ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এখনই তাকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা নয়

রাহুল ইস্যুতে নমনীয় কংগ্রেস

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২৬ জুলাই ২০১৮

রাহুল ইস্যুতে নমনীয় কংগ্রেস

রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করার ইস্যুতে সুর নরম করেছে কংগ্রেস। মঙ্গলবার দলটির পক্ষ থেকে বলা হয় তাদের লক্ষ্য আগামী বছর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে বিজেপিকে পরাজিত করার লক্ষ্যে বিরোধী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করা। এজন্য তারা এখনই রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করতে খুব আগ্রহী নয়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। রাহুলকে বিরোধী দলগুলোর জোটের প্রধানমন্ত্রী করা হবে, এমন ইঙ্গিতের দু’দিন পর দলের পক্ষ স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়া হলো। কংগ্রেসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বিরোধী দলগুলোকে এক মঞ্চে আনতে চাই। আসুন আমরা সবাই মিলে আরএসএস সমর্থিত বিজেপিকে পরাজিত করি। এটিই আমাদের কাছে এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাকি বিষয়গুলো নির্বাচনের পরে দেখা যাবে।’ এ থেকে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় কংগ্রেস এখনই বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে রাহুলের না ঘোষণা করছে না।। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিরোধী ঐক্য কতটা শক্তিশালী হবে তা নির্ভর করে উত্তর প্রদেশ ও বিহার রাজ্যের পরিস্থিতির ওপর। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা যদি নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করি বিজেপি ২০১৯ সালের নির্বাচনে জিততে পারবে না। বিজেপি যদি ২৩০ থেকে ২৪০ এর চেয়েও কম আসন পায় তবে নরেন্দ্র মোদি ফের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। বিরোধী জোট ঐক্যবদ্ধ থাকলেই কেবল এটি সম্ভব হবে। বহুজন সমাজপার্টি (বিএসপি) প্রধান মায়াবতী যেদিন বলেন, যে তার দলকে সম্মানজনক সংখ্যক আসন দেয়া হলেই তারা বিরোধী দলে যোগ দিতে পারেন ঠিক সেদিনটিতেই কংগ্রেস রাহুলকে বিরোধী দলগুলোর জোটের প্রধানমন্ত্রী করার ঘোষণা থেকে সরে আসে। সূত্র জানায়, কংগ্রেস এখন প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী পদটি উন্মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী অথবা মায়াবতী যে কারও জন্যই পদটি খোলা থাকছে। রবিবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বিরোধী জোটে রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করার ঘোষণা দেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। পরে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাহুলই কংগ্রেসের প্রধান ব্যক্তি। এরপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়া প্রকাশ্যেই রাহুলের প্রতি তার সসমর্থন ব্যক্ত করেন। কিন্তু লালু-পুত্র তেজস্বী বলেন, বিরোধী জোটে প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার অনেকে। এই পদে মমতাকে বসানো নিয়ে অনেক দিন ধরেই জল্পনা রয়েছে। মায়াবতীও প্রধানমন্ত্রী হতে রাজি আছেন। কংগ্রেসকে সতর্ক করে দিয়ে দলিত নেত্রী মায়াবতী বলেন, আসন বণ্টন ঠিক মতো না হলে জোট হবে না। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই বিজেপিকে রুখতে নমনীয় হতে রাজি হয় কংগ্রেস। কংগ্রেস সূত্রের মতে, রাহুল মনে করেন প্রধানমন্ত্রিত্বের চেয়েও এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিজেপিকে হারানো। মমতা সম্পর্কে তাঁর মত, তৃণমূল নেত্রী কংগ্রেস থেকেই এসেছেন। ফলে আরএসএসের সঙ্গে তিনি থাকবেন না। পশ্চিমবঙ্গে জোট নিয়ে বিভ্রান্তি কেটে যাবে। ভোটের পরে বড় দল হিসেবে কংগ্রেস উঠে এলে অঙ্কের হিসেবেই জোটের প্রধানমন্ত্রী হবেন রাহুল। রাহুল মনে করেন, বিজেপির আসন ২২০ তে নেমে গেলেই মোদির পক্ষে আর প্রধানমন্ত্রী হওয়া কঠিন। কারণ তখন সংঘ এবং বিজেপির একাংশই তার বিরোধিতা করবে। এসব কারণে মোদি-অমিত শাহরা এখন জোরেশোরে প্রচার শুরু করতে যাচ্ছেন। তাদের হারাতে প্রয়োজন একটি শক্তিশালী বিজেপি-বিরোধী জোট। সেটাই এখন রাহুলের অগ্রাধিকার। দলীয় সভাপতি হিসেবে রাহুলই রবিবারের কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন। গুজরাট এবং রাজস্থান রাজ্যে দল হিসেবে বিজেপির বেশি আসন পাওয়ার বিষয়ে কংগ্রেস আশাবাদী। দলের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়েছে যে আগামী নির্বাচনে জনগণ ঘৃণা ও বিভক্তি ছড়ানোর রাজনীতির বিরুদ্ধে তার মতপ্রকাশ করবে।
×