ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৬:১০, ৩১ জুলাই ২০১৮

ঢাকার দিনরাত

আজও শুরু করতে চাই সুসংবাদ দিয়ে; পীড়িতের জন্য ভাল খবরই তো প্রকৃত সুসংবাদ। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের রোগীদের জন্য অস্ত্রোপচার কক্ষ ছিল এতকাল মাত্র ২টি। চলতি সপ্তাহ থেকে তাতে যোগ হলো নতুন আরও চারটি। মোট ছয়টি ওটি বা অপারেশন থিয়েটার ২৪ ঘণ্টা রোগীদের জন্য প্রস্তুত থাকবে। আগে জরুরী বিভাগের ওটিতে রোগীর অস্ত্রোপচারের পরে তাকে নেওয়া হতো হাসপাতালের তৃতীয় তলায় অবস্থিত পোস্ট অপারেটিভ অথবা এইচডিইউতে। এখন নতুন ওটির পাশেই এ সাব ইউনিটগুলো থাকছে। হাসপাতালের একলামশিয়া ওয়ার্ডটি (১০৫ নং ওয়ার্ড) বর্তমানে নতুন অস্ত্রোপচার কক্ষ। ধন্যবাদ সংশ্লিষ্ট সকলকে, সেইসঙ্গে অনুরোধ আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দিন এবং সেবার মান বাড়ান। এবারে আশাহত হওয়ার কথা। শতাব্দীর দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ তথা রক্তবর্ণ চাঁদ দেখার সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল শুক্রবার। হলো না। শ্রাবণের মেঘের আড়ালে চাপা পড়ে গিয়েছিল সেই সৌন্দর্য। ঢাকায় জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরে চন্দ্রগ্রহণ দেখার আয়োজন করা হয়েছিল। কমলাপুরের স্টেডিয়ামে একটি বিজ্ঞান সংগঠন দূরবীক্ষণ যন্ত্র প্রস্তুত রেখেছিল। মেঘলা আকাশ আর বৃষ্টির কারণে সব আয়োজনই শেষ পর্যন্ত প- হয়। আগ্রহীরা বঞ্চিত হন রক্তিম চন্দ্রদর্শন হতে। শ্রাবণে বিড়ম্বনা প্রত্যেক শ্রাবণেই কি আমরা ঢাকাবাসী বিড়ম্বনার শিকার হব? গত মঙ্গলবার একটু বেশি সময় ধরে বৃষ্টি হয়েছিল। তাতেই ঢাকার প্রাণ ধুকপুক শুরু হয়ে যায়, মানুষের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। জলজট-যানজটে মঙ্গলবার ঢাকাবাসীর জন্য রীতিমতো অমঙ্গলময় হয়ে ওঠে। একেই বুঝি বলে অচলাবস্থা। বেলা বারোটার পর প্রায় তিন ঘণ্টা বৃষ্টি হয়, অঙ্কের হিসেবে ৫৯ মিলিমিটার। জলাবদ্ধতার জন্য কি এটি যথেষ্ট? তা নয়, তবু ঢাকার বহু স্থানে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। গত বছর এমন শ্রাবণ দিনেই কর্তৃপক্ষ আমাদের মন আর্দ্র করে দিয়েছিলেন আশার বাণী শুনিয়ে। বলা হয়েছিল পরের বছর ঢাকায় আর জলাবদ্ধতা হবে না। হায়, প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় বুঝি তা ভঙ্গের জন্যেই। এটা অস্বীকার করার কারণ নেই যে মেট্রোরেল প্রকল্পের কারণে ঢাকার অন্যতম মহাব্যস্ত সড়ক মিরপুর রোড এমনিতেই সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। যান চলাচলের জন্য যে পরিসরটুকু রয়েছে তা খানাখন্দে ভরপুর, ফলে যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। পনেরো মিনিটের হাঁটাপথ এদিন বাসে করেই পেরুতে সময় লেগে যায় দেড়-দু ঘণ্টা। ভোগান্তি বোঝানোর জন্যে এর বেশি কিছু বলার প্রয়োজন আছে কি? তবে এটুকু না বললেই নয়, ঢাকার অন্যতম প্রশস্ত সড়ক মানিক মিয়া এভিনিউ ভারি বর্ষণের ফলে তলিয়ে যায়, তার কয়েক শ’ গজ দূরে রাপা প্লাজার সামনের ও পাশের সড়কের পরিস্থিতিও ছিল তথৈবচ। দিনভর বজরায় কবিতাভ্রমণ বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথসহ বেশ ক’জন কালজয়ী সাহিত্যিক নদীর বুকে বজরায় বসে সাহিত্যচর্চা করতেন। নৌভ্রমণ বেশ আনন্দময় ব্যাপার, তবে সাহিত্যিকেরা এই ভ্রমণকে সাহিত্য রচনা ও পাঠের জন্যেও বেছে নেন মাঝেমধ্যে। উত্তরার কবিতাকেন্দ্রীক সংগঠন ‘উত্তরের