনুমোদন প্রদান করে থাকে। উল্লেখ্য, যে সব তথ্য বা দলিল ঘাটতির কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে কাট্টালি টেক্সটাইলের আইপিওর বিপক্ষে গত ২৫ মার্চ সুপারিশ প্রদান করেছিল, তা পরবর্তীতে কোম্পানি কর্তৃক দাখিলকৃত প্রমাণাদি ও কাগজপত্রের ভিত্তিতে পূরণ হয়। পাশাপাশি কমিশন সন্তুষ্ট হয়ে ২৬ জুন ওই আইপিও অনুমোদন প্রদান করে। এমনকি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে কাট্টালি টেক্সটাইলের আইপিওর পক্ষে চূড়ান্ত সুপারিশ প্রদান করে। ফলে কাট্টালি টেক্সটাইলের আইপিও প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি প্রসঙ্গে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যথাযথ নয় বলে মনে করে বিএসইসি। গত ২৬ জুন কাট্টালি টেক্সটাইলের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৩ কোটি ৪০ লাখ সাধারণ শেয়ার প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ইস্যু প্রস্তাব অনুমোদন করে কমিশন। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে এনআরবি ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
×