ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বৃষ্টির গন্ধ ভাললাগে কেন?

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ২৯ জুলাই ২০১৮

বৃষ্টির গন্ধ ভাললাগে কেন?

দীর্ঘ খরা ও শুষ্কতার পর হঠাৎ বৃষ্টি। বৃষ্টির পানির ফোঁটা মাটিতে পড়ার পর সৃষ্ট সোঁদাগন্ধ আমাদের মনে অন্যরকম শিহরণ জাগায়। ওই গন্ধ ভাল লাগে, কিন্তু কেন? বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গবেষণা করেছেন। অবশেষে মিলেছে সেই কাক্সিক্ষত উত্তর। তারা বলছেন, এই ভাললাগার পেছনে আসলে এক ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়াঘটিত বেশকিছু কারণ কাজ করে। তারা বলছেন, ব্যাকটেরিয়া, গাছপালা বা বিদ্যুত চমকানো- সবকিছুই বৃষ্টির সময়কার ভেজা মাটি ও নির্মল বাতাসের মনোরম সৌরভের অনুভূতি তৈরি করার পেছনে ভূমিকা পালন করে। বৃষ্টির পর সৃষ্ট এই সুঘ্রাণকে ইংরেজীতে বলা হয় পেট্রিকোর। ১৯৬০ সালে অস্ট্রেলিয়ার দুইজন গবেষক প্রথম এই নামকরণ করেন। বৃষ্টি যখন প্রথম শুষ্ক মাটি স্পর্শ করে তখন আমরা যে উষ্ণ, সোঁদাগন্ধ পাই তা ব্যাকটেরিয়ার কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে। ব্রিটেনের জন ইনস সেন্টারের আণবিক জীবাণুবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক মার্ক বাটনার বলেন, ‘মাটিতে এই ব্যাকটেরিয়া প্রচুর পরিমাণে আছে। তিনি বলেন, ‘আপনি যে মাটির সোঁদাগন্ধ পান তা আসলে বিশেষ একধরনের ব্যাকটেরিয়ার তৈরি করা অণুর গন্ধ। মার্ক বাটনার বলেন, জিওসমিন নামের ওই অণু স্ট্রেপটোমাইস দিয়ে তৈরি হয়, যা সাধারণত উর্বর মাটির মধ্যে বিদ্যমান থাকে। বৃষ্টির পানির ফোঁটা মাটি স্পর্শ করলে মাটিতে উপস্থিত জিওসমিন বায়ুতে ছড়িয়ে যায় এবং বৃষ্টির পর তা আরও অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। অধ্যাপক বাটনার বলেন, অনেক প্রাণীই এই গন্ধ শুঁকতে পারে। তবে মানুষের নাকে এই গন্ধ সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়। খবরে বলা হয়েছে, এক সময় ভারতে মাটির এই সোঁদাগন্ধ আহরণ করে সুগন্ধি হিসেবে বিক্রি হতো। এই সুগন্ধির নাম দেয়া হয়েছিল মাটি কা আত্তর। বিশেষ করে উত্তর প্রদেশ রাজ্যে এই আতরের রমরমা ব্যবহার ছিল। ১৯৬০ সালে গবেষক ইসাবেল বেয়ার ও আর আর জি. থমাস এই বিষয়টি প্রথমবারের মতো জানতে পারেন।-বিবিসি অবলম্বনে।
×