হাওয়া’ এই শ্রাবণে ‘বজরায় বর্ষার কবিতা’ শীর্ষক অভিনব এক আয়োজন করে গত শুক্রবার। বৃষ্টি¯œাত সকালে উত্তরা থেকে বালু নদীর তীর পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টার যাত্রাশেষে সেখানে অপেক্ষমাণ বজরায় আসন গ্রহণ করেন আমন্ত্রিত ও সংগঠনের কবিবৃন্দ। বজরা ভাসাতে ভাসাতে জুম্মার আজানের ধ্বনি শোনা যায়। এরই মধ্যে চা-নাস্তা পর্ব শেষ হয়েছে। নামাজ পড়ার জন্যে কাছাকাছি ঘাটে বজরা ভেড়ানো হয়। আধ ঘণ্টা পরে আবার নৌযাত্রা। অনির্ধারিত কবিতাপাঠ ও গান গাওয়া চলতে থাকে অবিরাম যতোক্ষণ না দুপুরের আহার পরিবেশন করা হয়। ইটকাঠকংক্রিটের জঙ্গল থেকে ছুটি নিয়ে প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে বালু নদীর বুকে ভাসতে ভাসতে শীতলক্ষ্যার দিকে যাত্রাÑ সব মিলিয়ে চমৎকার এক আনন্দভ্রমণ। শ্রাবণের আকাশ দিনভরই ছিল মেঘলা, কখনো আবার নেমে আসে ঝমঝম বৃষ্টি। এরই মাঝে বিকেলের দিকে শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিক পর্ব। তিনটি অধিবেশনে কবিতাপাঠ চলে। প্রত্যেক অধিবেশনের নির্ধারিত কবির সংখ্যা ছিল পাঁচ, যদিও কোনো কোনো কবি প্রবল ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত যোগ দিতে পারেননি। সংগঠনের সভাপতি কবি হোসেন দেলওয়ার ও সমন্বয়ক কবি সোহেল হাসান গালিব পরামর্শ করে ঘোষণা দেন নির্ধারিত কবির বাইরেও কয়েকজন কবিতা পড়ার সুযোগ পাবেন। যাহোক, তিনটি কবিতা-অধিবেশন সঞ্চালনা করেন তিন কবি। নদীবক্ষে বরষার ভেতরে ঈর্ষণীয় এ আসরে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ বেশ জমে ওঠে। কবিতা পড়েন কাজল শাহনেওয়াজ, সৈয়দ তারিক, জুয়েল মাজহার, শোয়াইব জিবরান, চঞ্চল আশরাফ, অনিকেত শামীম, মাজুল হাসান, শিমূল সালাহউদ্দিন, সেঁজুতি বড়ুয়া, হাসান রোবায়েত, সালেহীন শিপ্রা, ফারহানা রহমান প্রমুখ। বজরায় কবিতা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন শেখ ফিরোজ আহমেদ, রহিমা আফরোজ মুন্নী, ইখতিয়ার হোসেন, সঞ্জীব পুরোহিত, অনন্ত সুজন, সাধনা আহমেদ, মোক্তার হোসেন, অনিরুদ্ধ দিলওয়ার, পারভীন মিনু, রাশেদ মামুন, শিলাবৃষ্টি, রুদ্র আমিন, হাসনাইন হীরা, রকিব লিখন প্রমুখ। উপস্থিত সবাই একবাক্যে স্বীকার করবেন বজরায় বর্ষার কবিতা আয়োজনটি স্মরণীয় এক অভিজ্ঞতা। যানজট কমাতে ইউলুপ যানজটবহুল সড়কে যানজট কমাতে ইউলুপ টেকনিক বেশ কাজে আসে। ইউলুপ পদ্ধতিতে যানবাহনগুলো রাস্তার ক্রসিং মোড়ে এসে উল্টো দিকে যেতে বৃত্তাকার পথ ব্যবহার করে ইউটার্ন নিয়ে থাকে। অর্থাৎ ইউলুপ এক ধরনের ইউটার্নই; অভ্যন্তরীণ ইউটার্ন বলা যেতে পারে। ক্রসিংয়ের কাছাকাছি সড়কের ভেতরে বিশেষ এক ধরনের ইউটার্ন, যাতে করে কোনো সড়কে আর সিগন্যালের প্রয়োজন পড়ে না। যে কারণে সিগন্যাল বাতি বা ট্রাফিক পুলিশেরও প্রয়োজন থাকে না। যে কোনো চার রাস্তার ইন্টার-সেকশনের ক্ষেত্রে সুবিধা মতো উত্তর-দক্ষিণ বা পূর্ব-পশ্চিম এর যেকোনো একটি সড়ক দিয়ে সরাসরি গাড়ি চলাচল করে। সরাসরি চলাচল নিশ্চিত করতে নির্ধারিত সড়কে স্থায়ী ডিভাইডার স্থাপন করা হয়। যারা সরাসরি যেতে পারবে না, তাদের জন্য প্রতিটি সড়কে অভ্যন্তরীণ ইউটার্ন থাকবে, আর এটাই ইউলুপ। রাজধানীর যানজট কমাতে গাজীপুর থেকে হাতিরঝিল পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সড়কে রাইটটার্ন ও ইউটার্ন বন্ধ করে ২২টি ইউলুপ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন বছর তিনেক আগে। অবশ্য ঢাকাবাসী এর সূচনা পর্যায়ে দেখেছেন হাতিরঝিল সংলগ্ন