ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সতর্ক করল ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি কমিটি

ভুয়া খবর গণতান্ত্রিক সঙ্কট সৃষ্টি করে

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ২৯ জুলাই ২০১৮

ভুয়া খবর গণতান্ত্রিক সঙ্কট সৃষ্টি করে

ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি কমিটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ক্ষতিকর মতামত ও ব্যক্তিগত তথ্য চুরির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় যুক্তরাজ্য গণতান্ত্রিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে। ডিজিটাল, কালচার, মিডিয়া এ্যান্ড স্পোর্টস (ডিসিএমএস) কমিটি ক্যামব্রিজ এ্যানালটিকার তথ্য ফাঁস কেলেঙ্কারি নিয়ে এক তদন্তে অসত্য তথ্য ও ভুয়া খবর অনুসন্ধান করে এক প্রতিবেদনে এই সাবধানতার কথা জানায়। খবর বিবিসির। ডিসিএমএস তাদের প্রথম প্রতিবেদনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কোম্পানিগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছে। নির্বাচনে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্যও এটি প্রস্তাব দিয়েছে। প্রতিবেদনে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে যে, অত্যধিক পক্ষালম্বনকারী মতামতের লক্ষ্য নিদারুণ হয়ে থাকে। যা জনগণের মধ্যে ভীতি ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়। ফলে ভোটারদের পরিকল্পনা প্রভাবিত হয়। এটি গণতন্ত্রের জন্য একটি হুমকি। রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তবে প্রতিবেদনের একটি কপি শুক্রবার ব্রেক্সিট প্রচারাভিযান গোষ্ঠী ভোট লিভয়ের ডিরেক্টর ডমিনিক কমিংস নিজের ব্লগে প্রকাশ করে দেন। কমিটি জানিয়েছে, ভোট লিভ প্রচারের বিরুদ্ধে অভিযোগের জবাব দেয়ার জন্য কমিংসকে তাদের তদন্তে ডাকা হয়েছিল। তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কমিংস প্রতিবেদনটিকে ভুয়া খবর বলে অভিহিত করেন। কমিটি পরামর্শ দিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অবশ্যই ক্ষতিকর বিষয়বস্তুর জন্য দায়ী। ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো কোম্পানি বরাবরই বলেছে, তারা একজন প্রকাশক থেকে একটি প্রচারের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। তাদের মতে, তাদের পরিষেবা গ্রহণকারী ব্যক্তিদের কাজের জন্য তারা দায়ী নয়। কমিটি জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কোম্পানিগুলো শুধু একটি প্রচারের মাধ্যম হওয়ার দাবির পিছনে অন্য কিছু লুকাতে পারে না। তারা দাবি করে যে, তারা কারিগরি কোম্পানি এবং নিজের কোন সাইটের সামগ্রী নিয়ন্ত্রণে নিজেদের ভূমিকা রাখে না। গাণিতিক পরিভাষা ও মানুষের হস্তক্ষেপের ওপর ভিত্তি করে তারা ক্রমাগত পরিবর্তন ঘটায় এবং তাদের সাইটগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে দেখা হয় না। তারা সবচেয়ে আকর্ষক ব্যক্তিকে পুরস্কার দেয় কেননা তাদের প্রবৃত্তি হলো ব্যবসায় মডেল ও তাদের কৌশল বাড়ানো। তারা এই মডেল ব্যবহার করে ব্যাপকভাবে মুনাফা লাভ করেছে। কমিটি একটি নতুন প্রযুক্তির প্রযুক্তি কোম্পানি তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে। যা প্রচারের মাধ্যম বা প্রকাশক না হয়ে বরং অন্যকিছু হবে। এটি তাদের প্রচারের মাধ্যমে ক্ষতিকর ও অবৈধ কন্টেন্টের বিরুদ্ধে কাজ করা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য স্পষ্ট আইনী দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠা করার পরামর্শ দিয়েছে। প্রযুক্তির যুগে রাজনৈতিক প্রচারাভিযানকে নিয়ামক হতে হবে। নির্বাচনী আইন প্রচারণামূলক কৌশলগুলোতে পরিবর্তন প্রতিফলিত করার জন্য আপডেট করা জরুরী। এতে পরামর্শ দেয়া হয়- রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের জন্য একটি প্রকাশ্য নিবন্ধন তৈরি করতে হবে। যাতে কেউ বার্তা বিতরণ কিভাবে হচ্ছে তা দেখতে পারেন। অনলাইনভিত্তিক রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের একটি ডিজিটাল ছাপ থাকা উচিত। যারা এর জন্য দায়ী থাকবে। এর মধ্যে থাকবে মুদ্রিত লিফলেট ও বিজ্ঞাপনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাজ। বিদ্বেষপূর্ণ কোন ব্যক্তির দ্বারা নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে দায়ী করা উচিত। নির্বাচনে জালিয়াতির জন্য সর্বোচ্চ জরিমানা ২০ হাজার পাউন্ড থেকে বাড়ানো উচিত। যা প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ থেকে কাটা হবে।
×