ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনী প্রচারে তিন সিটি

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৮ জুলাই ২০১৮

 নির্বাচনী প্রচারে তিন সিটি

বরিশাল খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ সিটি নির্বাচন প্রচারে শুরুর দিন থেকে শুক্রবার শেষদিন পর্যন্ত ব্যতিক্রমধর্মী প্রচারে বরিশাল নগরীর ৩০টি ওয়ার্ড থেকে জেলা ও বিভাগের সর্বত্র ঝড় তুলেছেন আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সমর্থিত নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। তিনি কাকডাকা ভোরে ফজরের নামাজ আদায়ের পর শরীর চর্চার জন্য নগরীর বিভিন্ন পার্কে আসা নারী-পুরুষদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পর নেমে পরেন গণসংযোগে। বিরামহীনভাবে তিনি (সাদিক) কখনও প্রবল বৃষ্টিতে ভিজে, কখনও হাঁটু সমান পানি ও কাঁদা পেরিয়ে, আবার কখনও রিক্সা কিংবা নৌকাযোগে নগরীর বর্ধিত এলাকার কলোনির প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে শুরু করে সদরের প্রতিটি চায়ের দোকান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, বাসা-বাড়িতে ছুটে গিয়ে সবার খোঁজখবর নিয়ে উন্নয়নের প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট ভিক্ষা করেছেন। নির্বাচনে তিনি (সাদিক) লিখিত কোন ইশতেহার না দিলেও গণসংযোগ এবং উঠান বৈঠকে বলেছেন, মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নগরবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করতে চাই না। ভোটের মাধ্যমে আমাকে মেয়র নির্বাচিত করা হলে নগরবাসীর প্রতিটি মৌলিক চাহিদা পূরণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে বরিশালকে একটি তিলোত্তমা নগরী গড়ে তোলাই হবে আমার ইশতেহার। চতুর্থ পরিষদের বরিশাল সিটি নির্বাচনে এবারই সর্বপ্রথম সাদিক আব্দুল্লাহর ব্যতিক্রম প্রচার দেখে হতবাক হয়েছেন পুরো নগরবাসী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একাধিক নেতারা বলেন, ইতোপূর্বে সরোয়ার যেসব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হয়েছেন সেসবের প্রচারের ধরণ ও এবারের প্রচার স্টাইল এক নয়। বিজয়ী হতে যেসব কৌশল ও কারিশমা আগে দেখিয়েছেন, এবার তার ধারে কাছেও যাচ্ছেন না সরোয়ার। নিজের বিশ্বস্ত কর্মী বাহিনীকেও তেমন একটা কাজে লাগাচ্ছেন না। কর্মীরা আগে তার জন্য জীবনবাজি রেখে মাঠে ঝাঁপিয়ে পরতেন। এবার আর তাদের মাঠে দেখা যায়নি। যাদের দেখা মিলেছে তারা বিএনপির অফিস, নয়তো সরোয়ারের বাসায় আড্ডা দিয়ে সময় কাটিয়েছেন। গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়ার জন্য সদর রোড কেন্দ্রিক মজিবর রহমান সরোয়ারের সঙ্গে যারা গণসংযোগে বের হয়েছেন তাদের সংখ্যাও উল্লেখ করার মতো নয়। শান্ত শহরকে অশান্ত করতে চাচ্ছে বিএনপি ॥ শুক্রবার বিকেলে মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ও বিশিষ্ট শিল্পপতি আরিফিন মোল্লা গণসংযোগকালে জনকণ্ঠকে বলেন, বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও তার দলের কতিপয় কেন্দ্রীয় উস্কানিদাতা নেতা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের কাছে মিথ্যে সব কল্পকাহিনীর অভিযোগ করে সিটি নির্বাচনের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তোলার সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন। এমনকি তাদের দলের কতিপয় সন্ত্রাসীরা নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে যাওয়ার জন্য আমাকেসহ একাধিক কর্মীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি অব্যাহত রেখেছেন। তিনি আরও বলেন, সচেতন নগরবাসী এইবার আর প্রতিবন্ধী মেয়র দেখতে চায় না। তারা (ভোটার) নিজেদের ভাগ্য ও নগরীর উন্নয়ন চায়। বিএনপির সব অপপ্রচারকে উপেক্ষা করে ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে বরিশালবাসী বেছে নেবেন তারা নগরীতে উন্নয়ন চায়। সচেতন বরিশালবাসী বিএনপির বর্তমান মেয়রের সময়কার গত পাঁচ বছরের মতো আর অবহেলিত থাকতে চায় না। মেডিক্যাল এ্যাসেসিয়েশনের গণসংযোগ ॥ নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে নগরীর বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে কর্মরত ভোটারদের সঙ্গে গণসংযোগ করেছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাবেক এমপি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। এ সময় তার সঙ্গে সংগঠনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ নজরুল ইসলামসহ এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন মোল্লা উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনে অভিযোগ থাকবে ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেছেন, ভোটারদের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ, আপনারা ভোটকেন্দ্রে যাবেন, যাকে খুশি তাকে ভোট দেবেন। সব প্রার্থীই চান এবং বলেন বিজয়ী হবেন কিন্তু কে বিজয়ী হবেন সে রায় জনগণই দেবেন। শুক্রবার দুপুরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সভাকক্ষে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের মতবিনিময় সভা শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের তিনি এসব কথা বলেন। সাদিক আব্দুল্লাহ আরও বলেন, নির্বাচনে অবশ্যই অভিযোগ থাকবে, তবে শঙ্কা থাকার মতো কোন ঘটনা বরিশালে এখনও ঘটেনি, বরিশালের পরিবেশ সুষ্ঠু রয়েছে। পুলিশের ওপর সরোয়ারের ক্ষোভ ॥ বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ মার্কার মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার গণমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, সরকার তার পুলিশ বাহিনী দিয়ে যতই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করুক আমরা নির্বাচনের শেষসময় পর্যন্ত মাঠে থাকব। আমরা যেখানেই যাই পুলিশ সেখানে গিয়ে বাধা দিয়ে উঠান বৈঠক ও সভা ভেঙ্গে দিচ্ছে। রাতে নেতাকর্মীদের বাসায় হানা দিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের বাসায় অভিযান অব্যাহত রেখেছে। সরোয়ার আরও বলেন, গণতন্ত্র উদ্ধার ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের মুক্তির জন্য আমাদের এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। সমঝোতার গুঞ্জন ॥ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদ নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির প্রার্থীর গোপন সমঝোতার গুঞ্জন শুক্রবার নগরীতে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। উভয় দলের ঘনিষ্ঠরাই গুঞ্জন ছড়াচ্ছেন, মেয়র পদে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর পুত্র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে ছেড়ে দেবেন বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার। বিনিময়ে প্রতিবারের মতো আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সদর আসন (বরিশাল-৫) সরোয়ারকে ছেড়ে দেবে আওয়ামী লীগ। কিন্তু এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ বা বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা কেউ মুখ খুলছেন না। গুঞ্জনকারীদের মতে, সরোয়ার মেয়র পদে নির্বাচন করতে চাননি। তিনি দলীয় মনোনয়নপত্রও ক্রয় করেননি। তার পরেও দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ইচ্ছায় সরোয়ার প্রার্থী হয়েছেন। ওইসময় সরোয়ার গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া না হওয়া আমার ক্ষমতার মধ্যে নেই। এটা নির্ভর করে দলের ওপর। দলের ইচ্ছায় প্রার্থী হয়েছি। নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল গঠন ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে বরিশালে ‘নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল’ গঠন করা হয়েছে। বরিশালের যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতকে নির্বাচনকালীন ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি জননিরাপত্তা বিভাগের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে একটি আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। ১২ পর্যবেক্ষক নিয়োগ ॥ সিটি কর্পোরশেন নির্বাচনে ১২ কর্মকর্তাকে নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এতে প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পেয়েছেন ফরিদপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান তালুকদার। . রাজশাহী মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ আজ শনিবারেই শেষ প্রচার। আজকের পর বন্ধ হয়ে যাবে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের ভোটের প্রচার। শেষ সময়ে এসে তাই জমে উঠেছে রাজশাহীতে ভোটের প্রচার। শুক্রবার ছুটির দিনে নগরীজুড়ে জমজমাট ভোটের প্রচারে নামেন প্রার্থী ও সমর্থকরা। এদিন রাজশাহী নগরী পরিণত হয় মিছিল ও শোডাউনের নগরীতে। সকাল থেকে ওয়ার্ড থেকে শুরু করে সর্বত্র খ- খ- দল শোডাউন করেছে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। শুক্রবার সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে শেষ মুহূর্তের প্রচারে নামেন প্রার্থীরা। দুপুরের পর নগরীজুড়ে শুরু হয় মাইকিং আর মাইকিং। নানা সুরে এসব মাইক থেকে অনর্গল বের হচ্ছে প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার। শেষ সময়ে এসে নগরীতে মাইকের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। একযোগে মেয়র, কাউন্সিলর ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মাইকিংয়ের ধ্বনি কানে বিঁধছে। নগরীর সর্বত্র এখন ভোটের আওয়াজ। বাদ পড়েনি অলিগলিও। সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মেয়র পদে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ছাড়াও অপর তিন প্রার্থী নেমেছেন ভোটের মাঠে। ক্লান্তিহীন ভোট প্রার্থনা চলছে। সারা শহর ভোটারের কাছে ধর্ণা দেয়া প্রায় শেষ। তারপরও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আবারও ছুটছেন তারা। ভোটের প্রচারের শেষদিন আজ শনিবার সমর্থন জানান দিতে প্রধান দুই দলের প্রার্থীই প্রস্ততি নিয়েছে মিছিলের। নগরীতে আজ স্মরণকালের মিছিল করার প্রস্তুতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রচারের শেষ সময়ে এসেও ভোটের মাঠ শক্ত রেখেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তবে নিজেদের প্রচারে বোমাকা-ের ষড়যন্ত্র ফাঁস আর লাগামহীন গুজব ও অপপ্রচারের কারণে অনেকটায় কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন বিএনপির প্রার্থী বুলবুল। বোমা বিস্ফোরণকা-ে বেকায়দায় বুলবুল ॥ রাজশাহী সিটি নির্বাচনে বিএনপির পথসভায় গত ১৭ জুলাই হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটল। প্রথমে বিএনপি এর দায় চাপাল আওয়ামী লীগের ওপর। কিন্তু বিএনপির দুই নেতার টেলিফোন আলাপের কথোপকথন ফাঁস হওয়ায় প্রকাশ পেল, ভোটারদের সহমর্মিতা পেতে বিএনপির নেতাকর্মীরাই এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারের সময় এমন বিস্ফোরণকা- নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে বিএনপি। এছাড়া ২০১৪ সালের বুলবুলের একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে বুলবুল গুলিবিদ্ধ হয়েছে এমন গুজব ঘটনারো পর তাও ফাঁস হয়ে যাওয়ায় অনেকটায় নড়বড়ে অবস্থায় পড়েছেন বুলবুল। দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মী এবং সমর্থকরাও বিষয়টি নিয়ে নেতাদের ওপর ক্ষুব্ধ। ফলে জয় নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা করছেন না আওয়ামী লীগের নেতারা। তবে এখনও আওয়ামী লীগ নেতারা ভয় পাচ্ছেন অপপ্রচারকে। তারা বলছেন, প্রচারের নামে গুজব আর অপপ্রচারে নেমেছেন বিএনপি নেতারা। বিস্ফোরণকা- ফাঁস হওয়ায় তারা এখন অপপ্রচারকেই নির্বাচনে জয়ের কৌশল হিসেবে নিয়েছেন। এদিকে বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল শেষ সময়ে এসে ইশতেহার ঘোষণা করেন। ইশতেহারে তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদারের ঘোষণা দেন। সমর্থন দেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকে। এসব কারণে বুলবুলের ইশতেহারেও বিমুখ সাধারণ ভোটার। আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, বিএনপি প্রার্থী শুধু সরকার উৎখাতের স্বপ্ন দেখেন। তার ইশতেহার এসব আন্দোলনের হুমকি, তা প্রমাণ করেছে। নির্বাচন নিয়ে তিনি প্রথম থেকেই ষড়যন্ত্র করছেন, তাই নিজেদের পথসভায় নিজেরাই বোমা হামলা চালিয়েছেন। ওয়ার্ড পর্যায়ের কয়েক বিএনপি নেতা বলেন, ওই বিস্ফোরণের পর দলটির অনেক কর্মী ধানের শীষের প্রচারে মাঠে নামতে চাইছেন না। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, বিএনপি একটি সুসংগঠিত দল। দলের সব নেতাকর্মী ধানের শীষের জয়ের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন। তবে অনেকেই গ্রেফতারের আতঙ্কে মাঠে নামতে পারছেন না। রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারছেন না। এদিকে বিএনপির পথসভায় হাতবোমা বিস্ফোরণের বিষয়ে অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর কেন্দ্রীয় নেতারা তেমন রাজশাহী আসছেন না। নগরীর সাগরপাড়া মোড়ে যে পথসভায় বিস্ফোরণ ঘটে সেখানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। ওই ঘটনার পর তিনি রাজশাহী ছেড়েছেন, আর আসেননি। জনগণ নৌকার পক্ষে রায় দেবে, বিশ^াস লিটনের ॥ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আশা করছি জনগণ বিপুলভাবে নৌকার পক্ষে রায় দেবে, রাজশাহীতে ইতিহাস সৃষ্টি হবে। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে নির্বাচনী গণসংযোগের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সন্তান এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, নির্বাচনে সেনা মোতায়নের মতো কোন পরিবেশ হয়নি। তাই সেনা মোতায়নের প্রয়োজন নেই। তারপরও যদি নির্বাচন কমিশন মনে করে, মোতায়ন করতে পারে, সেটি তাদের ব্যাপার। বিএনপির ঢালাও মিথ্যাচারের ব্যাপারে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আনুষ্ঠানিক প্রচারের প্রথম দিন থেকেই বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও বিএনপি নেতাকর্মীরা মিথ্যাচার করে আসছে। আমরা জানতাম যে, নির্বাচনের শেষদিন পর্যন্ত তারা মিথ্যাচার করবে, তাই হচ্ছে। তারা ভোট ডাকাতির কথা বলছে। ভোট ডাকাতির ইতিহাস তো তারাই সৃষ্টি করেছে। মাগুরায় ভোট ডাকাতি হয়েছিল বিএনপির আমলে। আমাদের ভোট ডাকাতির প্রয়োজন নেই। ভোটসন্ত্রাস রুখে দেয়ার ঘোষণা বুলবুলের ॥ শুক্রবার সকালে বিএনপি মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নগরীর ৬ ও ৮ নং ওয়ার্ডের লক্ষীপুরের কাঁচাবাজার, ঝাউতলা, লক্ষীপুর মোড় ও কাজিহাটাসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রচার করেন। এ সময় তিনি ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বুলবুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী জোর করে বিজয়ী হওয়ার জন্য বাইরে থেকে ৫০ হাজার লোক ভাড়া করে নিয়ে এসেছে। রাজশাহীর প্রতিটি আবাসিক হোটেল ও অন্যান্য আবাসস্থল ইতোমধ্যে দখল করে নিয়েছে। অস্ত্র বহন ও যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ॥ আগামী ৩০ জুলাই রাসিক নির্বাচন সুন্দর, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আয়োজন ও নিরাপত্তার জন্য যানবাহন ও বৈধ অস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রাজশাহী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) পারভেজ রায়হান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিষেধাজ্ঞার এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সব ধরনের বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ চলাচল, অস্ত্র বহন বা প্রদর্শন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। এতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক নিরাপত্তা কর্মীরা এ নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে না। যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, আগামী ২৯ জুলাই মধ্যরাত থেকে ৩০ জুলাই মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ ভ্যান, কার, বাস, ট্রাক, টেম্পো, বেবিট্যাক্সি/অটোরিক্সা ও ইজিবাইকসহ স্থানীয়ভাবে পরিচিত অন্যান্য যন্ত্রচালিত যানবাহন : নসিমন, করিমন, ভটভটি, টমটম বন্ধ থাকবে। এছাড়া মোটরসাইকেল বন্ধ থাকবে ২৮ জুলাই মধ্যরাত থেকে ৩১ জুলাই ভোর ছয়টা পর্যন্ত। বুলবুলের ‘হাতিয়ার’ গুজব ॥ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রচারের শেষ মুহূর্তে এসে অনেকটায় নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। আইনী বাধ্যবাধকতা থাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা রাজশাহী ছাড়ার পরপরই একা হয়ে পড়েছেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি বুলবুল। দলীয় কোন্দলের কারণে রাজশাহী বিএনপির হেভিওয়েট নেতারা ভোটের মাঠে অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। বুলবুলের সঙ্গে যারা থাকছেন তারাও ফটোসেশন শেষেই সটকে পড়ছেন তার প্রচার থেকে। নিঃসঙ্গ বুলবুল তাই নির্বাচনে জয়লাভের শেষ চেষ্টা হিসেবে ছড়াচ্ছেন নানা গুজব আর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে করছেন বিষোদগার। জানা যায়, এবারের মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সবাইকে পাশে চেয়েছিলেন বুলবুল। নির্বাচনে জয়লাভে রাজশাহীর মানুষের সহানুভূতি আদায় করতে হাতিয়ার বানাতে চেয়েছিলেন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কারামুক্তিকে। কিন্তু বুলবুল বিপাকে পড়েন রাজশাহী বিএনপির তীব্র দলীয় কোন্দল এবং শরিক দল জামায়াতের সমর্থন হারিয়ে। এজন্য কেন্দ্র থেকে বার বার বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু ও বুলবুলের কোন্দল নিরসন করার চেষ্টা করা হলেও কার্যত তা ব্যর্থ হয়। সূত্র মতে, মিনু-বুলবুলের মতবিরোধ গত বছরের ডিসেম্বর থেকে। ওই বছরে কেন্দ্র থেকে রাজশাহী মহানগর বিএনপির কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে দীর্ঘদিন থাকা মিজানুর রহমান মিনুকে বাদ দিয়ে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে মহানগরের সভাপতি ঘোষণা করা হয়। আর এ কমিটি গঠনের পর থেকেই মূলত দ্বন্দ্ব শুরু হয়। . সিলেট সালাম মশরুর, সিলেট অফিস ॥ ভোটের প্রচার আর উন্নয়নের জয়গান। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিরামহীন প্রচারে নগরবাসীর ঘুম হারাম অবস্থা। মাইকে বাহারি ঢঙের ভোটের গান। চলছে নানান কৌশলে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা। শনিবার রাতেই প্রচার শেষ হয়ে যাচ্ছে। সোমবার ভোটদান হবে। নগর ভবনে কে বসবেন, সেটা এখন সময়ের ব্যাপার। রাজনৈতিক দলীয় অনুসারীদের চিন্তা স্থির হয়ে আছে। মনের মধ্যে প্রতীক ঠিক হয়ে আছে। এটা দলীয় প্রার্থীর রিজার্ভ ভোট। যে অংশটি ভাসমান। তারা শেষ মুহূর্তের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। কোথায় ভোট দেবেন জিজ্ঞেস করলে তার উত্তর দেন, দেখি কী করি। সবাই যাকে দেবে আমিও তাকে দেব। এমন ভোটারের সংখ্যা ৩০ ভাগ। তারা এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবছেন। ভোটের দিন কেন্দ্রে যেতে যেতেও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে। নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে মাঠে সুর ছড়ায় কারো পক্ষে। আর সেই সুরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তার ও তাদের ভোট প্রদান করেন। প্রার্থী নির্বাচনের জয়- পরাজয় অনেকটা এই ভাসমান চিন্তার ভোটারের ওপর নির্ভর করে। তারা জয়ের পাল্লা আঁচ করে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী কামরান ও বিএনপি প্রার্থী আরিফ নির্বাচনী ইশতেহারে নগর উন্নয়নের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তাদের ঘোষিত ইশতেহার নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। ইশতেহারে কামরান নির্বাচিত হলে নগরীতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ফ্লাইওভার নির্মাণ, গ্যাস সংযোগ চালু, আইসিটি পার্ক স্থাপন, বিশেষ অর্থনৈতিক জোন ও আধুনিক শিল্পপার্ক স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন। আরিফুল হক চৌধুরী নিজের ইশতেহারে নির্বাচিত হলে নগরীতে মেট্রোরেল কিংবা টিউব (আন্ডারগ্রাউন্ড রেল) চালুর কথা বলেছেন। একজন সিটি মেয়রের পক্ষে এসব বাস্তবায়ন অসম্ভব বলে মনে করছেন অনেকে। দু’জনই তাদের ইশতেহারে সিলেট নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সুরমা নদী খনন বা ড্রেজিং করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। শুধু মুখে বললে হবে না; কাজে পরিণত করতে হবে। নইলে ভবিষ্যতে এর খেসারত দিতে হবে তাকে ও তার দলকে। সচেতন ভোটাররা এ নিয়েও কথা বলছেন। সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেছেন, সিলেট নগরীতে নৌকার গণজোয়ার দেখে একটি মহল দিশেহারা হয়ে পড়েছে। পরাজয় নিশ্চিত জেনে তারা ইতোমধ্যে অগ্নিসন্ত্রাস ও বোমাবাজি শুরু করেছে। এসব কর্মকা-ের কারণেই নগরবাসী তাদের প্রত্যাখ্যান করে নৌকার পক্ষে রায় দেবেন। আর নৌকা বিজয়ী হলে সন্ত্রাস ও লুটপাট নয়, নগরবাসীর কাক্সিক্ষত উন্নয়ন নিশ্চিত করব। শুক্রবার নগরীর শেখঘাট ও চালিবন্দরসহ বিভিন্নস্থানে গণসংযোগকালে তিনি এ কথা বলেন। বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, সিলেট নগরীর মানুষ আমাকে মনেপ্রাণে ভালবাসেন। আমিও তাদের প্রাণের চেয়ে বেশি ভালবাসি। জনগণের ভালবাসাই আমার জীবনের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা ও শক্তি। আমি রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে সকল মানুষকে ভালবাসতে শিখেছি; সে ধনী হোক আর গরিব হোক। আমার বিবেচনায় সকল মানুষের সমান অধিকার। ধনীর ভোট যেমন একটি, গরিব যে তার ভোটও একটি। অতীতে নগর ভবনে অনেক মানুষ লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হয়েছেন। আমার জীবনের শিক্ষা ও আমার রাজনৈতিক আদর্শ অনুযায়ী আমি সকল শ্রেণীপেশার মানুষকে ভালবাসতে এবং মূল্যায়ন করতে শিখেছি। নগরবাসীর মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। ইনশা আল্লাহ! আমি নগরবাসীর পবিত্র ভোটে নির্বাচিত হব। নগরবাসীর সেবক হিসেবে তাদের সার্বিক কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করতে বদ্ধপরিকর। আমি বিশ্বাস করি, পুণ্যভূমি সিলেটের মানুষ এবারের নির্বাচনে আমার ভালবাসার প্রতিদান ও মূল্যায়ন করবেন। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে সিসিক নির্বাচনে ১৪ দলের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী বদর উদ্দীন আহমদ কামরানের নৌকার সমর্থনে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে সিলেট বিভাগীয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যানের উদ্যোগে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেন। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদের সভাপতিত্বে ও ছাতক উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুলের পরিচালনায় নির্বাচনী জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব সাইফুল আলম শেখড়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পিযূষ নন্দী। আরিফুল হক চৌধুরী ॥ সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ও ২০ দলীয় জোট সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী আরিফুল চৌধুরী বলেন, মানুষের কল্যাণে এবং নগরীর উন্নয়নে কাজ করলে জনগণের কাছে ভোটের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় না। প্রকৃত উন্নয়ন করলে জনগণ ভালবেসেই ভোট দেবে। আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, মানুষের উন্নয়ন তথা নগরীর উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্যই মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলাম। যারা