সমন্বিত ইউলুপ স্থাপনা নির্মাণের কর্মযজ্ঞ। মালিবাগ-নতুনবাজারের মধ্যকার যানজট কমাতে হাতিরঝিল প্রকল্পের সঙ্গে দুটি ইউলুপ যুক্ত করা হয়। একটি ইউলুপ রামপুরা টেলিভিশন ভবনের সামনে, যা গত বছরের ২৫ জুন চালু হয়েছে। দ্বিতীয়টি বাড্ডা ইউলুপ, যেটি গত শনিবার খুলে দেয়া হলো। গুলশান-বাড্ডা সংযোগ সড়কের কাছে মেরুল বাড্ডায় এটির অবস্থান। সাড়ে ৪০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার প্রস্থের এই ইউলুপ তৈরিতে বাজেট ছিল ৪০ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের মাঝামাঝি শুরু হওয়া কাজ দুই বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নানা আইনি এবং পরিষেবা সংস্থার ভেতর সমন্বয়সাধনে দেরি হওয়ায় কিছুটা বিলম্বিত হয় এটির উদ্বোধন। বাড্ডা ইউলুপ চালুর ফলে একদিকে যেমন মালিবাগ-প্রগতি সরনী দিয়ে নগরের উত্তর অভিমুখী যানবাহনগুলোর ভোগান্তির অবসান হয়েছে, তেমনি এই স্থাপনা নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর ঝক্কিঝামেলারও ইতি ঘটেছে। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন এই রুটে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ যানজট কমে আসবে। প্রতিদিনই যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট হয় ঢাকার সড়ক ব্যবহারকারীদের। সরকারী সংস্থাগুলোর নানা উন্নয়ন ও উদ্যোগেও কমানো যায়নি এই মহাজট। দেখা যাক ইউলুপ কেমন ম্যাজিক দেখায়। ঢাকায় কমলা ভাসিন দক্ষিণ এশিয়ার বিশিষ্ট নারীবাদী লেখক-গবেষক কমলা ভাসিনের আগেও বেশ অনেকবারই বাংলাদেশে এসেছেন। এবারও ঢাকায় এসে কথা প্রসঙ্গে বললেন, এখানে এলে যে শ্রদ্ধা-ভালবাসা পাই তাতে মনে হয় আমি নিজের ঘরেই এসেছি। তিনি এলে আনুষ্ঠানিকভাবে এখানকার নারী লেখক এবং এক্টিভিস্টদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নারীবাদী গণআন্দোলন মঞ্চ ‘উদ্যমে উত্তরণে শতকোটি’ শনিবার বিকেলে ছায়ানট মিলনায়তনে ‘কমলার সঙ্গে কথোপকথন’ শিরোনামে এক উন্মুক্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ঘৃণা নয়, ভালবাসা দিয়ে ভয়মুক্ত হয়ে নিজেদের বদলে ফেলার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, নিজে যদি না বদলাই, পৃথিবী বদলাবে না। আমি-পরিবার এসব নিয়েই পৃথিবী। যদি ঘরে বাস করা ব্যক্তি না বদলায়, তা হলে ঘরও বদলাবে না। এই ঘর পুরুষতান্ত্রিক। এখানে যারা আছি, আমরাই এ ঘর বানিয়েছি। সবাই এ অভিযোগে অভিযুক্ত। তাই যে কোন বিষয়ে অন্যের দিকে আঙুল তোলার আগে নিজের সমালোচনা করতে হবে। নিজের দিকে আঙুল তুলতে হবে। তিনি বলেন, নারীকে যুদ্ধ করতে হচ্ছে পুঁজিবাদের সঙ্গে, প্রথার সঙ্গে, নোংরা রাজনীতির সঙ্গে, ধর্মীয় মৌলবাদের সঙ্গে। স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা রাজধানীর শাহজাহানপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে দশম শ্রেণীর এক মেধাবী ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে মেয়েটির স্কুলের একজন শিক্ষিকাকে আইনের আওতায় আনা হযেছে। পরীক্ষার হলে তিনি ছাত্রীর খাতা কেড়ে নেন। এত ছোট একটি বিষয়ে একটি কিশোরী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়ার ঘটনা আমাদের বিমূঢ় করে দেয়। সুনির্দিষ্টভাবে এই ঘটনা নিয়েই মন্তব্যে যাচ্ছি না। এ ধরনের ঘটনা যেন আমরা এড়াতে পারি সেই শুভবোধ থেকেই কিছু কথা বলার চেষ্টা করা। প্রথমত পরিবারে অভিভাবক ও বড়দের কিছু দায়-দায়িত্ব আছে। অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা