ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ২৮ জুলাই ২০১৮

 রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত বছরের জুলাই মাসের তুলনায় চলতি জুলাই মাসে রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম। অথচ এ বছরের জুন মাসেও গত বছরের তুলনায় এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কম ছিল। জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) বলছে, এবারের মৌসুমে ভারি বর্ষণে এডিস মশাবাহিত রোগ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণে সবাইকে সচেতন থাকতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে জানা গেছে, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত জানুয়ারি থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, বারডেম, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০৭ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন একজন। তবে এই মুহূর্তে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫৫ জন। অন্যদিকে এ্যাপোলো, স্কয়ার, ইবনে সিনাসহ বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে ভর্তি হয়েছিলেন ৫৯০ জন ডেঙ্গু রোগী। বর্তমানে ভর্তি আছেন ৪৪ জন এবং চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৪২ জন। রোগীদের মধ্যে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে একজন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একজন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে দুইজন, ইউনাইটেড হাসপাতালে একজন মারা গেছেন। ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে জনসাধারণকে সচেতন থাকতে পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এবছর এখন পর্যন্ত কোনো হাসপাতালে চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তির তথ্য পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, ‘সাধারণত মে থেকে সেপ্টেম্বর মাস বর্ষা মৌসুম চলে। তাই গত জানুয়ারি থেকে চলতি মাস পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক প্রচারণা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। পরিষ্কার পানিতেই ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার বাহক এডিস মশার জন্ম হয়। তাই অত্যন্ত খেয়াল রাখতে হবে যেন কোথাও পানি জমে না থাকে। বালতিতে অতিরিক্ত পানি রাখা যাবে না, ফুলের টব, ডাবের খোসাসহ কোথাও খোলা জায়গায় যেন পানি জমে না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।’ দেশের ৬৪ জেলার সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সম্পর্কে সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য অধিদফতর থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান আয়েশা আখতার। ডেঙ্গু রোধে হাসপাতালগুলোতেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, ’ডেঙ্গু জ্বরের জন্য ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও পপুলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দুইশ চিকিৎসককে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।’ চলতি বছরের শুরুতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা দুই সিটি করপোরেশনের ৯৩ টি ওয়ার্ডের ১০০টি স্থানে জরিপ চালায়। এতে এই ১০০ এলাকার মধ্যে ১৯টি এলাকাকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এদিকে, আইইডিসিআর ঢাকা শহরের সব হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও অন্তঃবিভাগকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের দৈনিক প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছে।
×