ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নির্বাচনে পাকিস্তানের আদলে সেনা চান বি চৌধুরী

প্রকাশিত: ০৭:৫৬, ২৮ জুলাই ২০১৮

 নির্বাচনে পাকিস্তানের  আদলে সেনা  চান বি চৌধুরী

বিডিনিউজ ॥ পাকিস্তানের আদলে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীর টহল এবং ভোটকেন্দ্রে তাদের উপস্থিতি চেয়েছেন বিকল্পধারা সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী, যিনি বিএনপির শাসনামলে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রামে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) উদ্যোগে যুক্তফ্রন্টের এক সমাবেশে তিনি বলেন, আমাদের দাবি স্পষ্ট। আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। নির্বাচনের ১০০ দিন আগে সরকার ভেঙ্গে দিতে হবে। মন্ত্রিসভা ভেঙ্গে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সেজন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের এক মাস আগে থেকে সেনাবাহিনীর টহল দিতে হবে। নির্বাচনের সময় তাদের ভোটকেন্দ্রে থাকতে দিতে হবে। সাময়িক বিচারিক ক্ষমতা দিতে হবে। পাকিস্তানেও তাই হয়েছে। সমাবেশে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্নাও উপস্থিত ছিলেন। বদরুদ্দোজা বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকার লুন্ঠিত হচ্ছে, বাঁচার গণতান্ত্রিক অধিকার বিপন্ন হচ্ছে। গুম হচ্ছে, হত্যা হচ্ছে। এ সরকাকে ‘দয়ামায়াহীন নিষ্ঠুর’ সরকার মন্তব্য করে সাবেক বিএনপি নেতা বদরুদ্দোজা বলেন, হাজার হাজার লোককে জেলে আটকে রেখেছে। এক মাঘে শীত যায় না। কোন সরকার চিরস্থায়ী নয়। পরিবর্তন হবেই। যেদিন এই পরিবর্তন আসে সেদিন যে মাঘ মাসটা আসে কম্বল খুঁজে পাবেন না। যারা অত্যাচারিত হয়েছে তারা বসে থাকবে না। জেএসডি, বিকল্পধারা ও নাগরিক ঐক্য মিলে যুক্তফ্রন্ট হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা পরিবর্তন চাই। আমাদের মধ্যে যারা নেতৃত্বে আছেন তাদের কোনো চুরির মামলা নেই। যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত, ব্যাংক লুট, শেয়ার মার্কেট লুটপাটকারীদের বিচার ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নতির প্রতিশ্রতি দেন তিনি। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ৩০০ আসনে নির্বাচন করবে বলে সভায় ঘোষণা দেন জেএসডি নেতা আ স ম রব। তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রত্যেক ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে ছাত্র-যুবক-কৃষক-জনতা লাঠিসোঁটা নিয়ে ভোটের কেন্দ্র পাহারা দিবেন। ভোটের রেজাল্ট না নিয়ে প্রিসাইডিং অফিসার পুলিশ অফিসার কাউকে যেতে দেবে না। সরকার তাদের ঐক্যকে ভয় পেয়েছে মন্তব্য করে চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েও পাননি বলেও অভিযোগ করেন আ স ম রব। তিনি বলেন, আগামীতে সভা হবে লালদীঘি, পোলোগ্রাউন্ডে। আগামীতে জনসভায় বাধা দিলে লড়াই হবে। এই লড়াই গণতন্ত্রের লড়াই। আমাদের জনসভায় বাধা দিতে আসলে পরিণতি কী হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বেঁচে নেই, উনি জানতেন। সরকারের উদ্দেশে সাবেক ছাত্রনেতা রব বলেন, যা ইচ্ছে করবেন, তা হবে না। এজন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অবদান আছে। ১০ বছর জেলে ছিলাম। খাই নাই, ঘুমাই নাই। হাতের রগ পায়ে গুলির দাগ আছে। আমাদের অবদান আছে। সম্মান নাই, শ্রদ্ধা নাই, ভালবাসা-স্বীকৃতি নাই। আমরা কিছু পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করি নাই। তাই বলে দেশের জনগণকে অশ্রদ্ধা করবেন, কথায় কথায় যা খুশি তা বলবেন এই স্পর্ধা আপনাদের কে দিয়েছে? দেশে উন্নয়নের নামে হরিলুট হচ্ছে মন্তব্য করে রব বলেন, লক্ষ-কোটি টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে, আমানতের অভাবে ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের অর্থমন্ত্রী বলছেন ‘এটা কোনো টাকা না। এটা যদি টাকা না হয় তাহলে খালেদা জিয়াকে বেঁধে রাখলেন কেন? লক্ষ-কোটি টাকা যদি টাকা না হয় তিন কোটি টাকা টাকা হয় কী করে? জেএসডি চট্টগ্রাম নগরের সভাপতি গোলাম জিলানী চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাহমুদুর রহমান মান্না, বিকল্পধারার মেজর (অব) মান্নান, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
×