যে কোন ধরনের অসহনীয় অপমানের কারণে যাতে আত্মহননের মতো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিতে পারে সে জন্যে তাদের সামনে কিছু ভাল উদাহরণ উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষকদেরও একই ধরনের কাজ করা সমীচীন। সব কিছুর ওপরে জীবন বড়, পরীক্ষায় খারাপ করলে ভাল করার সুযোগ আছে, মারা গেলে তো সব পথই রুদ্ধ হয়ে যায়। শিক্ষক ও অভিভাবক উভয় পক্ষেরই বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে অল্পবয়সী আবেগপ্রবণ ছেলেমেয়েদের শাসন করার বেলায়। সত্যি বলতে কি, আমরা নাগরিক জীবনে কোমলপ্রাণ সন্তানদের ওপর পরীক্ষায় ভাল ফল করার জন্য এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করে থাকি। আবার প্রেমের মতো আবেগময় সম্পর্কে জড়িয়েও ছেলেমেয়েরা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে যারা কাজ করেন তারা পরোক্ষভাবে কৌশলে এমন কিছু সৃষ্টি করতে পারেন যা থেকে অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা এমন বার্তা ও শিক্ষা পাবে যা তাদেরকে সম্ভাব্য ধ্বংসের পথ থেকে ফিরিয়ে আনার কাজটি করবে। পরিবারের সন্তানের স্বেচ্ছামৃত্যু কোনক্রমেই মেনে নেয়া যায় না। তাই আমাদেরই উপায় বের করতে হবে তাদের বাঁচানোর। ঢাকার আংশিক বাজেট এবং বাড়ি বাড়ি লার্ভা! নগর ভবনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে গত সপ্তাহে। এবারের বাজেট ৩ হাজার ৫৯৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার। যা গত অর্থবছরের চেয়ে ২৬১ কোটি ৮ লাখ টাকা বেশি। তবে নতুন এ বাজেটে কর (হোল্ডিং, পরিচ্ছন্ন, লাইটিং) বাড়ানো হয়নি। এবার প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৮৬০ কোটি ২৩ লাখ টাকা, যা এবারের বাজেটের ৮০ শতাংশ। এ ছাড়া মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে এবার ২৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। গত বছর এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। তবে সংশোধিত বাজেটে ১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া চলতি অর্ধবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে কর (হোল্ডিং, পরিচ্ছন্ন, লাইটিং) ধরা হয়েছে ৩৩০ কোটি টাকা। এবারের কর গত অর্থবছরের তুলনায় ১৮৫ কোটি টাকা কম। এর মধ্যে আদায় করা হয়েছিল ১৮০ কোটি টাকা। কর কম ধরার কারণ সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে ডিএসসিসি মেয়র অবশ্য কোন ব্যাখ্যা দেননি। অপরদিকে শনিবার ডিএসসিসির মেয়র নাগরিকদের একটি ভয়াবহ তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ধানম-ি, কলাবাগান, সেগুনবাগিচা ও মিন্টো রোড এলাকায় ৪৫ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। তার মানে ওইসব এলাকার প্রায় অর্ধেক বাড়ির বাসিন্দারাই চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগের ঝুঁকির মধ্যে আছেন। এ তো রীতিমতো ভয়ঙ্কর কথা! এইসব এলাকায় করপোরেশনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়েছিল। তাই জানা গেছে বাস্তব পরিস্থিতি। কিন্তু যেসব এলাকায় অভিযান বা নিরীক্ষা চালানো হয়নি সেগুলোর কী অবস্থা? নাগরিক সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। কিন্তু সেই সচেতনতা সৃষ্টির জন্য কার্যকর উদ্যোগ তো নিতে হবে। ব্যর্থ হলে গত বছরের মতো ভয়ানক স্বাস্থ্যগত সমস্যার ভেতর নগরবাসী ফের পড়বে না তো? ২৯ জুলাই ২০১৮ [email protected]
×