ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা চাইলেন আমু

সরকার বিব্রত হয় এমন কাজ করবেন না ॥ ডিসিদের কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৬ জুলাই ২০১৮

সরকার বিব্রত হয় এমন কাজ করবেন না ॥ ডিসিদের কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী নির্বাচনের সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সহায়তা চেয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। এদিকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের- সরকার বিব্রত হয় এমন কোন কাজ না করার জন্য ডিসিদের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি ভিআইপি ও মন্ত্রীদের প্রটোকল কমিয়ে ডিসিদের কাজ করারও নির্দেশনা দিয়েছেন। বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের পৃথক কার্য-অধিবেশনে মন্ত্রীরা এ আহ্বান জানান। অধিবেশন শেষে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে জেলা প্রশাসকদের কোন নির্দেশনা দিয়েছেন কি না, সাংবাদিকরা জানতে চাইলে আমু বলেন, আইনশৃঙ্খলার ব্যাপারে বলা আছে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল আছে। আগামীতেও এটা যেন অব্যাহত থাকে, সে বিষয়ে বলা হয়েছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী মাদকের ব্যাপারেও যেন তারা জিরো টলারেন্সে থাকেন, সে বিষয়ে নির্দেশনা আছে। তিনি বলেন, অধিবেশনে শিল্প মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম আমরা তুলে ধরেছি। বিভিন্ন জেলার দু-একটি সারের গুদামের ব্যাপারে তারা (ডিসিরা) অবহিত করেছেন, আমরা সেগুলো দেখব। এছাড়া সুগার মিলগুলো যেন পুরো বছর চালু থাকে, সেজন্য আমরা কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। আখের মৌসুম মাত্র তিন মাসের। তাই মিলগুলো যেন চালু থাকে, সেজন্য আমরা কাঁচামাল এনে রিফাইন করে সুগার বিটে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করছি। আখের মৌসুমে আখ সংগ্রহ করে গুড় তৈরির দিকে যেন না যায়, সব আখ যেন সুগার মিলের দিকে আসে, সে বিষয়ে ডিসিদের লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম মেহের আফরোজ। এতে শিল্পসচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ্, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা/কর্পোরেশনের প্রধান, মহিলা ও শিল্প বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তা, বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা উপস্থিত ছিলেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, এলাকাভিত্তিক শিল্প সম্ভাবনা বিবেচনা করে বিসিক বর্তমানে বিভিন্ন জেলায় ৩৪টি শিল্পনগরী স্থাপন করছে। এর মধ্যে জমি অধিগ্রহণে ধীরগতিসহ নানাবিধ কারণে কয়েকটি শিল্পনগরীর বাস্তবায়ন বিলম্বিত হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে কার্যকর প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে তিনি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, দেশব্যাপী সুষ্ঠু সার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে ১৩টি নতুন বাফার গুদাম নির্মাণ হচ্ছে। পরবর্তীতে আরও ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ হবে। বর্তমানে বিসিআইসির কাছে পর্যাপ্ত ইউরিয়া মজুদ রয়েছে। আসন্ন মিনি পিক সিজনে সারের কোন সঙ্কট হবে না। স্থানীয় সরকার ॥ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী (এলজিআরডি) খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এখন আমরা আর ক্ষুদ্র ঋণ নয়, ক্ষুদ্র সঞ্চয় নিয়ে কথা বলছি। বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের ষষ্ঠ কার্য-অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের অধিবেশনের আলোচনায় বিশেষ করে এসেছে একটি বাড়ি একটি খামার। এতদিন আমরা ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে কথা বলেছি এখন ক্ষুদ্র সঞ্চয় নিয়ে কথা বলব। প্রধানমন্ত্রী নিজের উদ্যোগে ক্ষুদ্র সঞ্চয় পদ্ধতিটা চালু করেছেন। এটার অন্তর্নিহিত বিষয় হচ্ছে ঋণের আবর্তে কেন আমরা লোন নেব। তার চাইতে আমরা সহায়তা করি। তারা (ক্ষুদ্র আয়ের মানুষ) সঞ্চয় বৃদ্ধি করুন। তাদের নিজেদের সঞ্চয় থেকেই তারা তাদের উন্নয়নের পন্থা আবিষ্কার করুক। যদি তাদের সঞ্চয় থেকে তাদের উন্নয়ন সম্ভব না হয়। তাহলে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তারা তা করতে পারবে। কাজে কেউ এ বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসক ও কমিশনারদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমার বিবেচনায় আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে এলজিআরডিমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন কাজ সম্পাদনের জন্য জনপ্রতিনিধি ও সরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে মাঝে মাঝে মত পার্থক্য দেখা দেয়, তবে সমন্বয়হীনতা আছে এ রকম খবর আমার কাছে নেই। মত পার্থক্য আমার সঙ্গে সচিবের মধ্যেও হয়। সেটা বড় কথা নয়। ডিসিদের পক্ষে থেকেও কোন ধরনের অভিযোগ আসেনি। আগামী নির্বাচনের বিষয়ে কোন আলোচনা হয়েছি কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনতো একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। নির্বাচন নিয়ে আমি বিশেষভাবে কোন আলোচনা করিনি। কারণ নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিটা অত্যন্ত সুচারুভাবে দেখতে হবে। এসব বিষয়ে মনে হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আলোচনা করবে। যে সমস্ত কাজ অসমাপ্ত রয়েছে সেগুলো দ্রুত শেষ করার কোন নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরাতো গত বছরও ৯৯ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করেছি। জনপ্রশাসন ॥ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বদলির ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্ট নেয়ার বাধ্যবাধকতা শিথিলের প্রস্তাবের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মদ বলেছেন, যার যেটা ম্যান্ডেট সে সেটা করবে। বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের পঞ্চম কার্য-অধিবেশন শেষে তিনি এ কথা বলেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ কার্য-অধিবেশন হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন। ডিসিরা কি চেয়েছেন জানতে চাইলে সচিব বলেন, তারা চেয়েছেন স্বেচ্ছাধীন তহবিলে বরাদ্দ বৃদ্ধি। অলরেডি সরকার তা করেছে। তারা দুর্গম ভাতার কথা বলেছেন। দুর্গম ভাতার বিষয়ে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনেক আগেই অনুরোধ করেছি, কিছু কিছু জায়গায় তাদের কষ্ট হয়। কয়েকটি জায়গায় নৌযান চেয়েছেন, এ বিষয়ে সরকার অলরেডি ব্যবস্থা নিয়েছে। গাড়ি মেরামতের জন্য আর্থিক ক্ষমতা বাড়াতে বলেছেনÑ আমরা আগেই এ ব্যাপারে অনুরোধ করেছি। সার্কিট হাউস কোন জেলায় কম আছে, আমরা বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব। জনপ্রশাসন সচিব বলেন, তাদের প্রস্তাবের অনেক ইতোমধ্যে স্ব-উদ্যোগে ‘এ্যাড্রেস’ করা হয়েছে। যে ম্যাসেজটি হয়তো ওই পর্যন্ত পৌছেনি। সড়ক পরিবহন ॥ সরকার ‘এম্বারাসড (বিব্রত)’ হয় এমন কোন কাজ না করার জন্য ডিসিদের নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে তিনি ভিআইপি ও মন্ত্রীদের প্রটোকল কমিয়ে ডিসিদের কাজ করারও নির্দেশনা দিয়েছেন। বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের সপ্তম কার্য-অধিবেশন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান। এ সময় রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হকও উপস্থিত ছিলেন। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সেতু বিভাগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ কার্য-অধিবেশন হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন। সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জেলা প্রশাসকরা রাজনৈতিক কোন চাপের কথা বলেছেন কি না- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, ‘এ ধরনের কোন কথা ডিসি সাহেবরা বলেনি। আমাদের এরিয়ার বাইরে তারা কোন প্রশ্ন করতে যাননি। তবে রুলিং পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি তাদের বলেছি, এমন কিছু করবেন না যাতে সরকার বিব্রত হয়। এমন কিছু আপনারা করবেন না আর কোন চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। এই কথাটা আমি স্পষ্ট বলেছি। তিনি বলেন, এটাও বলেছি আপনারা মন্ত্রী-ভিআইপিদের এত প্রটোকল দিতে গেলে কাজ করবেন কখন। সারাদিন যদি ডিসি-এসপি মন্ত্রীর পেছনে ঘোরে তাহলে সে কাজ করবে কখন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা দুই মন্ত্রী বলেছি, আমাদের প্রটোকলের দরকার নেই। প্রটোকল কমানো উচিত। ওরা কাজ করবে কীভাবে, আর সরকারের শেষ বছর, এখন অনেক কাজ ডিসি-এসপিদের। বর্তমান সরকারের মেয়াদে এটাই শেষ ডিসি সম্মেলন। নির্বাচনকে সামনে রেখে ডিসিদের কী নির্দেশনা দিয়েছেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার। নির্বাচনের শিডিউল ডিক্লেয়ারের জন্য ৩ মাসের মতো সময় আছে। কাজেই এ সময়ে তাদের প্রতি সরকারের যে জেনারেল মেসেজ সেটা সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী অলরেডি ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করে দিয়েছেন। এর সঙ্গে সরকার আমরা মন্ত্রীরা সবাই একমত। কাজেই সরকার প্রধানের মেসেজটাই আমাদের মেসেজ। এর বাইরে উই ক্যান নট থিংক বিয়ন্ড দ্যাট। ডিসিদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের নিজেদের বিষয়টা, আমার প্রায়োরিটি হচ্ছে এই সময়ে নতুন বড় বড় স্বপ্ন দেখে কোন লাভ নেই। যে স্বপ্ন এখন নির্মাণ হচ্ছে- যেমন পদ্মা সেতু, যেমন মেট্রোরেল, যেমন কর্ণফুলী টানেল; এই নির্মাণ কাজগুলো যতদূর সম্ভব অক্টোবরে নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, কাজগুলোকে ত্বরান্বিত করা। আর ইমিডিয়েট যেটা- রাস্তাগুলোকে পসিবল করা, ইউজএ্যাবল করা, সচল করে রাখা। তিনি বলেন, আমরা পক্ষে এই সময়ে নতুন রাস্তা করা সম্ভব নয়। কাজেই আমি এই স্বপ্নটা দেখাব না। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, শেষ ঈদ ঈদ-উল-আজহা, ঈদ-উল-আজহার আগে ভারি বর্ষণ, এর ওপর ভারি পরিবহন, তারপর আবার পশুর হাট, পশুবাহী পরিবহন, রংসাইডে আসা; যানজটের আরও কিছু কারণ যেমন ইজিবাইক ব্যাটারিচালিত রিক্সা- এসব বিষয়ে মূলত ডিসি সাহেবদের বলেছি। রমজানের ঈদের সময়ও তারা দায়িত্ব পালন করেছেন এজন্য আমরা স্বস্তিদায়ক ঘরমুখী ঈদযাত্রা দিতে পেরেছি। সফল করতে পেরেছি। এবারও যাতে গতবারের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে ঈদ-উল-ফিতরের মতো মানুষ যাতে স্বস্তিতে বাড়ি যেতে পারে, আবার স্বস্তিতে কর্মস্থলে ফিরে আসতে পারে, যানজটের কারণগুলো দূরীকরণে তাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে বলেছি। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, মনিটরিংটা যাতে ঈদের পরও রাখা হয় ঈদের পর এ্যাকসিডেন্টে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। সেজন্য ঈদের পর আমরা ঢাকা থেকেও মনিটরিং রাখব, জেলা পর্যায়েও জেলা প্রশাসকদের আমরা বলেছি তারা মনিটরিংটা যাতে অব্যাহত রাখে, দুর্ঘটনা যাতে কমিয়ে আনা যায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ॥ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জেলা প্রশাসকদের প্রতি জনগণের কাক্সিক্ষত স্বাস্থ্যমান অর্জনে মাঠ পর্যায়ে সেবা দানের পরিবেশ সৃষ্টিতে আরও সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু করে জেলা ও বিভাগের বড় বড় সরকারী হাসপাতালগুলোতে রোগীদের বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয় বলে সরকারী হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি থাকে। তাই গ্রামের সাধারণ মানুষ যেন সহজে চিকিৎসা সুবিধা পেতে পারেন এজন্য সরকারের কর্মসূচীগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বুধবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনের ২০১৮ তে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার অসমাপ্ত কাজ সমাপনের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তারই নির্দেশনায় বর্তমান সরকারের সময় দেশের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সূচকে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। বিশ^ নেতৃবৃন্দের কাছে আজ বাংলাদেশের অর্জন রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত। বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরকারের চলমান প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা কামনা করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, মাঠ পর্যায়ে সরকারের প্রতিনিধি জেলা প্রশাসকগণ। বর্তমান মেয়াদের অবশিষ্ট কর্মসূচীগুলো যেন যথাসময়ে সম্পন্ন হয় সেদিকে তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। অধিবেশনে স্বাস্থ্যখাতে সরকারের গৃহীত গত নয় বছরের কর্মসূচী ও সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, দেশে চিকিৎসক সঙ্কট দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত নয় বছরে প্রায় ১৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আরও ৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ১৫ হাজার ৪৪৭ সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আরও ৫ হাজার নার্স নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মাতৃমৃত্যু হার কমাতে ১৮০০ মিডওয়াইফ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ফলে দেশে এখন আর ডাক্তার বা নার্স সঙ্কট নাই বললেই চলে। এ সময় উপজেলা পর্যায়ে ডাক্তার, এ্যাম্বুলেন্স স্বল্পতা দূর করা এবং কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রতি বেশ কিছু প্রস্তাবনা পেশ করেন জেলা প্রশাসকরা। মন্ত্রী দ্রুততার সঙ্গে প্রশাসকদের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের আশ^াস প্রদান করেন। অধিবেশনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। পরিবশে ও বন ॥ পাহাড় ধস রোধ ও বন রক্ষায় জেলা প্রশাসকদের সহায়তা চাইলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম কার্য-অধিবেশনে মন্ত্রী এ সহায়তা চান। অধিবেশন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ কার্য অধিবেশন হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন। রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারে বনের ক্ষতির বিষয়ে ডিসিরা কী বলেছেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে তা আমাদের নেমে নিতে হবে। কারণ আমরা তাদের এখানে আশ্রয় দিয়েছি। জ্বালানির অন্য কোন বন্দোবস্ত করা না গেলে তারা গাছ কাটবেই। সিলিন্ডারে দিলে দেখানে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কয়লা দেয়া হলে গাছের ক্ষতি হবে না। পাহাড় ধস ও বনভূমি রক্ষায় ডিসিদের কী নির্দেশনা দিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, কাউকে এককভাবে দোষ দেয়া যায় না। অনেক মানুষ যাদের জমি নেই তারা ওখানে থাকে। অনেকে ওখানে থাকে। এদের উচ্ছেদ করা হয়, আবার গিয়ে থাকবে। তবে কী এর কোন স্থায়ী কোন সমাধান নাই- স্থায়ী সমাধান আছে। এভাবে চলবে না। ব্যবস্থা হচ্ছে, পারমানেন্ট উচ্ছেদ করা, তাদের অন্য জায়গায় বাসস্থান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
×