ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়ক সংস্কারে ধীরগতি

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ২৭ জুলাই ২০১৮

চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়ক  সংস্কারে ধীরগতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর, ২৬ জুলাই ॥ চাঁদপুর-কুমিল্লা-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক সড়ক থেকে জাতীয় সড়কে উন্নীত করতে রাস্তার দু পাশ প্রশস্ত কাজে চরম ধীরগতি চলছে। যার ফলে প্রায় গত এক বছর ধরে সড়কে যানবাহন চলাচলে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুর্ভোগের আরও মাত্রা যোগ হয়েছে চলতি বর্ষা মৌসুমের কারণে। গত এক সপ্তাহের বৃষ্টির কারণে সড়কের পাশে পানি জমে আছে। বিষয়টি মোটেও আমলে নিতে চাইছেন না চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। ঈদ-উল-আজহার পূর্বে সড়কের মধ্যে বাজার ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো সংস্কার না করলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে এসব অঞ্চলের মানুষের। জানা যায়, চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়কের ৫৮ কিলোমিটার জুড়ে উভয়পাশের ৩ ফুট প্রশস্তকরণসহ মাটি ভরাট ও কয়েকটি সেতু কালভার্টসহ উক্ত কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১শ’ ২৫ কোটি টাকা। সড়কটি বর্তমান ১৮ থেকে ২৪ ফুট প্রস্থে উন্নীত করার কাজ চলছে। আর তা বাস্তবায়ন হলে যানবাহন চলাচল সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ দিকে ২০১৭ সালের শেষ দিকে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের কাজ শুরু হলেও পথে পথে নানামুখী বাধার মধ্য দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বলে দাবি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্সের। বিশেষ করে সড়কের দু পাশে বড় বড় গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটিসহ নানা জটিলতাকে উপেক্ষা করে তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের। তারপরেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন বলছেন আগামী ২০১৯ সালের জুন মাসের মধ্যে তাদের কাজ সম্পন্ন হবে। তবে বছরের পর বছর গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে ঠিকাদাররা কাজ করতে গিয়ে প্রতিদিন যানবাহনের অপেক্ষমাণ চিত্র লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে উক্ত সড়কের চাঁদপুর ওয়্যারলেস মোড় থেকে বাবুরহাট, হাজীগঞ্জ শহর থেকে বাকিলা বাজার পর্যন্ত দুই পাশের শত শত যানবাহন সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে দেখা যায়। চাঁদপুর শহরের ওয়াপদা গেট এলাকায় সিএনজি ফিলিং স্টেশন এলাকায় সড়কটি সংস্কার না করায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে যানবাহন। ৫ মিনিটে অতিক্রম করা সড়ক ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। অপরদিকে চাঁদপুর-রায়পুর সড়কের একই অবস্থা। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের ওয়্যারলেস এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সড়কে পানি জমে আছে। সামান্য বৃষ্টি হলেও জলবাদ্ধতা মারাত্মক আকার ধারণ করে। জমে থাকা ময়লা পানি যাত্রীদের গায়ে এসে পড়ছে। এ কারণে ওয়্যারলেস পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে চলাচলে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে চালকদের। এতে দুর্ভোগ বাড়ছে যাত্রীদের। কোথায়ও কোথাও সড়কের পাশে বৃদ্ধি করা স্থান ভেঙ্গে পড়ছে পাশে। আবার কোন কোন স্থানে পুরো রাস্তা নতুন করে করতে গিয়ে পানি জমে কর্দমাক্ত হচ্ছে। আর এসব বিষয় আমলে নিচ্ছেন না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কিংবা সড়ক বিভাগ কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে অতিবৃষ্টি ও বর্ষার পানির চাপে তাদের কাজের গতিতে ব্যাঘাত ঘটছে। শহরের বাবুরহাট এলাকার বাসিন্দা মোঃ কামাল হোসেন ও আরফি হোসেন জানান, কাজের ধীর গতির পাশাপাশি এসব কাজে সড়ক জনপথ বিভাগের লোকদের তদারকি কম দেখা যায়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন তাদের ইচ্ছেমতো কাজ করছে। রাস্তার দুই পাশে সংস্কার কাজের জন্য কাটার কারণে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনায় পড়ছে পথচারী ও যানবাহন। দ্রুত সড়কটি সংস্কার করার দাবি জানাচ্ছি। চাঁদপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্ত এ বিষয়ে বলেন, চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়কের ৫৮ কিলো জুড়ে দুই পাশের ৩ ফুট করে রাস্তা বৃদ্ধিসহ ছোট বড় সেতু কালভার্টের কাজ আগামী ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে। আর সড়ক উন্নয়নমূলক কাজ করতে গিয়ে সড়কের যানবাহনসহ যাত্রীসাধারণের সাময়িক ব্যাঘাত ঘটতে পারে। কিন্তু আমাদের এখন আর কী করণীয় আছে। এখন বর্ষা মৌসুম। তারপরেও যেখানে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, তা সমাধানের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।
×