ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সন্তান না হওয়ার অজুহাতে চিকিৎসক স্ত্রীকে পিটিয়ে ঘরছাড়া

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ২৮ জুলাই ২০১৮

 সন্তান না হওয়ার অজুহাতে  চিকিৎসক স্ত্রীকে পিটিয়ে ঘরছাড়া

সংবাদদাতা, সৈয়দপুর, নীলফামারী, ২৭ জুলাই ॥ সৈয়দপুরে চিকিৎসক স্ত্রীর সন্তান না হওয়ার অজুহাতে তার স্বামী মারধরসহ দ্বিতীয় বিয়ে করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নির্যাতিতা গৃহবধূ পাষ- স্বামীর বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে সৈয়দপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। উপজেলার কামারপুকুর দলুয়া দেওয়ানীপাড়া এলাকার এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগে জানা গেছে, ওই এলাকার মৃত রুহুল আমিনের ছেলে সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য উদ্যোক্তা মনোয়ার হোসেন। সে প্রায় ১৪ বছর আগে পার্বতীপুর উপজেলার সোনাপুকুর মাঝাপাড়া এলাকার মৃত ইদ্রিস আলী কবিরের মেয়ে হোমিও চিকিৎসক লিপি আরা মায়াকে ভালবেসে বিয়ে করে। নিজ বাড়িতে হোমিও চিকিৎসা করতেন। এতে উভয়ের আয়ে কয়েক বছর ভালই কাটে তাদের দাম্পত্য জীবন। তবে পরনারী আসক্ত হওয়ায় মনোয়ার নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে লিপির ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। এর কারণে একাধিকবার অকাল গর্ভপাত ঘটে স্ত্রী লিপির। এ নিয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও তার স্বামী কখনই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতেন না। এতে সন্তানহীন অবস্থায় শাশুড়ি ও ননদের নানা গঞ্জনা নিয়ে স্বামীর সংসারে কাটে লিপির জীবন। এ দিকে প্রায়শই বিভিন্ন জনের সঙ্গে সখ্য গড়ে বিভিন্ন স্থানে অবকাশ যাপন করে মনোয়ার। অবশেষে পার্শ্ববর্তী গ্রাম লক্ষণপুর এলাকার এক হিন্দু নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এমনকি হিন্দু ওই নারীকে স্বামী-সন্তান ত্যাগে বাধ্য করে গত ৭ মে নীলফামারীতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করে। পরে ২৫ জুলাই এ ঘটনা জানার পর লিপি প্রতিবাদ করলে তাকে লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে ঘরছাড়া করে। নির্যাতিতা মায়াকে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হোমিও চিকিৎসক মায়া বলেন, মনোয়ারের নির্যাতনের আঘাতে পরপর তিন বার অসময়ে গর্ভপাত ঘটে। এ সুযোগকে মনোয়ার নিজকে নিঃসন্তান দাবি করে প্রায় তালকাসহ দ্বিতীয় বিয়ে করার হুমকি দেয়। এ নিয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লোকমান বলেন, সে আমার ইউপি কেন্দ্রে তথ্য উদ্যোক্তা কাজ করে। তার বিরুদ্ধে একাধিক পরকীয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তার স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগও পেয়েছি। দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজাহান পাশা অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×