ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিসিএস পরীক্ষা ছাড়া শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত: ০৫:২০, ৩০ জুলাই ২০১৮

 বিসিএস পরীক্ষা ছাড়া শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নামসর্বস্ব মানহীন বেসরকারী কলেজ জাতীয়করণের বিতর্কের পর ওই কলেজের শিক্ষকদের ‘বিসিএস ক্যাডার’ স্বীকৃতির উদ্যোগে সঙ্কট বাড়ছে শিক্ষা প্রশাসনে। বিসিএস পরীক্ষা ছাড়া মানে প্রশ্নবিদ্ধ বেসরকারী শিক্ষকদের বিসিএস ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে অন্যতম বৃহত পেশাজীবী ক্যাডার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। ‘নো বিসিএস, নো ক্যাডার’ সেøাগান নিয়ে আন্দোলনরত সমিতির নেতৃবৃন্দ রবিবার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, শিক্ষার সম্প্রসারণে সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে জাতীয়করণ হওয়া কলেজ শিক্ষকদের শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হওয়াকে কোনভাবেই মেনে নেবেন না তারা। জানা গেছে, দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ হওয়া কলেজ শিক্ষকদের ‘নন-ক্যাডার’ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছেন। বেসরকারী কলেজ শিক্ষকদের পক্ষ থেকেও এতদিন তেমন কোন দাবি আসেনি যে তাদের ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাদের দাবি তাদের কলেজ সরকারী করে সুযোগ-সুবিধা সরকারী অনুসারে দিতে হবে। এক্ষেত্রে নন-ক্যাডার পদমর্যাদা নিয়েই আলোচনা ছিল সব সময়। তবে অভিযোগ উঠেছে আমলাদের একটি গ্রুপ নানা বিধিমালার দাহাই দিয়ে তাদের ‘বিসিএস ক্যাডার’ স্বীকৃতি দিতে উদ্যোগী হয়েছেন। আত্তীকরণ বিধিমালা ২০১৮ তৈরি করে এ কাজটি করা হচ্ছে বলে তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে প্রস্তাবিত আত্তীকরণ বিধিমালা ২০১৮-এর ক্যাডারভুক্তির ধারা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। সমিতির নেতারা বলেছেন, নব্য জাতীয়করণকৃত সরকারী কলেজ শিক্ষকদের শিক্ষা ক্যাডারে মেনে নেয়া হবে না। শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান না হলে আবারও শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষক-কর্মকর্তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব শাহেদুল খবির চৌধুরী, সহ-সভাপতি সুকুমার দত্ত, যুগ্ম সচিব মাসুদা বেগম, দফতর সচিব সৈয়দ মইনুল হাসান, প্রচার সচিব মোঃ কামাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সচিব শহীদুল ইসলাম, কোষাধক্ষ খান রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত ২৮৫ কলেজের শিক্ষকদের নন ক্যাডার করে সরকারীকরণ করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত সম্মতি দিয়েছেন। এক মাসের মধ্যে একটি বিধি জারি করা হবে। কিন্তু এই বিধিতে বেসরকারী শিক্ষকদের নন-ক্যাডার করা হলেও পরবর্তীতে তাদের একটি ভিন্নধর্মী পরীক্ষার মাধ্যমে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকবে। তবে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের মৌলিক বিধিমালার ব্যত্যয় ঘটিয়ে নিয়মিত, উন্মুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও উত্তীর্ণ হওয়া ব্যতিরেকে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত করার চেষ্টা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। সভাপতি অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, নন-ক্যাডার শিক্ষকদের ক্যাডারভুক্ত না করতে আমরা দীর্ঘদিন প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আমাদের দাবি মেনে নিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, জাতীয়করণভুক্ত শিক্ষকরা শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তি হলে এতে শিক্ষা ক্যাডারের জন্য হুমকি দেখা দেবে। আমাদের মধ্যে নানা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। প্রচলিত আত্তীকরণ বিধিমালা-২০০০ পরিবর্তনের মাধ্যমে জাতীয়করণ শিক্ষকদের নন-ক্যাডারে রাখার আবেদন জানাচ্ছি।
×