ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নীতিমালা ঘোষণা

কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২৬ জুলাই ২০১৮

কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লী ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা; যা গত অর্থবছরে তুলনায় ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি। কৃষিকাজ ছাড়াও পোলট্রি শিল্প, দুগ্ধ উৎপাদন, কৃত্রিম প্রজনন ও কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে এ ঋণ নেয়া যাবে। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে কৃষি ও পল্লী ঋণের বার্ষিক এ নীতিমালা ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এসএম মনিরুজ্জামান এ নীতিমালা ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক অশোক কুমার দে ও কৃষি ঋণ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মনোজ কান্তি বৈরাগীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নীতিমালায় বলা হয়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে; যা গত অর্থবছরে তুলনায় ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত বাংকগুলোর স্বনির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা এবং বেসরকারী ও বিদেশী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নেট ঋণ ও অগ্রীমের ২ শতাংশ হারে হিসাবায়ন করে এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, কৃষি ও পল্লী ঋণের এ লক্ষ্যমাত্রার ৫২ শতাংশ বিতরণ করবে বেসরকারী খাতের ব্যাংক, সরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংক বিতরণ করবে ৩০ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংক বিতরণ করবে ১৫ শতাংশ ও বিদেশী ব্যাংক বিতরণ করবে ৩ শতাংশ ঋণ। এছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বাইরে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক ২০ কোটি ও বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) ৭৮০ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করবে। সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে কৃষি ঋণ বিতরণ করতে হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে লক্ষ্যমাত্রার ৬০ শতাংশ বিতরণ করতে হবে শস্য খাতে, ন্যূনতম ১০ শতাংশ মৎস্য খাতে এবং প্রাণিসম্পদ খাতে ১০ শতাংশ বিতরণ করতে হবে। এছাড়াও কৃষি যন্ত্রপাতি, দারিদ্র্যবিমোচন ও অন্যান্য খাতে বাকি অর্থ বিতরণ করতে হবে। এছাড়া ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদে ঋণ প্রদান, সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থায় ঋণ প্রদান ও টার্কি পাখি পালনে ঋণ প্রদানের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। নীতিমালায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ঋণ বিতরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলা হয়েছে, বেসরকারী ব্যাংকসমূহ কর্তৃক নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলে অনর্জিত লক্ষ্যমাত্রার সমপরিমাণ অথবা বিকল্পভাবে অনর্জিত লক্ষ্যমাত্রার ৩% হারে হিসাবায়নকৃত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হবে। আর অনর্জিত লক্ষ্যমাত্রার ৩% হারে অর্থ জমা রাখলে পরবর্তী ২ অর্থবছরের মধ্যে বিগত অর্থবছর বা অর্থবছরসমূহের অনর্জিত অর্থ সম্পূর্ণ বা আংশিক বিতরণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বা আনুপাতিক হারে ফেরত প্রদান করা হবে; অন্যথায় উক্ত অর্থ ফেরতযোগ্য হবে না। অনুষ্ঠানে ডেপুটি গবর্নর এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, এখনও বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ মানুষ সরাসরি কৃষির সঙ্গে জড়িত। পাশাপাশি ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ মানুষ পরোক্ষভাবে কৃষি ক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ খাতের উন্নয়নের ফলে দেশের দারিদ্র্যবিমোচন, ক্ষুধা মুক্তি ও সুস্বাস্থ্য অর্জন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে বিতরণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা; যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ১০৫ শতাংশ। মোট ৩৯ লাখ ৬২ হাজার ৫০৮ জনের মাঝে এই ঋণ বিতরণ করা হয়েছে; যার মধ্যে ব্যাংকসমূহের নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৭ নারী প্রায় ৬ লাখ ৩ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছেন।
×