ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিটি ঘরে কারখানা গড়ে তুললেই অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব ॥ স্বদেশ রায়

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৭ জুলাই ২০১৮

 প্রতিটি ঘরে কারখানা গড়ে তুললেই অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব ॥ স্বদেশ রায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একটি বাড়ি একটি খামার নয় বরং দেশের প্রতিটি ঘরে একটি বাড়ি একটি কারখানা গড়ে তুললে তবেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট স্বদেশ রায়। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় ঢাকার কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মাসিক সভার উদ্বোধনী লেকচার সেশনে প্রধান অতিথি ও একক বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এ কে এম এ হামিদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইডিইবির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামসুর রহমান। স্বদেশ রায় আরও বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে গত দশ বছরে দেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। যার মধ্যে বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধি অন্যতম। আজ ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে গেছে। বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত শহর-গ্রাম। তবে আমরা শুধু বিদ্যুতের অপচয় করছি। এর কার্যকর ব্যবহার হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে ক্রমাগত বিদ্যুত কমে আসবে। যেমন একসময় এদেশে গ্যাস উৎপাদন হলেও আমরা তা অপচয় করে নষ্ট করে ফেলেছি। একটি বাড়ি একটি কারখানার মাধ্যমে দেশের প্রত্যেক পরিবার ছোট ছোট পণ্য উৎপাদন করবে। চীন যেমনভাবে ক্রমাগত অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বের দৃষ্টি কাড়ছে। আগামী দশ বছরে চীনসহ প্রতিবেশী দেশ ভারত কারখানা শিল্পের প্রসার ঘটিয়ে অর্থনৈতিকভাবে সুপারপাওয়ার অর্জন করবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি ঘটাতে ছোট ছোট কারখানা গড়ে তোলার মাধ্যমে পণ্য উৎপাদন করতে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক সম্ভাবনাশীল রাষ্ট্র। এসময় তিনি আরও বলেন, ‘গত দশ বছরে দেশের অনেক উন্নয়ন ঘটলেও আমি তাতে তৃপ্ত নই। কারণ দেশের অগ্রগতি ধীর গতিতে চলছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের অগ্রগতি ধীর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক আগে দেশে অনেকগুলো ইপিজেড তৈরির ঘোষণা দিলেও তার একটিও এখনও কার্যক্রম শুরু করেনি। এমন অনেক প্রকল্প রয়েছে যেগুলো ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আর এই ধীরগতির পেছনে মূলত দুইটি কারণ রয়েছে। প্রথমত দেশের উন্নয়নে তরুণদের অন্তর্ভুক্তি কম এবং সরকারের বিভিন্ন দফতরে দক্ষ জনবলের অভাব। দেশের উন্নয়নকে গতিশীল করতে এজন্য সরকারী কাঠামোর পরিবর্তন প্রয়োজন। এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য দেশের স্বাধীনতা এসেছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৪ সালে এদেশের জিডিপি ৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল। কিন্তু ৭৭ সালে এসে তা কমে দাঁড়ায় সাড়ে ৩ শতাংশে। যে কারণে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল সে লক্ষ্য থেকে দেশ সরে গিয়েছিল। আমাদের মূল লক্ষ্য দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটানো আর তা মেনেই এগোতে হবে। প্রকৌশলীরা একটি দেশকে সঠিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এর উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে পারে বলে মন্তব্য করে স্বদেশ রায় বলেন, ‘আইডিইবি’র সঙ্গে যুক্ত দেশের ৫ লাখ প্রকৌশলী দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে। তাদের সঠিক পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে সুপারিশ আকারে সরকারের দৃষ্টিতে আনা সম্ভব। এ সময় তিনি প্রকৌশলীদের সামনে কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের নৌপথ অনেক ভাল। কিন্তু তা কার্যকরী নয়। কিভাবে এর কার্যক্রম বাড়ানো সম্ভব তা আপনাদেরই খুঁজে বের করতে হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক ও মানসিক পরিবর্তনও প্রয়োজন। বর্তমানে দেশের শিশুরা ঘরে বন্দী থাকে। তাদের নেই খেলার মাঠ। বিনোদনের অভাব ঘরে ঘরে। কিভাবে এসব ভবিষ্যত প্রজন্মদের মানসিক বিকাশ ঘটবে? দেশের প্রকৌশলীরা তাদের সঠিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এই অপরিকল্পিত রাজধানীকে নতুন করে সাজাতে পারে।
×