ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নকল সেলাই মেশিন তৈরি ও বাজারজাত, তিনজন গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৩১ জুলাই ২০১৮

নকল সেলাই মেশিন তৈরি ও বাজারজাত, তিনজন গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নকল সেলাই মেশিন তৈরি ও বাজারজাত করার সঙ্গে জড়িত তিন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ বিভাগ সিআইডি। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৮৪টি সেলাই মেশিন। উদ্ধারকৃত নকল সেলাই মেশিনগুলোর গায়ে বাটারফ্লাই ও সিঙ্গার সেলাই মেশিনের স্টিকার লাগানো। জব্দকৃত মেশিনগুলো যে নকল, তা সহজেই ধরার কোন উপায় নেই। সেলাই মেশিন নকল করে বিক্রি করার বিষয়টি একেবারেই নতুন। নিকট অতীতে নকল বাটারফ্লাই বা সিঙ্গার সেলাই মেশিন বিক্রির সঙ্গে জড়িত কেউ গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। গত রবিবার সিআইডি পুলিশের একটি দল ঢাকার কোতোয়ালি থানাধীন পাটুয়াটুলী লেনের ৮ নম্বর বাড়িতে বিশেষ অভিযান চালায়। অভিযানে গ্রেফতার হয় মোঃ সাকিব হোসেন (১৯), মোঃ হেলাল (১৯) ও মোঃ রাকিব হোসেন (২০) নামের তিন তরুণ। তাদের কাছ থেকে ৫৩টি নকল বাটারফ্লাই সেলাই মেশিন, ৩ টি নকল সিঙ্গার সেলাই মেশিন, বাটারফ্লাই সেলাই মেশিনের ৫০টি স্টিকার ও ১৮টি বার্ডফ্লাই সেলাই মেশিন জব্দ হয়। অভিযানের সার্বিক তদারকের দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার এনামুল কবীর জনকণ্ঠকে জানান, বাজারে থাকা বিভিন্ন পণ্যের ওপর মনিটরিং করা হয়। মনিটরিং করতেই গিয়েই প্রথম তাদের বাটারফ্লাই ও সিঙ্গারের মতো নামীদামী কোম্পানির সেলাই মেশিন নকল বিক্রির বিষয়টি নজরে আসে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকেও সিঙ্গার ও বাটারফ্লাইয়ের সেলাই মেশিন সম্পর্কে অভিযোগ পাওয়া যায়। সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে গিয়ে নকল মেশিন বাজারজাত করার বিষয়টি সামনে চলে আসে। এ বিষয়ে সিআইডির তরফ থেকে ঢাকার কোতোয়ালির থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়। সেই মামলায় গ্রেফতারকৃতদের আসামি করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, গ্রেফতারকৃতরা প্রায় আট মাস ধরে ওই বাড়িতে গড়ে তোলা নকল কারখানাটিতে চাকরি করছিল। তাদের প্রধান কাজই হচ্ছে, সাধারণ সেলাই মেশিনে বাটারফ্লাই ও সিঙ্গার কোম্পানির নকল স্টিকার লাগানো। তারা অত্যন্ত নিখুঁতভাবে স্টিকারগুলো লাগাত। স্টিকার লাগানোর পর কারও পক্ষেই মেশিনগুলো যে নকল, তা ধরার কোন উপায় ছিল না। নকল মেশিনগুলো চীন থেকে আমদানি করা হতো। এসব মেশিনে নকল স্টিকার লাগানোর পর দেশের বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করা হতো। তবে গ্রেফতারকৃতরা সাধারণত সিঙ্গার বা বাটারফ্লাইয়ের নিজস্ব শোরুমে সরবরাহ করত না। প্রতিদিন কারখানাটিতে শতাধিক মেশিনে নকল স্টিকার লাগিয়ে সেগুলো সিঙ্গার ও বাটারফ্লাইয়ের সেলাই মেশিন হিসেবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করত। তাদের সারাদেশে বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে। নকল এই ব্যবসার মূল হোতা মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মোঃ শাহিন। তারা পলাতক। তাদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যেই চক্রটি সিঙ্গার ও বাটারফ্লাইয়ের নকল মেশিন বিক্রি করে কোটি কোটি হাতিয়ে নিয়েছে।
×