ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নির্বাচনী প্রচারে তিন সিটি

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২৭ জুলাই ২০১৮

নির্বাচনী প্রচারে তিন সিটি

বরিশাল খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ আর মাত্র দুইদিন পরেই অনুষ্ঠিত হবে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। আজ শেষ হচ্ছে প্রচার। তাই প্রচারে মহাব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। বরিশাল সিটিতে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি ছাড়াও মেয়র পদে প্রার্থী দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাসদ ও সিপিবি। কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে জাপা চেয়ারম্যান। এছাড়া নৌকার বিজয়ের লক্ষ্যে জাপার বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) মেয়র প্রার্থীও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। সূত্র মতে, নির্বাচনে বিএনপি চাচ্ছে অভিজ্ঞ (প্রবীণ) প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারকে দিয়ে বরিশাল নগরীতে দলের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ চাচ্ছে তরুণ (নবীন) প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর মাধ্যমে নিজেদের হারানো নগর পিতার চেয়ার পুনরুদ্ধার করতে। বরিশালে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা ও ধানের শীষ মার্কায়। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অর্থাৎ চরমোনাই পীরের হাতপাখা মার্কার মেয়র প্রার্থী ওবায়দুর রহমান মাহবুব ভোট কাটবে ধানের শীষের। সব মিলিয়ে ৩০ জুলাইর নির্বাচনে বরিশালে নবীন-প্রবীণের লড়াই হবে। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর পারিবারিক পরিচয়ের সঙ্গে সঙ্গে অতীতে আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র শওকত হোসেন হিরনের সময়কার বরিশাল নগরীতে ব্যাপক উন্নয়নের বিষয়টি ভোটারদের মুখে মুখে উঠে এসেছে। ভোটাররা মনে করছেন, আগামীর উন্নত বরিশাল গড়তে তরুণ নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ারের এ নির্বাচন এখন অস্তিত্বের লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বরিশালে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে সর্বত্র গণজোয়ার উঠলেও নৌকার বিজয় ঠেকাতে কৌশলী অভিজ্ঞ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিরবে আওয়ামী লীগ নামধারী (সদ্য যোগদান করা) বৃহৎ একটি গ্রুপকে ম্যানেজ করেছে। যারা ভোটের দিন বুকে নৌকার ব্যাজ লাগিয়ে ধানের শীষে ভোট দেয়ার কৌশল এটেছে। এমন কথা নগরীর সর্বত্র চাউর হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত জনকণ্ঠকে বলেন, সাধারণ ভোটারদের আশঙ্কাকে উড়িয়ে না দিয়ে বরং কাজে লাগিয়ে আমরা প্রস্তুত হয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা চিহ্নিত করেছি কারা এটা করতে পারে। সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছি। ফলে এবার আর ওইসব সুবিধাবাদীরা কোন সুযোগ পাবে না। তিনি আরও বলেন, বিএনপির সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে এখন বরিশালবাসীকে বেছে নিতে হবে তারা কি নগরীর উন্নয়ন চান, নাকি বিএনপির বর্তমান মেয়রের সময়কার গত পাঁচ বছরের মতো অবহেলিত থাকতে চান। উন্নয়ন চাইলে নির্বিঘেœ ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের প্রতীক নৌকার মার্কাকে বিজয়ী করার জন্য তিনি (রইচ সেরনিয়াবাত) সর্বস্তরের ভোটারদের প্রতি আহ্বান করেন। নৌকার প্রার্থীকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থন ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে সমর্থন দিয়ে নৌকার শতভাগ বিজয় নিশ্চিতে নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন হরিণ প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বশীর আহমেদ ঝুনু। বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দার নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন। সরোয়ারের ২৮ দফা, সাদিকের প্রতিশ্রুতি নাগরিক চাহিদা ॥ স্থানীয় বা জাতীয় পর্যায়ের যে কোন নির্বাচনেই প্রার্থীরা নিজেদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ইশতেহার দিয়ে থাকেন। নির্বাচিত হলে ভোটারদের জন্য কী কী করবেন সেই প্রতিশ্রুতি থাকে তাদের ওই ইশতেহারে। বরিশাল সিটি নির্বাচনে উন্নয়নের ২৮ দফা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার। অন্যদিকে তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ কোন প্রতিশ্রুতি দেননি। তিনি ভোটারদের এবং গণমাধ্যমকে বলছেন, নগরবাসী যে উন্নয়ন চায় সেটাই আমার প্রতিশ্রুতি। নগর উন্নয়নে যা যা প্রয়োজন তা-ই করব। কেন্দ্রীয় নেতাদের গণসংযোগে উৎসবের নগরী ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রচার শুরু থেকে শেষ সময় পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতাদের গণসংযোগে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে গোটা বরিশাল নগরী। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর নৌকা মার্কাকে শতভাগ বিজয়ী করতে গত কয়েকদিনের ন্যায় বৃহস্পতিবার বৃষ্টি উপেক্ষা করে ব্যাপক গণসংযোগ করছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দরা ভোটারদের কাছে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারের নানান উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন। অপরদিকে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবাহান, নাজিম উদ্দিন আলম, হাসান মামুন, হায়দার আলী খান লেলিন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেত্রী আফরোজা খানম নাসরিন। বিএনপি প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন ॥ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাস বলেছেন, বরিশালের সুষ্ঠু-সুন্দর, স্বাভাবিক-পরিচ্ছন্ন পরিবেশটা কেমনভাবে যেন উধাও হয়ে গেছে। আশ্চর্য লাগছে কয়েকদিনের ব্যবধানে একটা শহরের নির্বাচনের পরিবেশ কিভাবে নষ্ট হয়। মনে হচ্ছে বরিশাল শহরে কোন একটা আশুরিক শক্তির আবির্ভাব হয়েছে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ জাপা প্রার্থী ॥ সিটি নির্বাচনে বুধবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কিন্তু তার ঘোষণার পরেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল মার্কার মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের টিয়াখালিতে গণসংযোগকালে ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, আওয়ামী লীগের সমর্থনের বিষয়টি আমি গণমাধ্যমে দেখেছি, আমার সঙ্গে এ বিষয়ে কারও সঙ্গে কোন যোগাযোগ হয়নি। . রাজশাহী মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের প্রচারের আর মাত্র একদিন বাকি। আগামীকাল শনিবারের পর বন্ধ হয়ে যাবে সব ধরনের প্রচার। তাই একেবারে প্রায় শেষ মুহূর্তের প্রচারে বৃহস্পতিবার উত্তাল হয়ে উঠে রাজশাহীর ভোটের মাঠ। মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রচারের পাশাপাশি উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে সর্বত্র। নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ছে ভোটের মাঠে। নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেয়া নিয়মানুযায়ী আগামীকাল শনিবার দিনভর প্রচারে মাঠে থাকতে পারবেন প্রার্থীরা। এরপর থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে সব ধরনের প্রচার। শেষ মুহূর্তে তাই ভোট উৎসবের পাশাপাশি উত্তেজনাও বিরাজ করছে সর্বত্র। এ অবস্থায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি ভোটগ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা আগে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি তুলেছেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলছেন, রাজশাহীতে ভোটের মাঠ স্বাভাবিক আছে। মানুষ উৎসবমুখর। এখানে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কোন প্রয়োজন নেই। সর্বশেষ বৃহস্পতিবারও লিটন বলেন, রাজশাহীবাসী শান্তিপ্রিয়। এখানে সুষ্ঠু পরিবেশেই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবেন। এখানে সেনা মোতায়েনের দাবি অযৌক্তিক। সাধারণ ভোটাররাও বলছেন রাজশাহীতে সেনা মোতায়েনের মতো কোন পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। বুলবুলের দাবি সেনা মোতায়েন ॥ এদিকে নির্বাচন কমিশনের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে ভোটগ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা আগে এবার রাজশাহীতে সেনা মোতায়েনের দাবি করেছেন বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। সেনাবাহিনী ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও দাবি করেন তিনি। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নগরীর মালোপাড়ার বিএনপি অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান বুলবুল। সম্মেলন থেকে নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ওপর পক্ষপাতিত্বেরও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে এখন থেকেই রাজশাহী সিটিতে সেনা মোতায়েন করতে হবে। সম্মেলনে বুলবুল বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আ’লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ২৯টি নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ ইসিতে দায়ের করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সেনা মোতায়েনের কোন বিকল্প নেই। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের জেএমবি ও জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে এমনকি রাষ্ট্রদ্রোহী মামলাতেও জড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে গ্রেফতার নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানান হয়। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের বিমাতাসুলভ আচরণের শিকার বিএনপি উল্লেখ করে বুলবুল আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের আদেশ লঙ্ঘন করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও তার নেতাকর্মীদের যোগসাজশে পুলিশ প্রশাসন গণগ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে। এই অভিযানে এ পর্যন্ত বিএনপির প্রায় ১৫০ নেতাকর্মী ও পোলিং এজেন্টকে অন্যায় ও অমানবিকভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নর উত্তরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজশাহী সিটি নির্বাচনকে ঘিরে বৈধ অস্ত্র জমা দেয়ার জন্য কোন আদেশ এখন পর্যন্ত জারি করা হয়নি। সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, শাহজাহান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায়, জেলা বিএনপি, সভাপতি এ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন তপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে উন্নয়ন হবে নাÑ লিটন ॥ আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ২০১৩ সালের নির্বাচনে ভুল করে হোক বা আশা নিয়ে হোক মানুষ বিএনপির প্রার্থীকে মেয়র নির্বাচিত করেছিল। কিন্তু তার ফলে কী হলো রাজশাহী পিছিয়ে গেল। কোন উন্নয়ন হলো না। এবারের সিটি নির্বাচন রাজশাহীবাসীর জন্য অগ্নিপরীক্ষা। কারণ সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে উন্নয়ন হবে না। বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে এক নির্বাচনী পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। লিটন বলেন, বিএনপির মেয়র বুলবুল গত ৫ বছর রাজশাহীর উন্নয়নের কথা না ভেবে সরকার পতনের আন্দোলনে ব্যস্ত ছিল। এবারও নির্বাচনী ইশতেহারে উন্নয়ন নয়, আছে আন্দোলনের হুমকি। খায়রুজ্জামান আরও বলেন, ৫ বছরে সারাদেশ এগিয়ে গেল। দেশের উন্নয়ন করে সারাবিশ্বে সুনাম পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর আমরা সেই অংশীদার হতে পারলাম না, পিছিয়ে গেলাম। রাজশাহীর মানুষ আর পিছিয়ে যেতে চায় না, উন্নয়ন চায়। নৌকায় ভোট দিলে উন্নয়ন হবে, কর্মসংস্থান হবে, ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে। প্রচারে নেমে বুলবুলের হুঁশিয়ারি ॥ বৃহস্পতিবার বিএনপি প্রার্থী বুলবুল নগরীর ১৮নং ওয়ার্ডের সপুরা, বিসিক এলাকা, আলিফ লাম-মীম ভাটা এলাকাসহ ওয়ার্ডের সব পাড়া মহল্লায় গণসংযোগ করেন। বিকেলে তিনি রাজপাড়া থানা পার্টি অফিস থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। গণসংযোগকালে বুলবুল অভিযোগ করেন, ভোটের দৌড়ে পিছিয়ে থেকে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য সরকারদলীয় প্রার্থী জালিয়াতী, কারচুপি ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। মুরাদ মোর্শেদের প্রচার ॥ এদিকে বৃহস্পতিরার নগরীতে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলন সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদ। জনসংযোগকালে ভোটাররা তাদের নানান সমস্যা ও অভিযোগ তুলে ধরলে নির্বাচনের পর সকলের সহযোগিতায় সেসব সমস্যা সমাধানে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন মুরাদ মোর্শেদ। . সিলেট সালাম মশরুর, সিলেট অফিস ॥ সিটি নির্বাচনের তিনদিন বাকি। পাড়ায় পাড়ায়, ঘরে ঘরে চলছে শেষ মুহূর্তের চিরুনি অভিযান। কোথাও কোন ভোটার যাতে প্রার্থীদের নজরের বাইরে না থাকেন। একই ঘরে ভোটারদের কাছে প্রার্থীদের সালাম-শুভেচ্ছা নিয়ে একাধিকবার যাচ্ছেন কর্মীরা। ইতোমধ্যে জেলার বাইরের বিভিন্নস্থান থেকে ভোটাররা এসে অবস্থান নিয়েছেন নগরীতে। সিলেট নগরীতে কলোনিভিত্তিক ভোটারের সংখ্যা বেশি। মোট ভোটারের বড় একটি অংশ হচ্ছে কলোনির বাসিন্দা। দিনমজুর, রিক্সাচালক, ঠেলাচালক ছাড়াও দীর্ঘদিন যাবত এই শহরে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকার সুবাদে নিজেদের ভোটার হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে স্থানীয় কাউন্সিলররা নিজের এলাকার এই সকল ভাসমান লোককে ভোটার করে নেয়ার সুযোগ নিয়ে থাকেন। এলাকার কাউন্সিলর হিসেবে ভাসমানদের ভোটার করার সুযোগ সৃষ্টি করে তাদের নিজের আওতায় রেখে দেন। কলোনির বাসিন্দা এই সকল লোক সময়ের প্রয়োজনে সিলেট ছেড়ে নিজের বাড়ি বা অন্য কোথাও চলে গেলেও নির্বাচনকালীন তারা ঠিকই এখানে চলে আসেন। এদের যাতায়াত খরচ বহন করে সময়মতো নিয়ে আসা হয়। নির্দিষ্ট কাউন্সিলর রীতিমতো এসব ভোটারকে পাহারা দিয়ে রাখেন। এমনকি তাদের আইডি কার্ডও নিজেদের কাছে জমা রেখে দেন। নির্বাচনের দিন নিজের কর্মী-সমর্থক দ্বারা এদের নজরে রেখে আইডি কার্ড হাতে দিয়ে কেন্দ্রে পাঠানো হয়। নগরীর মোট ভোটারের ৪০ ভাগ হচ্ছে কলোনিভিত্তিক। এদের বড় একটি অংশ দীর্ঘদিন যাবত এলাকার নেতৃস্থানীয়দের সংস্পর্শে থেকে রাজনৈতিক কর্মকা-ে নিজেদের জড়িয়ে নিয়েছে। নির্বাচনের সময় তারা রাজনৈতিকভাবে ভোট প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। মেয়র নির্বাচনে স্থানীয় ভোটারদের মুখ্য ভূমিকা রয়েছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় ভোটারদের সমর্থনের পথেই অধিকাংশ ভাসমানরা এগিয়ে থাকে। নগরীর ক’টি ওয়ার্ডে কলোনিভিত্তিক ভোটের ওপর নির্ভর করে কাউন্সিলর নির্বাচন। এই সকল ওয়ার্ডে স্থানীয় ভোটারের চেয়ে কলোনিভিত্তিক ভোটারের সংখ্যা বেশি। তাই তো প্রার্থীরা এই সকল বিষয় সামনে রাখে নিজস্ব পদ্ধতিতে প্রচার কাজ পরিচালনা করে যাচ্ছেন। সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সমর্থনে সিলেট মহানগর ইমাম সমিতির উদ্যোগে পথসভা ও গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার নগরীর একটি হোটেলে মতবিনিয় শেষে তালতাল, মির্জা জাঙ্গাল, বদর বাজার এলাকায় গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়। আরিফুল হক চৌধুরীর ইশতেহার ॥ সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী তার ইশতেহারে নির্বাচিত হলে ‘নতুন সিলেট’ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরীর শাহী ঈদগাহ নিজের নির্বাচনী প্রধান কার্যালয়ে এ ইশতেহার ঘোষণাকালে নতুন সিলেটের পরিকল্পনা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নতুন সিলেটে থাকবে মেট্রোরেল কিংবা টিউব (আন্ডারগ্রাউন্ড রেল)। থাকবে না যানজট। তৈরি হবে সিলেট টাওয়ার। ‘নতুন সিলেট’ হবে পরিচ্ছন্ন উল্লেখ করে ইশতেহারে আরিফ বলেন, ‘নতুন সিলেটে’ থাকবে না কোন তারের জঞ্জাল, তার যাবে আন্ডারগ্রাউন্ড দিয়ে। থাকবে খোলা উদ্যান। বহুতল বিশিষ্ট পার্কিং ভবন থাকবে। সবার আন্তরিকতা এবং ত্যাগের মানসিকতা থাকলে নতুন সিলেট গড়া অলীক স্বপ্ন নয় বলেও উল্লেখ করেন আরিফ। এছাড়া ইশতেহারে আরিফ বলে, হকারদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে অপরিকল্পিত ও ঝুঁকিপূর্ণ পুরনো লালদিঘী মার্কেট ভেঙ্গে ভেলা হয়েছে। এখানে নতুন সুপরিসর মার্কেট নির্মাণ করে হকারদের পুনর্বাসন করা হবে। এতে তাদের স্থায়ী ঠিকানা হবে। নির্বিঘেœ তারা ব্যবসা করে অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। এই মার্কেটে ইতোমধ্যে যারা বরাদ্দ নিয়েছেন তাদের জায়গা দেয়া হবে। আরিফ বলেন, সিলেট নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে পরীক্ষামূলকভাবে ওয়াইফাই চালুর কাজ শুরু করা হয়েছে। আমি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হলে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে। নগরীর প্রাণকেন্দ্রে তথ্য প্রযুক্তি ভবন গড়ে তোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। পুলিশের ওপর ককটেল হামলা ॥ দক্ষিণ সুরমার কদমতলী ফাঁড়ির পুলিশের উপ পরিদর্শক রায়হান আহমদ ককটেল হামলায় আহত হয়েছেন। বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
×