ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিরোধী দল হিসেবে জোরালো ভূমিকা পালন করবে পিএমএল-এন

অধিবেশন বর্জন নয়

প্রকাশিত: ০৪:২২, ২৮ জুলাই ২০১৮

অধিবেশন বর্জন নয়

পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজ (পিএমএল-এন) দল সাধারণ নির্বাচনের ইস্যুতে পার্লামেন্টের অধিবেশন বর্জন না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বরং তারা জাতীয় পরিষদে বিরোধী দল হিসেবে জোরালো ভূমিকা পালন করবে। বৃহস্পতিবার মডেল টাউন হলে অনুষ্ঠিত পিএমএল-এন দলের সভাপতি শাহবাজ শরীফের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি (সিইসি) এক বৈঠকে সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়। এদিকে বুধবারের নির্বাচন নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় দন্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছেন যে, নির্বাচনী ফলে কারচুপি করা হয়েছে। খবর ডন অনলাইনের। সিইসির বৈঠক শেষে এক পিএমএল-এন সূত্র জানিয়েছে, সভায় নির্বাচনী কারচুপি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। এতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে জোরালো ভূমিকা পালন করবে তাদের দল। পাশাপাশি পাঞ্জাব সরকার গঠনের চেষ্টাও করা হয়। দল অন্য সব দলকে পক্ষে নিয়ে একযোগে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে পাকিস্তান পিপলস পার্টিকে (পিপিপি) সঙ্গে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলকে বাদ দিয়ে যৌথ কৌশল প্রণয়ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিইসি নির্বাচনে কারচুপির বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়ে তাদের প্রস্তুতি শেষ করেছে। তারা এ সিদ্ধান্তও নিয়ে রেখেছে যে, দেশবাসীর সামনে কারচুপির বিষয়ে সব ধরনের বিকল্প কাজে লাগানো হবে। পিএমএল-এন দলের মুখপাত্র ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেন, যেকোন সিদ্ধান্ত নেয়া হোক বা না হোক অন্য দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করার পর পার্লামেন্ট বর্জনে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এজন্য পিএমএল-এনের উদ্যোগে শুক্রবার ইসলামাবাদে মাল্টি-পার্টি কনফারেন্স (এমপিসি) বা বহুদলীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি নিজেদের দলকে পিটিআই থেকে আলাদা হিসেবে অভিহিত করে জানান, পিএমএল-এন এমন কোন দল নয় যারা দেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কোন রাজনীতি করে। তিনি বলেন, আমরা কারচুপির ইস্যুটি নিয়ে যুক্ত রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টা করছি। দেশের জাতীয় সমস্যা নিয়ে যৌথ কৌশল প্রণয়নের জন্য সব রাজনৈতিক দল শুক্রবার ইসলামাবাদে একত্রিত হয়েছে। আমরা এমপিসির পরে তৃণমূল পর্যায়ে প্রমাণ উপস্থাপন করব এবং একটি শ্বেতপত্র পেশ করব। যুক্ত রাজনৈতিক ফ্রন্টের প্রস্তাবগুলো পরে ভবিষ্যতে এমপিসির কর্মপরিকল্পনাকে চূড়ান্ত করবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানান হয়েছে যে, কেন পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের ফলের ট্রান্সমিশন সিস্টেম ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল। নির্বাচনে আগে ও নির্বাচনের দিন কেন কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কেন পোলিং এজেন্টদের বহিষ্কার করা হয়েছে এবং কেন তাদের ফরম ৪৫ দেয়া হয়নি। ভোট দেয়ার প্রক্রিয়টি ইচ্ছাকৃতভাবে মন্থর করা হয়েছিল যাতে ভোটারদের ভোট দেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা যায়। পিএমএল-এনের বিজয় চুরি করা হয়েছে। কিভাবে তা করা হয়েছে তা আমরা প্রকাশ করব। নির্বাচনী কারচুপির জন্য দল রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মরিয়ম বলেন, দেশ এই মুহূর্তে আন্দোলন সামলাতে পারবে না। আর পিএমএল-এন পিটিআই নয়। নির্বাচনে কারচুপির ঘটনা নিয়ে সিইসি বৈঠকে বেশ কয়েকঘণ্টা আলোচনা হয়েছে ও প্রমাণ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ জানান, নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় তিনি যা দেখেছিলেন আর ফল ঘোষণার সময় যা করা হলো তা ঠিক নয়। নির্বাচনী ফলের বিষয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর গুরুতর আপত্তি রয়েছে। কেননা নিয়মতান্ত্রিকভাবে একের পর এক হত্যাকা- চালানো হয়েছে এবং হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। পাঞ্জাবের ফল নিয়ে তিনি খুব খুশি ছিলেন কারণ প্রদেশটি পিএমএল-এন দলের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে আবারও প্রমাণিত হয়েছে।
×