ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গুজব ও হুজুগে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৭ জুলাই ২০১৮

  গুজব ও হুজুগে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারের ইতিহাসে গুজব নতুন কিছু নয়। কিন্তু এবারের গুজব ও হুজুগ সবমাত্রাকেই ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু এবারের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। যাই ক্ষতির শিকার হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারী। আগামী অর্থবছরের জন্য ঘোষণা করতে যাওয়া মুদ্রানীতি ও বাংলাদেশ কমার্র্স ব্যাংক সিকিউরিটিজের হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড অপারেশনের পদত্যাগের গুজবকে কেন্দ্র করে বাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দেয়। বিশেষ করে গত কিছুদিন ধরে আলোচনায় থাকা শেয়ারগুলো এক পর্যায়ে ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাজারে এক শ্রেণীর চতুর বিনিয়োগকারী আগেও গুজব ছড়িয়ে শেয়ার হাতিয়ে নিয়েছে অভিযোগ রয়েছে। আতঙ্কে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করলেও তারা অল্প দামে শেয়ার কিনে থাকেন। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, গত কিছুদিন ধরেই লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছিল কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ। বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের তালিকায়ও ছিল ব্রোকারেজ হাউসটি। এই হাউসের বিনিয়োগকারীরাও অন্যদের তুলনায় বেশ ভাল মুনাফা করেছে বলে তারা জানান। কিন্তু সম্প্রতি বেশ কিছু কোম্পানির অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির নেপথ্যে হাউসটির সম্পৃক্তরা অভিযোগ করেছেন। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) হাউসটির লেনদেন খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। এই তদন্ত এখনও চলছে। তবে সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ডিএসইর তালিকাভুক্ত আরও কিছু প্রভাবশালী হাউস বিশেষ করে শীর্ষস্থানীয় একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংকের ক্ষোভের শিকার হয় হাউসটি। এছাড়া এক শ্রেণীর চতুর বিনিয়োগকারীও হাউসটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে আসছেন বিভিন্ন মহলে। মঙ্গল ও বুধবার ডিএসইর বিভিন্ন হাউসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিনিয়োগকারীদের মুখে মুখে ছিল কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজের হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড অপারেশন সাইফুল ইসলাম স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সঙ্গে মতবিরোধের জেনে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। মূলত বাজারে এই নেতিবাচক প্রচার চালানোর কারণেই বেশ কিছু কোম্পানির ক্রেতা সঙ্কট দেখা দেয়। যদিও কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ কর্তৃপক্ষ তার পদত্যাগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। শুধু তাই নয় সাইফুল ইসলাম নিজেও পদত্যাগের বিষয়টি উড়িয়ে দেন। তিনি জানান, অন্যদিনের মতো বুধবারও তিনি নিয়মিত বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার কেনাবেচা করেছেন। নিজেদের মধ্যে কোন ভুল বোঝাবুঝি নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষ স্থানীয় একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, গত কিছুদিন ধরে টানা পতন থাকলেও কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীরা অন্যদের তুলনায় ভাল করেছেন। এতে বাজারের অন্যপক্ষ খুব ভাল চোখে দেখেনি। এছাড়া যখন সরকার বাজারকে একটি স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন, সেখানে এক শ্রেণীর বড় বিনিয়োগকারী বাজারকে অস্থিতিশীল করতে কখনও মুদ্রানীতির নামে আবার কখনও কোন ব্রোকারেজ হাউস সম্পর্কে নেতিবাচক গুজব ছড়িয়ে ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছেন।
×