স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকার লালমাটিয়ায় নিজের বাসার সামনে থেকে ‘অপহৃত’ কুমিল্লার আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন সরকারকে ১১ ঘণ্টা পর পূর্বাচলের ৩০০ ফুট এলাকায় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর শুক্রবার রাত সাড়ে বারোটায় বলেন, ৩০০ ফুট রাস্তায় তার সন্ধান পাওয়া গেছে। আমাদের টিম তাকে আনতে সেখানে গেছে। পারভেজ হোসেনের স্বজনরা গেছেন ওখানে।
তবে কারা পারভেজকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল, পূর্বাচলের কোথায় কীভাবে তাকে পাওয়া গেল- এসব প্রশ্নের কোন উত্তর তাৎক্ষণিকভাবে মেলেনি। কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পারভেজ হোসেন ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিতাস উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে লালমাটিয়া সি ব্লকের ৩০ নম্বর বাড়িতে তিনি থাকতেন।
দুপুরে স্থানীয় একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়ে বাসার ফেরার সময় পারভেজকে জোর করে একটি কালো রঙের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কয়েকজন। পরিবারের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্তে নামে।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার সে সময় বলেছিলেন, যারা পারভেজকে তুলে নিয়ে গেছে তাদের কাছে ওয়্যারলেস ও অস্ত্র ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন। তবে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আর পারভেজের মামা সাজ্জাদ হোসেন বলেছিলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-২ (হোমনা-তিতাস) আসনে দলের মনোনয়ন পাওয়ার আশায় কাজ করছিলেন তার ভাগ্নে। তিতাসের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল শিকদারের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল। এ কারণে পারভেজ বছরখানেক ধরে এলাকায় যাওয়া আসা কমিয়ে দিয়েছিলেন।
পারভেজের পরিবার সূত্র জানায়, লালমাটিয়া মসজিদে জুমা’র নামাজ আদায় করে পারভেজ। নামাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন। বাসার কাছে একজনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কুশল বিনিময় করেন। এরপরই সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কালো জীপ থেকে দু’জন নেমে জোরপূর্বক পারভেজকে জীপে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনাটি দ্রুত মোহাম্মদপুর থানাকে জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে তা পর্যালোচনা করছে।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর জানান, বাসার সামনে থেকেই দুইজন মিলে পারভেজকে তুলে নিয়ে যায়। ঢাকা মেট্রো-গ-১৪-২৫৭৭ নম্বরের একটি কালো পাজেরো গাড়িতে করে পারভেজকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের এসি বিপ্লব সরকার জনকণ্ঠকে বলেন, তার হদিস জানার চেষ্টা চলছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার বা অন্যকোন ঝামেলার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে কি না নাকি পুরোটাই সাজানো নাটক তাও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কাউকে ফাঁসিয়ে দিতে এমন অপহরণ নাটক সাজানো হয়েছে কি না তার ওপরও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: