ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সময়সহ মোট পাঁচ বিষয় নিয়ে চার ক্লাবের আপত্তি, ১৩ ক্লাব তাদের পছন্দের ৮ হোম ভেন্যুর তালিকা দিয়েছে, বাফুফের হাতে বিকল্প-বাড়তি ভেন্যু একটি

ফুটবলারদের দলবদলের শুরুতেই নানা বিপত্তি

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২৭ জুলাই ২০১৮

   ফুটবলারদের দলবদলের শুরুতেই নানা বিপত্তি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঘরোয়া ফুটবলের নতুন মৌসুম উপলক্ষে দলবদল কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। ১৩ দলের অংশগ্রহণে আগামী ২৩ নবেম্বর থেকে আরম্ভ হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল (বিপিএল)। তবে তার আগে নিয়ম অনুযায়ী ২০ অক্টোবর ফেডারেশন কাপ দিয়ে শুরু হবে মৌসুমসূচক টুর্নামেন্ট। কিন্তু বাফুফের নির্ধারিত সময়ে দলবদল কার্যক্রমে অংশ নিতে আপত্তি জানিয়েছে প্রিমিয়ার লীগের চার ক্লাব মোহামেডান, শেখ জামাল, চট্টগ্রাম আবাহনী এবং সাইফ স্পোর্টিং। আগস্টে দলবদল শেষ না করে সেটা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে তারা। এ নিয়ে একটি চিঠিও তারা পাঠিয়েছে বাফুফে বরাবর। তবে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাফুফে জানিয়েছে তারা এ সংক্রান্ত কোন চিঠি পায়নি। চার ক্লাব শুধু দলবদলের সময় পেছানোর দাবিই করেনি, আরও কিছু দাবিও তুলেছে। যেমন আসন্ন লীগ কটি ভেন্যুতে হবে, ভেন্যুগুলোর মানোন্নয়ন, পাতানো খেলা বন্ধ, রেফারিদের মানোন্নয়ন, এশিয়ান কোটায় বিদেশী একজনই খেলতে পারবে, লীগের সূচীর ব্যাপারেও স্পষ্ট ব্যাখ্যা ... ইত্যাদি। এই চার ক্লাবের দাবিÑ ৩০ আগস্ট দলবদলের শেষদিন না রেখে সেটা বাড়িয়ে অক্টোবর-নবেম্বরে নিয়ে যাওয়া হোক। কারণ ডিসেম্বরে রয়েছে জাতীয় নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনই মূলত এখানে প্রধান ইস্যু। কারণ ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে লীগের খেলা হবে কি না, এ নিয়ে সংশয় আছে। আর এমনটা হলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্লাবগুলো। এবার বিদেশী খেলোয়াড় নিবন্ধনে নতুন নিয়ম করেছে বাফুফে। দু’জন এশিয়ান কোটা এবং দু’জন এশিয়ার বাইরের খেলোয়াড় নিবন্ধন করাতে পারবে ক্লাবগুলো। তবে মাঠে খেলবে তিনজন। এশিয়ান কোটার খেলোয়াড়ের পরিবর্তে এশিয়ার খেলোয়াড় এবং এশিয়ার বাইরের বিদেশীর পরিবর্তে এশিয়ার বাইরের খেলোয়াড়ই মাঠে নামাতে হবে। কিন্তু বাফুফের এই নিয়ম নাকি এএফসির নিয়ম বিরোধী। এমনটাই জানিয়েছে চার ক্লাব। এছাড়া এএফসির নির্দেশনা অনুযায়ী ভেন্যু নির্ধারণসহ বিদেশী কোটায় সংস্কার ও লীগের ফরমেট ক্লাবগুলোর কাছে খোলাসা করার আহ্বান জানিয়েছে ক্লাবগুলো। এদিকে ফেডারেশনের বিপক্ষে নির্দিষ্ট একটি ক্লাবকে সুবিধা দেয়ার অভিযোগ তুুলে ম্যাচ পাতানোর বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি জানিয়েছে ক্লাবগুলো। বছরের পর বছর মাত্র এক ভেন্যুতেই লীগের সব খেলা আয়োজন করে সম্ভবত ‘বিশ্বরেকর্ড’ গড়ে ফেলেছিল বাফুফে। ভাগ্যিস, এই অসঙ্গতি চোখে পড়েনি এএফসির। নইলে অনেক আগেই বাফুফেকে নিষিদ্ধ করা হতো। তবে এবার আর ফাঁকি দিয়ে পার পাচ্ছে না বাফুফে। ভেন্যুসংখ্যা বাড়াতেই হচ্ছে তাদের। এবারের প্রিমিয়ার লীগের (একাদশতম) আসর হবে কমপক্ষে ৫ ভেন্যু নিয়ে। সর্বোচ্চ ভেন্যু হতে পারে আটটি। এর আগে ক্লাবগুলোকে তাদের হোম ভেন্যু বাছাই করে বাফুফেকে জানাতে বলা হয়েছিল। লীগের ১৩ ক্লাব ইতোমধ্যেই তাদের পছন্দের হোম ভেন্যুর তালিকা জমা দিয়েছে। বাফুফে জানিয়েছেÑ তারা ইতোমধ্যেই সর্বোচ্চ ৯টি ভেন্যু তৈরি করে রেখেছে। আর ক্লাবগুলোর হোম ভেন্যুর তালিকায় আছে ৮টি। এবার দেখা যাক, কোন ক্লাব কি ভেন্যু চেয়েছে। মোহামেডান, আবাহনী এবং শেখ জামাল চেয়েছে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এবং শেখ রাসেল চেয়েছে গোপালগঞ্জের শেখ মনি ফজলুল হক স্টেডিয়াম। ব্রাদার্স ইউনিয়ন এবং রহমতগঞ্জ চেয়েছে ঢাকার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম। চট্টগ্রাম আবাহনী চায় চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়াম। নবাগত বসুন্ধরা কিংস হোম ভেন্যু হিসেবে চেয়েছে নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়ামকে। আরেক নবাগত ক্লাব নোফেল স্পোর্টিং চেয়েছে নোয়াখালীর শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামকে। সাইফ স্পোর্টিং এবং আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ চায় ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভুঁইয়া স্টেডিয়াম। টিম বিজেএমসির পছন্দ রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়াম। এই ৮ ভেন্যুর বাইরে বিকল্প ভেন্যু হিসেবে সিলেট জেলা স্টেডিয়াম আছে বাফুফের বিবেচনায়। শেষ পর্যন্ত ক্লাবগুলোর কে কোন ভেন্যুর কোন স্টেডিয়াম পাবে, সেটা চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করবে বাফুফের প্রফেশনাল লীগ কমিটি। এ ব্যাপারে তাদের সভার সম্ভাব্য তারিখ আগামী ৩০ জুলাই।
×