ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৩১ জুলাই ২০১৮

কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে একটি ট্রাস্টের অধীনে আনার লক্ষ্যে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন-২০১৮’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, ট্রাস্টের তহবিল ব্যবহার করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা এবং অন্যান্য হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে কার্যকর রেফারেল ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই এই আইনের লক্ষ্য। প্রকল্পের আওতায় মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো এই ব্যবস্থায় ট্রাস্টের আওতায় সরকারী-বেসরকারী অর্থায়নের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। পাশাপাশি মন্ত্রিসভায় জনানো হয়েছে মন্ত্রিসভার ত্রৈমাসিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এন এম জিয়াউল আলম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নীতিগত অনুমোদনের জন্য আইনটি উপস্থাপন করা হলেও বিস্তারিত আলোচনার পর কিছু সংশোধন সাপেক্ষে এটি চূড়ান্ত অনুমোদনের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। জিয়াউল আলম বলেন, সারাদেশেই কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্যসেবায় অত্যন্ত সহযোগী ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে স্বাস্থ্যসেবা যে অগ্রগতি তা কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্যই অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। সারাদেশে ১৪ হাজার ৮৯০টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এই পর্যন্ত ক্লিনিকগুলো থেকে সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা ৬২ কোটি ৫৭ লাখ। তিনি বলেন, বর্তমানে ১৩ হাজার ৮৬১টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। আরও এক হাজার ২৯টি বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ নিয়ে ১৪ হাজার ৮৯০টি হবে। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। এই আইন হলে ক্লিনিকগুলো ট্রাস্টের আওতায় চলে আসবে। আইনের খসড়ায় প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি ন্যাশনাল এ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠনের কথা বলা আছে জানিয়ে জিয়াউল আলম বলেন, কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইনের খসড়া করা হয়েছে। এখন ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত হবে। ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। ট্রাস্টের তহবিল ব্যবহার করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেয়া। এজন্য প্রয়োজনীয় সামাজিক সহযোগিতা গ্রহণ, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সম্পদ ও অনুদান সংগ্রহ এবং এর সুষ্ঠু ব্যবহারের কথা বলা আছে। ট্রাস্টে যে কেউ অনুদান দিতে পারবেন জানিয়ে জিয়াউল আলম বলেন, সরকারী থোক বরাদ্দ থাকবে, অনুদান থাকবে। পাশাপাশি বেসরকারীভাবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে, স্থানীয় সামাজিক সংগঠন বা ব্যক্তি বিশেষ এখানে দান অনুদান করতে পারবেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে কিছু বলা আছে কি না- জানতে চাইলে বলেন, না এ বিষয়ে কিছু বলা নাই। সচিব বলেন, ট্রাস্টে একটি উপদেষ্টা পরিষদ থাকবে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী সভাপতি হবেন। এছাড়া একটি বোর্ড থাকবে। যিনি বোর্ডের প্রধান হবেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী মনোনীত খ্যাতিমান ব্যক্তি। তিনি বোর্ডের সভাপতি হবেন। বোর্ড গঠনের বিবরণ আইনে রাখা হয়েছে। বোর্ডে একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকও থাকবেন। তার পদমর্যাদা হবে সরকারের অতিরিক্ত সচিব বা সমমর্যাদার। বোর্ডের সদস্য সংখ্যা হবে ১৪ জন। মন্ত্রিসভার ত্রৈমাসিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ॥ চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল থেকে জুন) মন্ত্রিসভায় নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৭৫ শতাংশ। এর আগের বছর একই সময়ে এ হার ছিল ৭১ দশমিক ৬২ শতাংশ। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। মন্ত্রিসভা বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০১৮ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (এপ্রিল-জুন) প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এন এম জিয়াউল আলম এ তথ্য জানান। বৈঠকে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সিরিজ জয়ে একটি অভিনন্দন প্রস্তাব উত্থাপিত ও গৃহীত হয়। এছাড়া, বৈঠকে জাতীয় সংসদের খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক হুইপ এবং খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যুতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রথম মন্ত্রী, সাবেক সংসদ সদস্য এবং খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কল্পরঞ্জন চাকমার মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
×