ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রবীন্দ্র প্রয়াণ দিবসে প্রাঙ্গণেমোরের দুই নাটকের মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৩০ জুলাই ২০১৮

রবীন্দ্র প্রয়াণ দিবসে প্রাঙ্গণেমোরের দুই নাটকের মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু দিবস উপলক্ষে তার স্মরণে প্রাঙ্গণেমোর নাট্যদল তাদের দুটি প্রযোজনা মঞ্চায়ন করতে যাচ্ছে। দুটি নাটকই নির্দেশনা দিয়েছেন নূনা আফরোজ। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৫ আগস্ট বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মূল হলে সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চায়ন হবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত উপন্যাস শেষের কবিতা অবলম্বনে নাটক ‘শেষের কবিতা’ এবং ৬ আগস্ট মহিলা সমিতি মিলনায়তনে মঞ্চায়িত হবে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে নূনা আফরোজের লেখা নাটক ‘আমি ও রবীন্দ্রনাথ’। প্রাঙ্গণেমোরের ‘আমি ও রবীন্দ্রনাথ’ নাটকটি রচনা, নির্দেশনা, পোশাক ও মঞ্চ পরিকল্পনার পাশাপাশি নাটকের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ও করেন নূনা আফরোজ। এ ছাড়া নাটকটিতে আরও অভিনয় করেন অনন্ত হিরা, আউয়াল রেজা, রামিজ রাজু, তৌহিদ বিপ্লব ও সরোয়ার সৈকত। সঙ্গীত পরিকল্পনায় রামিজ রাজু ও আলোক পরিকল্পনায় তৌফিক রবিন। নাটকের কাহিনীতে দেখা যায়, অথৈ একদিন তার বন্ধুর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিধন্য কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে বেড়াতে যায়। কুঠিবাড়ি দেখতে দেখতে এক সময় অথৈ একাই দোতলার সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠে যায়। হঠাৎ অথৈয়ের সামনে এসে হাজির হন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। তিনি অথৈকে কুঠিবাড়ি ঘুরিয়ে দেখার আহ্বান জানান। অথৈ ভুলে যায় তার বন্ধুসহ পৃথিবীর সবকিছু। সে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে কথা বলতে থাকে। অথৈয়ের সামনে পর পর হাজির হয় ২৯ বছর, ৬৯ বছর, ২১ বছর ও ৮০ বছরের ভিন্ন ভিন্ন রবীন্দ্রনাথ। এই চার বছরের রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে অথৈয়ের কথা হয় সেই সময়ের রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিজীবন ও তার সৃজনশীলতা নিয়ে। আর রবীন্দ্রনাথের প্রতিটি বয়সের সঙ্গে অথৈও বদলে যেতে থাকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র ও বয়সে। বিভিন্ন বয়সী রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে অথৈয়ের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকর্ম ও তার ব্যক্তিজীবনের নানা দিক। অন্য দিকে ‘শেষের কবিতা’ নাটকে অভিনয় করেছেন- নূনা আফরোজ, অনন্ত হিরা, রামিজ রাজু, শুভেচ্ছা রহমান, আউয়াল রেজা, সরোয়ার সৈকত, মাইনুল তাওহীদ, চৈতালী হালদার, জাহিদ, ঊষা, আশা, রিগ্যান, সীমান্ত, মনির, বিপ্লব, বাধন ও টুসি। ‘শেষের কবিতা’ নাটকটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৬৮ বছর বয়সে লেখা বহুলপঠিত একটি বিখ্যাত প্রেমের উপন্যাস শেষের কবিতার নাট্যরূপ। শিলং পাহাড়ের পথে বিপরীতমুখী দুটি গাড়ির পরস্পর আকস্মিক দুর্ঘটনায় পরিচয় হয় বিলেত ফেরত ব্যারিস্টার অমিত রায় ও লাবণ্যের। নির্জন পাহাড়ের সবুজ অরণ্য ঘেরা দুর্লভ অবসরে দুজন দুজনকে দেখে মুগ্ধ হয়। যার পরিণতি ভালবাসায়। যে লাবণ্য কেবলই বই পড়বে আর পাস করবে, এমনি করেই তার জীবন কাটবে ভেবেছিল সেই লাবণ্য হঠাৎ আবিষ্কার করল সেও ভালবাসতে পারে। আর অমিত তো মেয়েদের কাছে সোনার রঙের দিগন্ত রেখা, ধরা দিয়েই আছে, তবু ধরা দেয় না। রুচির তৃষ্ণা মিটিয়ে কত সুন্দরী মেয়েদের পাশ কাটিয়ে এসেছে এতকাল। সেই অমিত বন্দী হলো লাবণ্যের প্রেমে। অমিত লাবণ্যকে বিয়ে করতে অস্থির হয়ে উঠে। কিন্তু লাবণ্যের মন তাতে সায় দেয় না। অনেক তর্ক-বিতর্ক, মান-অভিমানের পর অমিত লাবণ্যের বিয়েটা যখন অনিশ্চয়তার দোলাচলে দুলতে দুলতে সিদ্ধান্তে পৌঁছায়, ঠিক সেই সময় অমিতের বন্ধু কেতকী শিলং গিয়ে উপস্থিত হয়। কেতকীর সঙ্গে বিলেতে থাকার সময় অমিতের একটা গভীর মুগ্ধতার সম্পর্ক ছিল এবং সে সময়টাতে অমিত কেতকীকে ভালবেসেই একটি আংটি পরিয়েছিল। লাবণ্যের সঙ্গে অমিতের বিয়ের খবর শুনে কেতকী সে আংটি খুলে রাগে-অভিমানে অশ্রুসিক্ত নয়নে শিলং ছেড়ে চেরাপুঞ্জি চলে যায়। অমিত যে আংটিটি লাবণ্যকে পরিয়েছিল সেটিও লাবণ্য ফিরিয়ে দেয় অমিতকে অর্থাৎ অমিত দুজনের কাছ থেকেই প্রত্যাখ্যাত হয়। অমিত কি করবে ভেবে পায় না। ক’দিন পর চেরাপুঞ্জি থেকে ফিরে এসে অমিত দেখে লাবণ্য চলে গেছে শিলং ছেড়ে। অমিত ফিরে যায় কলকাতায়। তারও কিছুকাল পরে অমিতের সঙ্গে বিয়ে হয় কেতকীর এবং তারও কিছুদিন পর লাবণ্যের একটি চিঠি আসে অমিতের কাছে। সে চিঠির একপাশে ছয় মাস পর শোভনলালের সঙ্গে লাবণ্যের বিয়ের খবর। আর চিঠির অন্যপাশে অমিতের জন্য লেখা একটি দীর্ঘ কবিতা- যেন বহতা দীর্ঘশ্বাস।
×