ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কর্মশালায় আইনমন্ত্রী

দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির কার্যকর পন্থা উদ্ভাবন করতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২৭ জুলাই ২০১৮

 দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির কার্যকর পন্থা উদ্ভাবন করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বর্তমানে দেশের আদালতসমূহে বিচারাধীন মামলা রয়েছে প্রায় ৩৩ লাখ ৯৬ হাজার। শুধু প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে এত বিপুলসংখ্যক মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয়। এই বিশাল মামলা জট নিরসনে বিকল্প পদ্ধতিতে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির কার্যকর পন্থা উদ্ভাবন করতে হবে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা- জাইকার আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় আয়োজিত বিকল্প পদ্ধতিতে বিরোধ নিষ্পত্তি বিষয়ক এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। দিনব্যাপী এ কর্মশালায় ৭০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেয়। তিনি বলেন, মামলা জট নিরসনের জন্য প্রথমেই আমাদের সঠিকভাবে মামলা ব্যবস্থাপনা করতে হবে, প্রচলিত মামলা ব্যবস্থাপনাতে পরিবর্তন আনতে হবে। দেওয়ানী কার্যবিধি অনুসারে বিচারপূর্ব শুনানী ও প্রকৃত বিরোধ নির্ধারণ করা হলে, দেওয়ানী মামলা দ্রুততম সময়ে বিকল্প পদ্ধতিতে কিংবা সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে নিষ্পত্তির পথ সহজ হবে। এজন্য প্রয়োজন বিচারকদের আইনের বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করা এবং আইনজীবীগণকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করা। দক্ষ, বলিষ্ঠ ও কর্মনিষ্ঠ মিডিয়েটর শ্রেণী তৈরি করাও অপরিহার্য। এক্ষেত্রে প্রতিটি জেলার জেলা জজ গণকে দেওয়ানী কার্যবিধি অনুযায়ী মিডিয়েটরদের তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। তিনি বলেন, জাপানে মিডিয়েটরদের নিয়োগ ও নবায়নের বিষয়ে যে ধরনের নীতিমালা অনুসরণ করা হয় আমাদেরও একই ধরনের নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। তালিকাভুক্ত মিডিয়েটর এবং বিচারকগণকে এ বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই। জাপানের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন কারণে বর্তমানে দেওয়ানী ও ফৌজদারি উভয় প্রকৃতির মামলা দায়েরের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ হার বিকল্প উপায়ে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে দেওয়ানী কার্যবিধি সংশোধন করে এতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু বিকল্প পদ্ধতিতে মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা পর্যালোচনায় স্পষ্টত দেখা যায় যে, আইনের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা এখনও আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করতে পারিনি। এ পদ্ধতিকে কার্যকর ও গতিশীল করার লক্ষ্যে জাপানের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় আমরা প্রয়োজনীয় করণীয় নির্ধারণ করতে চাই। আমরা আশা করি, জাপান এ বিষয়ে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। আইনমন্ত্রী আরও বলেন, বাঙালীদের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক শতাব্দী প্রাচীন। বাঙালী জাপানিজ বন্ধুত্বের স্মারক রয়েছে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধেও। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় জাপান এ দেশের জনগণের পাশে থেকেছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করার পর প্রথম যে কয়টি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে, জাপান তার মধ্যে অন্যতম। শুধু তাই নয় স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য জাপান বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়ে আসছে। ১৯৮০ সালের শেষ দিক থেকে বাংলাদেশকে দ্বিপক্ষীয় সহায়তা দানকারী দেশগুলোর মধ্যে জাপান সর্বোচ্চ দাতা দেশ। আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মোঃ জহিরুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদ, জাপানের চুকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কাজুতো ইনাবা, জাপানের বিচার মন্ত্রণালয়ের গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র রিপ্রিজেন্টেটিভ হিরোইকি ইতো, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম-সচিব বিকাশ কুমার সাহা ও উম্মে কুলসুম বক্তৃৃতা করেন।
×