ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মির্জা ফখরুল ইসলামকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের

‘সরকারের লোক হিসেবে চিহ্নিত হবার ভয়ে তিনি আমাকে ফোন করবেন না’

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৩০ জুলাই ২০১৮

   ‘সরকারের লোক হিসেবে চিহ্নিত হবার ভয়ে তিনি আমাকে ফোন করবেন না’

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোন সুযোগ বা সম্ভাবনা নেই। এ সময় কী সংলাপ করব? আর আমাদের দেশের বাস্তবতা এখন যা এখানে রাজনৈতিক অঙ্গনে কোন সহিংসতা, হিংসা-বিদ্বেষ বা তিক্ততা এসব বিষয়ে ওপেন বহির্প্রকাশ এখন নেই। কাজেই আলোচনাটা কেন? তবে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা ভাল। টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে অনেক কঠিন সম্পর্কেরও বরফ গলে।’ রবিবার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ‘সংলাপের জন্য বিএনপি সব সময়ই প্রস্তুত রয়েছে’ মর্মে সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোন শর্ত দিলে ফোন দিতে রাজি নই। আমি কল করলে উনি (মির্জা ফখরুল) কল করবেন এটা শর্তযুক্ত। এটা কোন রাজনৈতিক ভাষা হতে পারে না। সেক্রেটারি টু সেক্রেটারি এখানেও উনি শর্ত জুড়ে দিলেন। এ রকম কনভারসেশনের (আলোচনা) কি কন্ডিশন (শর্ত) আরোপ করা উচিত? এভাবে আচরণ করলে দ্বার বন্ধ হবে। কথা হতে পারে যে কোন সময়, তবে কোন কন্ডিশন আমি মানব না। তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা যদি জিতি তাহলে ওয়েলকাম, হেরে গেলেও লজ্জা নেই। রাজনীতির জোয়ার-ভাটা আমাদের কি ভাটা আসতে পারে না? আমরাই জিতব এ অহংবোধ আমাদের মধ্যে নেই। তিনি বলেন, তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হবে। কিন্তু বিএনপি যদি না জেতে তাহলে ভাল হবে না। আমি জানি না এই সংস্কৃতি থেকে তারা কবে বেরিয়ে আসবে। বিএনপি হারলে তারা নালিশ করবে। এতেই তারা সীমাবদ্ধ। জিতলে ভাল, আর না জিতলে নির্বাচন ভাল নয়- এই সংস্কৃতি থেকে বিএনপিকে বেরিয়ে আসার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি। বিএনপি মহাসচিব কখনও নিজে থেকে তাকে ফোন দেননি জানিয়ে তার অসুবিধা বুঝেন বলেও উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমি জানি তার অসুবিধা আছে। এমনিতেই তাদের অফিসের মধ্যে একে অপরকে বলেন উনি সরকারের দালাল। ফলে এ কারণেও হয়ত উনি আমাকে ফোন করেন না। আবার আমার কাছে ফোন করে তিনি লন্ডনের তোপের মুখে পড়েন কি না সেটাও তো একটা বিষয় আছে। তবে আমি মনে করি এ টেলিফোন কনভারসেশনটা দরকার আছে।’ সিপিবির সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সিপিবির নেতৃত্বাধীন ৮ দলীয় জোট আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন কোন জোটে যোগ দেবে না বলে জানিয়েছে। আগামী নির্বাচনে সিপিবি জোট অংশ নেবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, তারাও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। এই চেতনাকে ধারণ করেই তারা আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে। কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গেও কথা হয়েছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেই সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন। আর কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি একেবারেই রাজনৈতিক নয়। আমাদের একটা সম্পর্ক আছে। তিনি বাংলাদেশের একজন বীর উত্তম মুক্তিযোদ্ধা। তাছাড়া তিনি একসময় আমাদের মন্ত্রণালয়ে কাজ করতেন। কনস্ট্রাকশনের কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এখানে ওনার কিছু পাওনা আছে। সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমি বলেছি আপনার যেটা পাওনা আছে সেই বিষয়ে যে কাগজপত্র আছে তা আমার পিএস এর কাছে দিতে। যেটা পাওনা আছে সেটা তো দিতে হবে। যথাযোগ্য মর্যাদায় ১৫ আগস্ট পালনের আহ্বান ॥ এদিকে, রবিবার এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবাযদুল কাদের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী, জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালনের জন্য দেশবাসী, আওয়ামী লীগ এবং তার সকল সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সংস্থাসমূহের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দলের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডসহ সমস্ত শাখার নেতৃবৃন্দকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচী গ্রহণ করে দিবসটিকে পালন করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
×