আমার দায়িত্বকালের মূল্যবান তিনটি বছর কেড়ে নিয়েছে ভোট প্রয়োগের মাধ্যমেই জনগণ তার জবাব দেবে। কাজীটুলায় আয়োজিত পথসভায় সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনকে একটি সুন্দর, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ উপহার দেয়ার জন্য আহ্বান জানান। তিনি প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বান জানান। ইসলামী আন্দোলন ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত ও উলামা মাশায়েখ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন খান নিজের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। শুক্রবার বেলা ১১টায় বন্দরবাজার মহাজনপট্টি কাস্টঘর গাজী বুরহান উদ্দিন মার্কেটের ২য় তলায় প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে নির্বাচনী ২৩ দফা ইশতেহার ঘোষণাকালে বলেনÑ আপনারা যদি সুস্থ পরিবেশে বাঁচতে চান, শান্তি-সুখে থাকতে চান, তাহলে এ অশুভ কায়েমি স্বার্থবাদী সিন্ডিকেটকে অবশ্যই ভাঙতে হবে। নোংরা রাজনীতির ভাব-দৌরাত্ম্য থেকে সিলেট সিটিকে রক্ষা করতে হবে। জনজীবনে স্বস্তি ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। সিলেট নগরকে শান্তির নগরীতে পরিণত করতে হবে। জামায়াত প্রার্থী ॥ শুক্রবার সিসিক নির্বাচনে নাগরিক ফোরাম মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের টেবিল ঘড়ি মার্কার সমর্থনে সিলেট নগরীতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত গণসংযোগ পরবর্তী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন পুণ্যভূমি সিলেট হচ্ছে দেশের আধ্যাত্মিক রাজধানী। এখানে রয়েছে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বহু অপেক্ষার পর আসন্ন সিটি নির্বাচনে সিলেটবাসী একজন সৎ, যোগ্য ও আদর্শবান নেতৃত্বকে নির্বাচিত করার সুযোগ পেয়েছে। আগামী ৩০ জুলাই টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ভোট দিয়ে এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে নির্বাচিত করে ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ ও সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত মডেল নগরী গড়ার সুযোগ দিন। নৌকার অফিসে ককটেল হামলা ॥ সিলেট নগরীর ৬ নং ওয়ার্ডে চৌকিদেখী এলাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের নির্বাচনী কার্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১ টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। বিস্ফোরণের পরপরই মেয়রপ্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সঙ্গে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ছিনতাইকারীর কবলে পোলিং এজেন্ট ॥ সিলেট সিটি নির্বাচনের পোলিং এজেন্ট ট্রেনিংয়ে অংশ নিতে নগরীর মদন মোহন কলেজে যাওয়ার পথে সায়রা বেগম নামে এক স্কুল শিক্ষিকা ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। ছিনতাইয়ে সম্পৃক্ততা সন্দেহে রিক্সাচালক ও তার এক আত্মীয়কে আটক করা হয়েছে। ওই শিক্ষিকার স্বামী কাউসার চৌধুরী জানান, সায়রা বেগম নির্বাচনী পোলিং এজেন্ট ট্রেনিংয়ে অংশ নিতে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় বাসা থেকে বের হয়ে নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যাওয়ার পথে দুজন ছিনতাইকারী রিক্সার গতিরোধ করে। ছিনতাইকারীরা একটি স্বর্ণের চেন এবং ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে যায়। নিজস্ব পর্যবেক্ষক নিয়োগ ॥ অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণভাবে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এবং প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের নির্বাচনের পরিস্থিতি নিবিড় ও পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণের জন্য ১১ নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত বুধবার এই নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়।
×